চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন ও কাস্টম হাউজের অটোমেশনে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি

চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন ও কাস্টম হাউজের অটোমেশনে ২০১৯-২০২০ অর্থ-বছরের জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিএমসিসিআই) সভাপতি খলিলুর রহমান। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) জাতীয় সংসদে বাজেট উত্থাপনের পর প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ দাবি জানান।

দেশের চলমান অগ্রযাত্রায় ৫ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকার সর্বোচ্চ বাজেট জাতিকে উপহার দেয়ায় সরকারকে অভিনন্দন জানান খলিলুর রহমান। পাশাপাশি সরকারকে সিএমসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে কিছু পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি বলেন, যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি ও বন্দর উন্নয়ন খাতে আরও বিশেষ বরাদ্দ প্রয়োজন। যার ফলে দেশের শিল্পায়ন বাড়বে ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। দেশের জিডিপি ৮ দশমিক ৫ ছাড়িয়ে যাবে। বাজেট বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি, রেমিটেন্সের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনীয় বৈদেশিক সহায়তার ব্যবস্থা থাকলে সরকারকে ব্যাংক ঋণ গ্রহণ কমিয়ে রাখতে পারলে দেশের অর্থ তারল্য সংকট সৃষ্টি হবে না। পক্ষান্তরে ব্যাংক ঋণ ছাড়াই বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

বাজেট প্রতিক্রিয়ায় খলিলুর রহামন আরো বলেন, ভ্যাট আইনের যে পাঁচ স্তর আনা হয়েছে; তার হার আরও কমিয়ে বেশি লোক থেকে ভ্যাট আহরণের ব্যবস্থা করতে হবে। জনগণ যে সকল স্থানে ভ্যাট প্রদান করছে তা বহুলাংশে সরকারের কোষাগারে যাচ্ছে না। জনগণের প্রদেয় ভ্যাট যাতে সরকারের কোষাগারে জমা হয় এজন্য সর্বস্তরে ভ্যাট চালানের বাধ্যবাধকতাসহ সকল প্রথম শ্রেণির ব্যবসার স্থলে ভ্যাট আহরণ মেশিন (ইসিআর/ইএফডি) চালু করার ব্যবস্থা করলে ভ্যাট থেকে বিশাল অংকের রাজস্ব আসবে।

কাস্টম হাউজের অটোমেশনের জন্য বিশেষ বরাদ্দ প্রদান করলে কিছু কাস্টম কর্মকর্তার ঐচ্ছিক কার্যক্রমের উপর ব্যবসায়ীদের নির্ভরশীলতা কমানোর পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়িক ব্যয়ও সময় কমানোসহ রাজস্ব প্রবৃদ্ধি আসবে। এটি বাজেট বাস্তবায়নে সহায়ক হবে বলে মনে করেন সিএমসিসিআই সভাপতি।

এডিবি বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রজেক্টগুলোর জন্য দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের নিবিড় জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। প্রতিমাসে কাজের অগ্রগতি ও ব্যয় ইত্যাদি মন্ত্রণালয়ে দাখিলের ব্যবস্থা থাকতে হবে। মেয়াদ শেষে কোন প্রজেক্ট কর্মকর্তা এডিবি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে সে কর্মকর্তার এসিআর-এ তা লিপিবদ্ধ করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। এর ভিত্তিতে তার পদোন্নতি বিলম্বিত হওয়ার মতো নির্দেশনাও থাকতে হবে।

খলিলুর রহামন কারিগরি শিক্ষা খাতসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সকল ধরনের প্রতিবন্ধকতা পরিহার করে বিত্তবানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করেন। কারিগরি শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষায় এগিয়ে আসতে পারলেই বিদেশে আমাদের কর্মসংস্থানের মান বৃদ্ধিসহ রেমিটেন্সের প্রবাহ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে।

স্বাস্থ্য খাতে বাজেটের বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ এখাতে প্রচুর তদারকি ব্যবস্থার জন্য বিশেষ অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব দিয়ে খলিলুর রহমান বলেন,দেশের খাদ্যদ্রব্য বিক্রেতা কর্তৃক সকল স্তরেই ভেজাল ও রাসায়নিক মিশ্রিত খাদ্য প্রতিরোধ করে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বিশেষ পৃথক বিভাগ সৃষ্টি করে সারা দেশের জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা করতে হবে। এ বিষয়ে নমণীয় হওয়ার কোন সুযোগ রাখা কাম্য নয়।

অর্থমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানিয়ে সিএমসিসিআই সভাপতি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘দেশের অগ্রযাত্রা যেভাবে এগিয়ে চলছে, তাতে এ বাজেট বাস্তবায়ন হবে।’

এমএ/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!