মিরসরাইয়ের তিন গ্রামে তীব্র জলাবদ্ধতা

মিরসরাইয়ে জেলা পরিষদের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছে প্রভাবশালী মহল। এতে করে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছেন উপজেলার সদর ইউনিয়নের তালবাড়িয়া, আবুনগর ও শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দারা। এই বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

বুধবার (১০ এপ্রিল) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মিরসরাই রেল ষ্টেশন সড়কের পাশে জেলা পরিষদের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে দোকান ঘর, বসতবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। কেউ কেউ ওই জায়গায় পুকুরও খনন করেছে। ভরাট হয়ে গেছে বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন ও পাহাড়ি ঢল যাওয়ার গতিপথ। কিছু কিছু অংশে জমির মাটি কেটে বড় গর্তের সৃষ্টি করেছে ভূমি দস্যুরা।

ভুক্তভোগী মো. সোলেমান, মো. ইব্রাহিম, নুরুল করিম, হোসনে আরা বেগম অভিযোগ করেন, এলাকার কিছু চিহিৃত ভূমিদস্যু, সন্ত্রাসী সরকারি জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছে। কেউ কেউ পুকুর খনন ও জমির মাটি বিক্রি করে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি করেছে। এতে করে পানির স্বাভাবিক গতিপথ বন্ধ হয়ে বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। বিগত কয়েক বছর ধরে সামান্য বৃষ্টি হলে মানুষের বসতবাড়িতে পানি ঢুকে দুর্বিষহ জীবনযাপন করতে হয়। জলাবদ্ধতার করণে ওই এলাকার ফসলী জমিতে চাষকৃত বিভিন্ন সবজি নষ্ট হয়ে কৃষকদের চরম লোকসান গুনতে হয়। এছাড়া মিরসরাই বিসিক শিল্পনগরী স্থাপনের জন্য জমি নেয়ার সময় পানি নিষ্কানের জন্য সরু জায়গা না রাখাও জলাবদ্ধতার আরেকটি কারণ। ভূমিদস্যুরা প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকার সাধারণ মানুষ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পায়না।

এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আবু জাফর ভূঁইয়া অভিযোগ করেন, পূর্ব মঘাদিয়া মৌজার বিএস ৩৫৯০, ৮৯২, ৫১৬, ৪৩৭ নম্বর খতিয়ানের অধীন নামজারী ৩৯৩৬ ও ২৪১৭ নম্বর খতিয়ানের বিএস ১৬৬৯, ১২৭৭, ১৬৭৪, ১৬৬৮ দাগের সম্পত্তির মালিক তিনি। তাঁর তফসিলোক্ত সম্পত্তির পাশে জেলা পরিষদের মালিকানাধীন জায়গায় স্থানীয় আবুল বশর নামের প্রভাবশালী ব্যক্তি দোকানঘর নির্মাণ করেছেন। এতে জাফর ভূঁইয়া পরিবারের চলাচল করতে চরম অসুবিধা হচ্ছে।

ভুক্তভোগী সিরাজুল ইসলাম জানান, অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে সরকারি সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে এলাকাবাসী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। বর্ষা মৌসুম শুরুর পূর্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে এই এলাকায় আমাদের বসবাস করা কষ্টসাধ্য হবে।

এ বিষয়ে মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন জানান, তালবাড়িয়া এলাকায় সরকারি জায়গা দখলের বিষয়ে কোনো চিঠি আমার চোখে পড়েনি। হয়তো আমার দপ্তরের কেউ চিঠিটি রিসিভ করেছেন। আমি কয়েকদিনের মধ্যে ওই এলাকায় গিয়ে এই বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!