৯৯৯-এ ফোন করে কালুরঘাটের পোশাক কারখানা বন্ধ করালো শ্রমিকরা

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি এবং বিজিএমইর আহ্বান উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম নগরীর কালুরঘাট শিল্প এলাকায় শ্রমিকদের কাজে বাধ্য করেছিল সুজি ফ্যাশন লিমিটেড নামের একটি কারখানা। শ্রমিকরা পুলিশের জাতীয় সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের মধ্যস্থতায় কারখানায় ছুটি কার্যকর করে।

শনিবার (২৮ মার্চ) ওই কারখানার শ্রমিকরা রাস্তায় যানবাহন সংকটে দূরদুরান্ত থেকে পায়ে হেঁটে কাজে যোগ দিয়েছিল। যদিও কর্মস্থলে গিয়ে কাজও ছিল না সেভাবে। কাজের চাপ না থাকায় শ্রমিকরা ছুটি চেয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা এড়িয়ে যায়। পরে ওই পোশাক কারখানার এক শ্রমিক নেতা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করলে সেখান থেকে নগরীর চান্দগাঁও থানাকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়।

পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশ অনুযায়ী চান্দগাঁও থানার টিম গিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনায় বসে। এরপর কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের আগামী ২ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খন্দকার চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘৯৯৯-এ ফোন যাওয়ার পর হেডকোয়ার্টার থেকে আমাদের থানায় রেফার করা হয়। তারপর আমাদের টিম গিয়ে গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করার পর তারা ছুটি ঘোষণা করেছে।’

সুজি ফ্যাশন লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক নুর উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন ২৫ মার্চ বিকেলে। সেই ভাষণে তিনি সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন। কিন্তু বিজিএমই সিদ্ধান্ত দিয়েছে ২৬ মার্চ। আমরা আমাদের শ্রমিকদের ছুটি দিয়েছিলাম ২৬ ও ২৭ মার্চ। সাধারণ ছুটির ঘোষণাটা দিতে পারিনি। আজ কারখানা খোলারপর তাদের আমরা ২ মার্চ পর্যন্ত ছুটি দিয়েছি। জরুরী কিছু শিপমেন্ট আছে, শুক্রবারের পর হলে তাও বাতিল হয়ে যাবে।’

শনিবার বিকেলে সরেজমিনে সুজি ফ্যাশন লিমিটেডের সামনে গিয়ে রোকেয়া (ছদ্মনাম) নামের এক শ্রমিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি কালুরঘাট শিল্প এলাকার এই কারখানায় এসেছেন বায়েজিদ শেরশাহ কলোনী এলাকা থেকে পায়ে হেঁটে। তার সাথে আছে আরো ৬ জন নারী শ্রমিক। সবাই কালুরঘাট থেকে অনন্যা আবাসিক হয়ে অক্সিজেন মোড়, এরপর বাসায় যাবেন হেঁটে। রাস্তার পাশের টংয়ের দোকানপাট বন্ধ থাকায় তারা বাসা থেকে নিয়ে আসা সামান্য খাবার ছাড়া কিছু খেতেও পারেননি সারা দিন।

আরেকজন জানালেন, তিনি হোটেলে খেতেন। অন্যান্য কারখানা বন্ধ থাকায় সেইসব হোটেল এবং সাধারণ দোকানও বন্ধ। মুদি দোকান থেকে পাউরুটি নিয়ে পানিতে ভিজিয়ে খেয়েছেন দুপুরে।

৫ দিন ছুটি পেয়ে তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলেন, ‘এমন খালি জায়গায় না খেয়ে দিন কাটানো থেইক্যা বাঁচবো। আইজকে যে কষ্টডা অইল, শুক্কুরবারে আইতে রেডি অই আইমু।’

এফএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!