৮ মাসে চট্টগ্রামে ধর্ষণের শিকার ১৪২ মেয়েশিশু, সারা দেশে ৮১৩ জন

চট্টগ্রামে ৮ মাসে মেয়েশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৪২ জন। সংখ্যার দিক থেকে এর আগে রয়েছে শুধু ঢাকা, সেখানে মেয়েশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৬৮ জন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত দেশে ৮১৩ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে ১২৭ জন কন্যাশিশুকে। এর মধ্যে একক ধর্ষণের শিকার ৫২৩ জন, গণধর্ষণের শিকার ১১০ জন ও ৭৯ জন প্রতিবন্ধী কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে।

জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের ‘কন্যাশিশু পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন-২০২১’এ এসব তথ্য উঠে এসেছে। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ২৪টি পত্রিকা (জাতীয়, স্থানীয় এবং দুটি অনলাইন) থেকে কন্যাশিশুদের প্রতি নির্যাতনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৮ মাসে ১১২ জন কন্যাশিশু যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে চারজন বিশেষ শিশুও রয়েছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালের তুলনায় চলতি বছর যৌন হয়রানি বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ। এ সময়ে গৃহশ্রমিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ২৬টি। এর মধ্যে ১৩ জন শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তিনজনকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে এবং ১০ জন যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। অন্যদিকে অপহরণ ও পাচারের শিকার হয়েছে ১৪০ কন্যাশিশু। এর মধ্যে অপহরণের শিকার হয় ৫৮ জন। প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৪৭ কন্যাশিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত ৮ মাসে পারিবারিক দ্বন্দ্ব, পূর্বশত্রুতার জের, ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের জেরে ১৯৩ কন্যাশিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়াও গত কয়েক মাসে অন্তত ২৪ কন্যাশিশুকে বিভিন্ন স্থানে ফেলে রেখে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে স্কুল বন্ধ থাকায় হতাশা, পারিবারিকভাবে দ্বন্দ্ব, প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হওয়া এবং শারীরিকভাবে যৌন নির্যাতিত হয়ে গত ৮ মাসে ১৫৩ জন কন্যাশিশু আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।

এদিকে করোনার সময়ে ১৩৬টি ইউনিয়নে জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম। সেই জরিপে পাওয়া তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালের আগস্ট থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে ১ হাজার ২৫৩ জন কন্যাশিশু। তবে ইউনিয়নগুলোতে এর বাইরে আরও ১ হাজার ৫৩৫ জন কন্যাশিশুর বিয়ের তথ্য পাওয়া গেলেও সংশ্লিষ্টরা সেটা নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি।