৭৪ ঘন্টা বন্দি থেকে দুবাই বিমানবন্দর থেকে ফিরে আসতে হল ১০৪ প্রবাসীকে

ফ্লাই দুবাইয়ের প্রতারণা নিয়ে লিখিত অভিযোগ

টানা ৭৪ ঘন্টা আটকে রাখার পর সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাই বিমানবন্দর থেকেই ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হল ১০৪ জন প্রবাসীকে। রোববার (১১ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে পাঁচটায় তারা দেশে ফিরে এসেছেন। এর মধ্যে ৪৯ জন চট্টগ্রামের বাসিন্দা। এদের প্রত্যেকেই ফ্লাই দুবাইয়ের টিকিট কিনে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। দুবাই ঢুকতে কোনো সমস্যা হবে না বলে ফ্লাই দুবাই টিকিট বিক্রি করলেও সেখানে গিয়ে ওই প্রবাসীরা দেখেন, বিমানবন্দরের বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না তাদের। দুবাই বিমানবন্দরে পৌঁছার পর অনুমতিপত্র না থাকায় অভিবাসন পুলিশ আটক করে তাদের।

ফেরত আসা এই ১০৪ জন প্রবাসীর প্রত্যেকে কয়েক গুণ বেশি টাকায় ফ্লাই দুবাইয়ের টিকিট কিনেছিলেন। ওয়ানওয়ে প্রতি টিকিটের মূল্য ৯৫ হাজার থেকে ১ লাখ ১০ হাজার পর্যন্তও নিয়েছে দুবাইভিত্তিক ওই বিমান সংস্থাটি।

রোববার দুবাই বিমানবন্দর থেকে ফেরত আসা প্রবাসীদের মধ্যে ৪৯ জন চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন এবং ৫৫ জন নেমেছেন ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। এই প্রবাসীরা টানা দুই দিন দুবাই অভিবাসন পুলিশের কারাগারে ছিলেন। সেখানে তাদের খাবার দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে রোববার সন্ধ্যায় ঢাকায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে ফ্লাই দুবাইয়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন ৩৯ জন প্রবাসী। আর্থিক ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা ওই অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘দীর্ঘদিন কর্মহীন থাকার কারণে কর্মস্থলে ফিরতে অনেকেই ব্যাংক ঋণ, সুদের ওপরে ধার, স্বর্ণের গয়না বিক্রি করে ফ্লাই দুবাইয়ের টিকিট করেছিলাম। কিন্তু তাদের হয়রানির কারণে নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরে এলাম।’

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যিক রাজধানী দুবাই বিমানবন্দরে চট্টগ্রাম ও ঢাকার ১০৪ প্রবাসী আটকে পড়েন। গত শনিবার (১০ অক্টোবর) রাতে ফ্লাই দুবাই করে বাংলাদেশ থেকে দুবাই যাওয়ার পর বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন আর পেরোতে পারেননি তারা। চট্টগ্রাম ও ঢাকা থেকে যাওয়া ফ্লাই দুবাইয়ের মোট চারটি ফ্লাইটের এই যাত্রীদের তখন থেকেই দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল।

মুহাম্মদ আলমগীর নামে একজন যাত্রী শনিবার রাতে দুবাই বিমানবন্দর থেকে মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি ৮৫ হাজার টাকা দিয়ে ফ্লাই দুবাই করে এসেছি। দেশ থেকে আসার আগে আমরা যেখান থেকে টিকেট নিয়েছিলাম সেখান থেকে টিকেটের সাথে আমাদেরকে আইসিএ অনুমোদনের একটি প্রিন্টআউট পেপার দেওয়া হয়। ওই পেপারটি আমরা বাংলাদেশের ইমিগ্রেশনকে দেখিয়েছিলাম এবং দেশ থেকে আসার ছাড়পত্র পাই। ফ্লাই দুবাই এয়ারলাইন্সের টিকেট নেওয়ার সময় আমাদেরকে আমিরাত প্রবেশে কোনো সমস্যা হবে না জানিয়েছিল— যে কারণে আমরা রেড সিগন্যাল থাকার পরও আমিরাতে এসেছি।’

গত ৮ অক্টোবর থেকে আমিরাত সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, আইসিএ অনুমোদন ছাড়া দুবাই বিমানবন্দর দিয়ে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এরপরও এয়ারলাইন্সগুলো কেন এ ধরনের কাজ করবে— সেই প্রশ্ন ভুক্তভোগী প্রবাসীদের।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!