৬ সিপাহীই চট্টগ্রামে মাদক নিয়ন্ত্রণের ‘ঘোড়া’

৬০ লাখ লোকের শহর চট্টগ্রামে মাদক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাত্র ৬ জন সিপাহী। অন্যান্য দায়িত্বে আছেন আরও মাত্র ১৯ জন। যাদের আবার নেই অস্ত্র, পর্যাপ্ত যানবাহন, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা। অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মত রেশন কিংবা ঝুঁকি ভাতার সুবিধাও পান না তারা। এতসব সমস্যা নিয়ে গত ৩০ বছর চট্টগ্রামে মাদক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে সংস্থাটি।

‘৩০ বছরে মাদক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যমাত্রা কী ছিল এবং সেসবের কতটুকু পূরণ করতে পেরেছে সংস্থাটি’— এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে এসব তথ্য জানান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম মেট্রো উপ-অঞ্চলের উপ-পরিচালক শামীম আহম্মেদ।

তিনি বলেন, ‘সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, যেমন এখানে লোকবলের সমস্যা আছে। চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলে মাত্র ২৫ জন লোক কাজ করে। এর মধ্যে সিপাহী মাত্র ৬ জন। ৬০ লাখ লোকের শহরে ৬ জন সিপাহী কতটুকু সার্ভিস দিতে পারবে? এছাড়াও যানবাহনের সমস্যা আছে। এসব সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা কিছু রেগুলার বেসিসে কাজ করে যাচ্ছি। অধিদপ্তর থেকে যে টার্গেটগুলো দেওয়া হয় তার চেয়েও আমরা কাজ বেশি করি।’

তিনি যোগ করেন, ‘এখন মাদকের পুরো বিষয়টাই প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে গেছে। যারা মাদক ব্যবসা করে তারা প্রযুক্তিনির্ভর। তাদের দমনেও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার প্রয়োজন। কিন্তু এখানে আমাদের অনেক ঘাটতি আছে। আমাদের যে ক্যাপাসিটি আছে তা দিয়ে বড় কিছু করা সম্ভব না।’

শামীম আহম্মেদ বলেন, ‘অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো রেশনভাতা, ঝুঁকিভাতাসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পায়। কিন্তু আমাদের সিপাহীরা এসব সুবিধা পায় না। এসব কিছু ওভারকাম করে আমরা যাতে অন্যান্য আধুনিক সংস্থার সাথে সমানতালে আগাতে পারি সে চেষ্টা করছি।’

“মাদককে রুখবো, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়বো”শ্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী মাদকবিরোধী প্রচারণা কর্মসূচি পালন করছে সংস্থাটি। বৃহষ্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকালে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন পরিচালিত মোটেল সৈকতে পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম মেট্রো উপ-অঞ্চলের উপপরিচালক শামীম আহম্মেদ।

শামীম আহম্মেদ জানিয়েছেন, সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদকবিরোধী আলোচনা সভা করা হবে। সেখানে মাদকের বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রীদের শপথ পাঠ করানো হবে। এছাড়া মসজিদে খুতবায় মাদকের বিরুদ্ধে আলোচনা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন স্পটে দেখানো হবে মাদকবিরোধী শর্ট ফিল্মও।

প্রসঙ্গত, ১৯৯০ সালের ২ জানুয়ারি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করা হয় এবং তৎকালীন রাষ্ট্রপতির সচিবালয়ের অধীন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর ১৯৯১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এ অধিদপ্তরকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যস্ত করা হয়।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!