৬ মাসে ১ লাখ ৩৩ হাজার মামলা চট্টগ্রাম বিভাগে, মিটমাট ১ লাখ ৩০ হাজার

মামলা নিষ্পত্তির হার বেড়েছে গত বছরের চেয়ে

চট্টগ্রাম বিভাগের আদালতগুলোতে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মিলিয়ে মোট মামলা দায়ের হয়েছে ১ লাখ ৩২ হাজার ৫০৮টি। অন্যদিকে এই সময়ে চট্টগ্রাম বিভাগে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ৯২৬টি। গত বছরের চেয়ে মামলা নিষ্পত্তির কিছুটা বেড়েছে। গত বছর একই সময়ে চট্টগ্রাম বিভাগে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল ১ লাখ ১০ হাজার ৮৮৯টি।

সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন বলছে, চট্টগ্রামই শুধু নয়, দেশের অধস্তন আদালতগুলোতে মামলা নিষ্পত্তির হার গত বছরের তুলনায় ৩২ দশমিক ৪০ ভাগ বেশি। ২০২১ সাল ও ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসের মামলা নিষ্পত্তির তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে সুপ্রিম কোর্টের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের সভাপতিত্বে গঠিত আট বিভাগের জন্য নতুন মনিটরিং কমিটি গঠনের পর নিষ্পত্তির হার বেড়েছে।

গত ২৭ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি দেশের আটটি বিভাগের প্রত্যেক বিভাগের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতিকে মনোনয়ন দিয়ে আটটি ‘মনিটরিং কমিটি ফর সাব-অর্ডিনেট কোর্টস’ গঠন করে দেন।

এতে চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বে বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা, ঢাকা বিভাগের দায়িত্বে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম, খুলনা বিভাগে বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, বরিশাল বিভাগে বিচারপতি জাফর আহমেদ, সিলেট বিভাগে বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, রংপুর বিভাগে বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিন, ময়মনসিংহ বিভাগে বিচারপতি মো. জাকির হোসেন এবং রাজশাহী বিভাগে বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এই মনিটরিং কমিটি গঠিত হওয়ার পর কমিটির সভাপতিরা বিভিন্ন সময়ে দেশের ৮টি বিভাগের অধঃস্তন আদালতগুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এরপর গত ছয় মাসের প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত অধস্তন আদালতের মামলার পরিসংখ্যানে দেখা যায়, আট বিভাগে মামলা দায়ের হয়েছে ৭ লাখ ৪৭ হাজার ৪৭৬টি। আর নিষ্পত্তি হয়েছে ছয় লাখ ৮৬ হাজার ৯৫২টি মামলা। গড় নিষ্পত্তির হার ৯১ দশমিক ৯০ শতাংশ।

অন্যদিকে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত দায়ের হয়েছিল ছয় লাখ ৫৫ হাজার ৯৮১টি মামলা। নিষ্পত্তি হয়েছে তিন লাখ ৯০ হাজার ৩১১টি। গড়ে নিষ্পত্তি হার ৫৯ দশমিক ৫০ শতাংশ।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে ৮টি বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের অধস্তন আদালতে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মিলিয়ে ১ লাখ ৩২ হাজার ৫০৮টি, ঢাকা বিভাগের ২ লাখ ৬১ হাজার ৬২৬টি, খুলনা বিভাগে ৮৪ হাজার ৭৫৯টি, বরিশাল বিভাগে ৪৪ হাজার ৬৫৬টি, সিলেট বিভাগে ৩৯ হাজার ১৯৭টি, রংপুর বিভাগে ৫৩ হাজার ৬৭৩টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪৭ হাজার ৯০৪টি ও রাজশাহী বিভাগে ৮৩ হাজার ১৫৩টি মামলা দায়ের করা হয়। সবমিলিয়ে ৮ বিভাগে মোট ৭ লাখ ৪৭ হাজার ৪৭৬টি মামলা দায়ের করা হয়।

একই সময়ে চট্টগ্রাম বিভাগে ১ লাখ ২৯ হাজার ৯২৬টি, ঢাকা বিভাগে ২ লাখ ২৫ হাজার ৬০৮টি, খুলনা বিভাগে ৭৪ হাজার ৬৯৪টি, বরিশাল বিভাগে ৪০ হাজার ৯১১টি, সিলেট বিভাগে ৩৭ হাজার ৪৭৩টি, রংপুর বিভাগে ৫২ হাজার ৮৪৬টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ৫১ হাজার ৮১১টি ও রাজশাহী বিভাগে ৭৩ হাজার ৬৮৩টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এ হিসেবে চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে দেশের ৮ বিভাগে মোট ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৯৫২টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এই ৬ মাসে মামলা নিষ্পত্তির হার গড়ে ৯১ দশমিক ৯০ শতাংশ।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের ৮ বিভাগের মধ্যে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা মিলিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগে ১ লাখ ১০ হাজার ৮৮৯টি, ঢাকা বিভাগে ২ লাখ ৫০ হাজার ৯৫৩টি, খুলনা বিভাগে ৬৭ হাজার ২৯টি, বরিশাল বিভাগে ৩২ হাজার ১৮৩টি, সিলেট বিভাগে ৩৪ হাজার ৭৯টি, রংপুর বিভাগে ৪৫ হাজার ৪৪৭টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪৮ হাজার ৯৭৭টি ও রাজশাহী বিভাগে ৬৬ হাজার ৪২৪টি মামলা দায়ের করা হয়। সবমিলিয়ে ৮ বিভাগে মোট ৬ লাখ ৫৫ হাজার ৯৮১টি মামলা দায়ের করা হয়।

গত বছরের একই সময়ে চট্টগ্রাম বিভাগে নিষ্পত্তি হয়েছিল ৭০ হাজার ৯১১টি, ঢাকা বিভাগে ১ লাখ ৩০ হাজার ২৪২টি, খুলনা বিভাগে ৪৬ হাজার ৬৪টি, বরিশাল বিভাগে ২৩ হাজার ৩২৪টি, সিলেট বিভাগে ২০ হাজার ৮৪৯টি, রংপুর বিভাগে ৩০ হাজার ৯৮৯টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৪ হাজার ৮৫৫টি ও রাজশাহী বিভাগে ৪৩ হাজার ৭৭টি মামলা। গত বছরের প্রথম ৬ মাসে মোট নিষ্পত্তি হয় ৩ লাখ ৯০ হাজার ৩১১টি মামলা। এই সময়ে নিষ্পত্তির হার ছিল গড়ে ৫৯ দশমিক ৫০ শতাংশ।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!