৬ দিনের শিশু রেখে ট্রেনে কাটা পড়ে মায়ের মৃত্যু

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে সন্তান প্রসবের ৬ দিনের মাথায় ট্রেনে কাটা পড়ে পারভিন আক্তার (৫০) নামের এক মানসিক ভারসাম্যহীন মায়ের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (২৫ এপ্রিল) সকালে মিরসরাই রেলওয়ে স্টেশন এলাকার ঢাকামুখী লাইনে এ ঘটনা ঘটেছে।

নিহত পারভিন আক্তার মিরসরাই পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের তারাকাটিয়া এলাকার নওশা সওদাগরের বাড়ির অটোরিকশাচালক মহিউদ্দিনের স্ত্রী। তিনি সাবরিন আক্তার জেনি (১৩), মাইন উদ্দিন আলবী (৭) এবং ৬ দিন বয়সী সাবিহা তাছনিম (৬ দিন) নামে তিন সন্তানের মা ছিলেন।

পারভিনের স্বামী মহিউদ্দিন বলেন, ৬ দিন আগে আমাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। রোববার রাতে তার নাম রাখা হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে তার মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। খুব সুন্দর করে আমাদের সংসার চলছিল। কিন্তু কী করে এমন হলো তা বুঝতে পারছি না।

তিনি বলেন, অসুস্থ হওয়ার পর থেকে প্রায় সময় বলতো আমি মরে যাবো। গতকাল রাতে আমাদের ছোট মেয়ের নাম রাখা হয়েছে। আমার শ্বশুরবাড়ি থেকে আত্মীয়স্বজনরা এসেছিল। সবাই মিলে ভোর রাতে সেহরি খেয়েছি। কিন্তু কখন যে আমাদের বাড়ি থেকে বের হয়ে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে চলে গেছে তা বুঝতে পারছি না। আমি আমার অবুঝ শিশুদের কী করে সান্ত্বনা দেবো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।

মাত্র ৬ দিন বয়সী শিশু সাবিহা তাছনিম শুধু কান্না করছে। বড় দুই সন্তানও মা মা করে কান্না করছে। তাদেরকে সান্ত্বনা দিতে গিয়েও পারছেন না তাদের বাবা। কী বলে সান্ত্বনা দেবেন তার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন স্বামী মহি উদ্দিন।

ওই বাড়ির একাধিক মহিলার সাথে কথা বলে জানা গেছে, তাদের স্বামী-স্ত্রী মধ্যে বা বাড়ির কোনো মহিলার সাথেও কোনদিন পারভিনের ঝগড়াঝাটি হয়নি। খুবই ধার্মিক মহিলা ছিলেন তিনি। ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় চারদিকে শুধু আহাজারি।

সোমবার রাত ৯ টা জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

এর আগে সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনের মিরসরাই রেলওয়ে স্টেশন এলাকার ঢাকামুখী লাইনে অজ্ঞাত ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে দেহ ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় পারভিনের। খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!