৬৫ দিন পর মধ্যরাত থেকেই বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরবেন জেলেরা

দীর্ঘ ৬৫ দিন বন্ধ থাকার পর আজ শনিবার (২৩ জুলাই) মধ্যরাত থেকেই আবার মাছ ধরা শুরু হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে। শনিবার রাত ১২টায় শেষ হচ্ছে ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞার সময়। ফলে আবারও সমুদ্রে ঝাপিয়ে পড়বে মৎস্যজীবীরা। গত ২২ মে থেকে বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করে সরকার।

মৎস্যজীবীরা জানান, ৬৫ দিন সমুদ্রে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকায় চট্টগ্রামের সমুদ্রগামী জেলেরা মানবেতর জীবনযাপন করেছেন। অন্য কোনো পেশায় সুযোগ না পেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা অলস সময় পার করেছেন।

জানা গেছে, গত ২২ মে থেকে এ নিষেধাজ্ঞার ফলে সমুদ্রে মাছ শিকারে যেতে পারেননি জেলেরা। মৎস্য অধিদপ্তরের এক আদেশে সামুদ্রিক মাছের প্রজনন সময় বিবেচনায় নিষিদ্ধ করা হয়েছিল মাছ ধরা।

চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ’৬৫ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে শনিবার রাত ১২টায়। ফলে রাতেই জেলেরা সাগরে চলে যাবেন। সমুদ্রের মাছ কম দামে খেতে পারবে সাধারণ জনসাধারণ।’

তিনি বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার এ সময়ে জেলেদের মানবিক সহায়তা দেওয়া হয়েছিল। প্রত্যেক পরিবারকে সরকারি চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’

চট্টগ্রাম ফিশারীঘাটের মৎস্যজীবী মো. আক্কাস সওদাগর বলেন, ‘আমার ১৫টি মাছ ধরার বোট রয়েছে। আমরা বোট নিয়ে প্রস্তুতি নিয়েছি সাগরে যাওয়ার। আবহাওয়াসহ সবকিছু ঠিক থাকলে শনিবার রাতে আমরা রওনা হবো সাগরে।’

চট্টগ্রামের সোনালী যান্ত্রিক মৎস্য শিল্প সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক বাবুল সরকার বলেন, ‘নিষিদ্ধ সময়ের এই ৬৫ দিন জেলেরা চরম মানবেতর দিনযাপন করেছে। সাগরে যেতে পারলে তাদের জীবনযাপন পূর্বের মতো ফিরে আসবে। কেউ কেউ অন্য পেশাও বেছে নিয়েছে।’

এদিকে মৎস্যজীবীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে নিবন্ধিত মৎস্যজীবীদের সন্তান ও পোষ্যদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ, প্রশিক্ষিত ব্যক্তিকে জামানতবিহীন সুদমুক্ত লোন প্রদানের ব্যবস্থা করা, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, উপকূলীয় অঞ্চলসহ সকল চরাঞ্চল এলাকায় মৎস্যপল্লী নামে আবাসন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলাসহ ১১ দফা প্রস্তাবনা সরকারের মৎস্য দপ্তরে প্রণয়ন করা হয়েছিল। এরমধ্যে দু’একটি বাস্তবায়ন হলেও বাকি দাবিগুলো বাস্তবায়িত হয়নি। এ দাবি বাস্তবায়ন হলে মৎস্যজীবীদের সামাজিক অর্থনৈতিক জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন করা সম্ভব বলে মনে করেন মৎস্যজীবীরা।

প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাগরে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

এএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!