৫০ হাজারে তালাকের সমাধান, চসিক পেশকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ

কাবিননামা ও শুনানি ছাড়া তালাক নোটিশ কার্যকরের আশ্বাস দিয়ে ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ম্যাজিস্ট্রেট শাখার পেশকার নমিতা রাণী বিশ্বাস। এমন অভিযোগ এনে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের কাছে গত ২০ আগস্ট অভিযোগ দায়ের করেছেন বিবাদীর আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। দুর্নীতি দমন কমিশন চট্টগ্রাম অঞ্চল, চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, চসিক স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছেও একই অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, নিম্নমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে ১৯৮৯ সালে চসিকের আইন শাখায় যোগদান করেন নমিতা রাণী বিশ্বাস। ২০১৪ সালে তিনি চসিকের ম্যাজিস্ট্রেট শাখায় পেশকার পদে পদোন্নতি পান। নমিতা ম্যাজিস্ট্রেট শাখার ভ্রাম্যমাণ আদালত, সালিশী মামলা প্রসেসসহ দুই ম্যাজিস্ট্রেটের অফিসিয়াল কাজে সহায়তা করে থাকেন।

অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, মামলার বাদী স্ত্রী ও বিবাদী স্বামীর বিয়ের কোন কাবিননামা ছিল না। এ অবস্থায় বাদি স্ত্রী চসিকের মাধ্যমে স্বামীকে তালাকের নোটিশ দেন। বিবাদীর পক্ষ থেকে সিটি করপোরেশনের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে যোগাযোগ করলে পেশকার নমিতা রাণী বিশ্বাস জানান, কাবিননামা ছাড়া ওই তালাক নোটিশ কার্যকর করা যাবে না বা হবে না। ফলে তখন বিবাদি স্বামী সালিশি মামলার আদালতে হাজির হয়নি। কিন্তু পরবর্তীতে বাদী স্ত্রী বিবাদী স্বামীকে বিভিন্নভাবে বিভ্রান্তিতে ফেলে।

বিবাদী পক্ষ সমস্যার সমাধান করতে চাইলে বাদী পক্ষ জানায়, মহিলা পেশকারকে ৫০ হাজার টাকা দিলে ম্যাজিস্ট্রেটের শুনানি ছাড়া তালাকটা কার্যকর দেবে। পরে বিবাদী পক্ষ মহিলা পেশকার নমিতাকে ৫০ হাজার টাকা দিলে নমিতা নিজ হাতে একটি দরখাস্ত লিখে শুনানি ছাড়াই তালাক কার্যকর করে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। দুই দিন পর কার্যকর হওয়ার পর নকল প্রদান করবেন বলেও আশ্বস্ত করেন। এর পরেও বাদী পক্ষ বিভিন্নভাবে বিবাদী পক্ষ স্বামীকে হুমকি দিতে থাকে। এ অবস্থায় নিরুপায় হয়ে মেয়রের কাছে বিচার চেয়েছেন বিবাদী পক্ষ।

ওই অভিযোগ পত্রে কাবিননামা এবং ম্যাজিস্ট্রেটের শুনানি ছাড়া কিভাবে তালাক নোটিশটি কার্যকর করা হলো তা সুষ্ঠভাবে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান বিবাদী পক্ষের আইনজীবী।

অভিযোগের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে নমিতা রাণী বিশ্বাস চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি কিছুই জানি না। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে আমাকে ট্রান্সফার করার জন্য। ২০ বছর ধরে করপোরেশনে চাকরি করছি, আমি এমন কোন কাজ করিনি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আমার শাখার লোকেরাই অভিযোগ দিয়েছে।’

এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চসিকের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা জজ) জাহানারা ফেরদৌস চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে অভিযোগপত্রটি অফিসিয়ালি আমি এখনো পাইনি। পেলে তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো।’

এ ব্যাপারে চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার স্মরণে নেই। তবে অভিযোগ সত্যি হয়ে থাকলে আমি খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবো।’

এমএ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!