৪০ কোটি টাকা মেরে এমপির ছেলে দুই মাইজভান্ডারী মামলার জালে

৪০ কোটি টাকা মেরে দেওয়ার ঘটনায় চট্টগ্রামের সাংসদ সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর দুই ছেলেকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তারা হলেন— সৈয়দ তৈয়বুল বশর মাইজভান্ডারী ও সৈয়দ আফতাবুল বশর মাইজভান্ডারী।

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ কমিশনের সহকারী পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। অর্থ আত্মসাতের ঘটনা অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়ায় বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) কমিশন থেকে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত হয়।

ত্বরিকত ফেডারেশনের সভাপতি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর দুই ছেলেসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ঋণের ৩৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর দুই ছেলে সৈয়দ তৈয়বুল বশর ও সৈয়দ আফতাবুল বশর ছাড়া অন্য অভিযুক্তদের মধ্যে প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান কে এম খালেদ ও তার ছেলে কে এম রাকিব হোসেন, তাদের আত্মীয় খন্দকার মো. মোস্তাহিদও আছেন। এছাড়া প্রাইম ফাইন্যান্সের বর্তমান পরিচালক মুসলিমা শিরিন, জেড এম কায়সার, মো. অলিউজ্জামান, এম শাহাদত হোসেন কিরন, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট গুলশান আরা হাফিজ ও অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট তাজরিয়ান হক, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসাদ খান, সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আহসান কবির খান, সাবেক এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. রেজাউল হকও রয়েছেন।

দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, সৈয়দ তৈয়বুল বশর ২০১১ সালের ২০ ডিসেম্বরে ২০ কোটি টাকা এবং সৈয়দ আফতাবুল বশর ১৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা শর্ত সাপেক্ষে পাঁচ বছর মেয়াদি টার্ম ঋণের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, আবেদনের দুই দিন আগেই প্রাইম ফাইন্যান্সের বোর্ড সভায় ঋণ দুটি অনুমোদিত হয়। এ ছাড়া ঋণ মঞ্জুরে নানা অনিয়মও হয়েছে। নথিপত্র পর্যালোচনা করে দুদক আরও দেখতে পায়, ব্যক্তিগত প্রয়োজন মেটানোর জন্য তাঁরা এই ঋণ নিয়েছেন। তাঁরা ঋণের শর্ত ভঙ্গ করে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে নজিবুল বশর মাইজভান্ডারির দুই ছেলে ও প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের কয়েকজন কর্মকর্তাসহ অন্যরা মিলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটি থেকে ঋণ নিয়ে আত্মসাতের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

পরে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২-এর ৪(২) ধারায় অভিযোগ এনে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মামলা দায়েরের অনুমোদন দেয় দুদক।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!