৩ বছরে ১৬ হাতি হত্যা কক্সবাজারে, এশিয়ান হাতি বিলুপ্তির আশঙ্কা

কক্সবাজারে একের পর এক হত্যা করা হচ্ছে হাতি। সর্বশেষ মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) কক্সবাজারের রামুর খুনিয়াপালংয়ে হাতি হত্যা করে খণ্ড খণ্ড করে পুঁতে ফেলার ঘটনা ঘটেছে। এদিকে কক্সবাজারের বনাঞ্চলে মহাবিপন্ন এশিয়ান হাতিকে একের পর এক হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এনভায়রনমেন্ট পিপল’।

মহাবিপন্ন এশিয়ান হাতির মতো এই বন্যপ্রাণী রক্ষায় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। সংগঠনটির পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জানানো হয় যে, ফাঁদ পেতে, গুলি করে, বিদ্যুৎ শকড দিয়ে একের পর এক হাতি হত্যা করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না অপরাধীরা এখন হাতিকে হত্যা করে খণ্ড খণ্ড করে পুঁতে ফেলা হচ্ছে। এভাবে বন্যপ্রাণীর সাথে নির্মম আচরণ করলেও অপরাধীরা শাস্তির আওতায় আসছে না।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, ২০২০ সালের ৬ নভেম্বর কক্সবাজারের চকরিয়ার খুটাখালীর কালাপাড়ার বনাঞ্চলে একটি বাচ্চা হাতিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ৮ দিনের ব্যবধানে ১৪ নভেম্বর কক্সবাজারের রামুর জোয়ারিয়ানালার জুমছড়ির বনাঞ্চলে ৩০ বছর বয়সী স্ত্রী হাতিকে গুলি করা হয়। ওই হাতি ১৬ নভেম্বর মারা যায়। এক দিনের ব্যবধানে ১৫ নভেম্বর কক্সবাজার রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়ির খরলিয়াছড়ায় বিদ্যুতের তার ও গুলি করে আরও একটি হাতিকে হত্যা করা হয়।

এছাড়া গত তিন বছরে কক্সবাজার ও আশপাশের অঞ্চলে অন্তত ১৬টি হাতির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গুলি এবং বিদ্যুতের তারে জড়িয়েই বেশির ভাগ হাতির মৃত্যু হয়। এভাবে ধারাবাহিকভাবে হাতি হত্যার ঘটনা উদ্বেগ তৈরী করেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই পুরো দেশ থেকে এশিয়ান হাতি বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এশিয়ান হাতিকে মহাবিপন্ন উল্লেখ করে এনভায়রনমেন্ট পিপল এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ জানিয়েছেন, সারাদেশের ২৬৮টি মহাবিপন্ন এশিয়ান হাতির দুই তৃতীয়াংশের বসবাস কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্রগ্রাম অঞ্চলে। কিন্তু কক্সবাজার ও পার্শ্ববর্তী বনাঞ্চলে রেললাইন, রোহিঙ্গা বসতি, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, অবৈধ জবরদখলসহ বিভিন্ন কারণে এসব হাতির নিরাপদ আবাসস্থল, পর্যাপ্ত খাদ্য, নিরাপদ চলাচল (করিডোর) চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

যার কারণে এসব হাতি লোকালয়ে হানা দিচ্ছে। এতে হাতি ও মানুষের মধ্যে দ্বন্ধ তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে অসাধু লোকজন হাতি ঠেকাতে নিষ্ঠুরভাবে গুলি ও বিদ্যুতের তার ব্যবহার করে হাতি হত্যায় মেতে উঠেছে। নিরাপদ আবাসস্থল তৈরী, খাদ্য সংকট দুর করা, হাতি চলাচলের রাস্তা (করিডোর) নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন রাখা, হাতি হত্যায় জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা, মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি, বনভূমি দখল রোধ, বনাঞ্চল তৈরীসহ মহাবিপন্ন এই এশিয়ান হাতি সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!