৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা শুল্ক ফাঁকি মামলায় ৪ জনের জামিন বাতিল

বন্ড সুবিধার অপব্যবহার

৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা শুল্ক ফাঁকির মানি লন্ডারিং মামলায় আমদানিকারকসহ ৪ আসামির জামিন বাতিল হয়েছে আদালতে। মিথ্যা ঘোষণায় আনা পলিয়েস্টার টেক্সটুর ইয়ার্ন ১৫ হাজার ৬৯০ কেজি ঘোষণা দিলেও আনা হয় ৭৮ হাজার ৪৯৭ কেজি। এতে ৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। ফলে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) অনুযায়ী মামলা দায়ের করেন কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর।

এ সংক্রান্ত পণ্য চালান ছাড় নেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের বিল অব এন্ট্রি (বি ই নং ১৫৯০৯৪০, তারিখ ৩.১১.২০১৮) দাখিল করা হয়েছিল।

এ ঘটনায় দীর্ঘ তদন্ত শেষে চট্টগ্রামের বন্দর থানায় মামলা (নং ১০ (১০) ২০১৯) দায়ের করা হয়। এতে ৪ জনকে আসামি করা হয়। এরা হচ্ছেন- মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, মো. খোরশেদ আলম, মো.আসাদুজ্জামান ও ওয়াহিদ আহমেদ। মামলাটি দায়ের করেন কাস্টমসে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মাহবুব এ খোদা।

মামলার বিবরণী থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৩ নভেম্বর বিল অব এন্ট্রি দাখিল করা হয় চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে। বন্ড সুবিধায় আনা ওই পণ্য ছাড় নেওয়া হয়। কিন্তু বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করে মিথ্যা ঘোণনায় অতিরিক্ত পণ্য ছাড় নেওয়ায় কাস্টমস এ্যাক্ট ১৯৬৯, সেকশন-১৩ (২) মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। যেখানে অতিশুল্কের পলিয়েস্টার ইয়ার্ন থ্রেড ও পলিয়েস্টার ইয়ার্ন সুইংও পাওয়া যায়।

এদিকে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলার প্রেক্ষিতে আসামিগণ ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নেন। এতে ৬ সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করেন এরং নিন্ম আদালতে স্থায়ী জামিন নিতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। পরে গত ৩ ডিসেম্বর স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে আদালত মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) শুনানির দিন ধার্য করেন।

বিজ্ঞ মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদনের শুনানি শেষে আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। ফলে আসামিদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

আসামিদের মধ্যে ঢাকা মুহাম্মদ পুরের নোবডি হাউজিংয়ের মো. ইমান আলীর ছেলে মো. মহিউদ্দিন আহমেদ (৫৩) , একই ঠিকানার তার ভাই মো. আসাদুজ্জামান (৩৫), অপর ভাই ওয়াহিদ আহমেদ (৪৩)। অপর আসামি হলেন- ধানমন্ডির জিগাতলা এলাকার মৃত আহমেদ আলীর ছেলে খোরশেদ আলম (৫৯)।

কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের তদন্তে দেখা যায়, ঢাকা হতে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট হতে ইস্যুকৃত লাইসেন্স ৫ (১৩)৮৪/ কাস-বন্ড/লাই/২০০৭/২৪০৬ মোতাবেক ১৫০ মে.টন শতভাগ স্পান পলিয়েস্টার ইয়ার্ন আমদানির প্রাপ্যতা থাকলেও এসআইকোডা ওয়ার্ল্ড থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে ২৭/৩/১৮ থেকে ১৬/৯/১৮ পর্যন্ত ১৪টি বিল অব এন্ট্রিতে ৫০০ মেট্রিক টন স্পান পলিয়েস্টার ইয়ার্ন ও স্পান পলিয়েস্টার সুইং থ্রেড আমদানি করেছে। অনুমোদিত প্রাপ্যতার চেয়ে আরও ৩৫০ মেট্রিক টন বেশি আমদানি করেছে।

ওই আমদানিকারক মোট ৭ কোটি ৬৮ লাখ ৬০ হাজার টাকার মালামাল আমদানি করেছেন। কিন্তু তিনি আমদানির প্রাপ্যতা ছিল সাড়ে ৪ কোটি টাকার মতো। এখানে অতিরিক্ত ৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা তিনি শুল্ক ফাঁকি দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আবদুল্লাহ আল বেলাল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, চট্টগ্রাম দায়রা জজ আদালতে মঙ্গলবার দুপুরে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করা হলে আদালত ৪ আসামিদের কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!