৩৭ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পেল চট্টগ্রামের কনস্টেবলের পরিবার

করোনায় মারা যাওয়া ৯ পুলিশের পরিবার পাচ্ছে পৌনে ৪ কোটি

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের কনস্টেবল মোখলেছুর রহমানের পরিবার সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাচ্ছেন সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা। শুধু তিনিই নন, বেতনের গ্রেড অনুযায়ী সাড়ে ৩৭ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা করে মোট তিন কোটি ৭৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ পাচ্ছে মোট ৯ পুলিশ সদস্যের পরিবার।

এর আগে ১৯ আগস্ট পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রথমবারের মতো ৫০ লাখ টাকা পেয়েছেন করোনায় মারা যাওয়া চট্টগ্রাম নগর পুলিশের গোয়েন্দা (দক্ষিণ) বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মিজানুর রহমানের পরিবার।

করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি চাকরিজীবীদের কাজে উদ্বুদ্ধ করতে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দেয় সরকার। সে অনুযায়ী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন, তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া শুরু করেছে সরকার।

গত ১৯ মে করোনায় মারা যান চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের কনস্টেবল মোখলেছুর রহমান (৫৭)। তিনি চট্টগ্রাম জেলা আদালতে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার টামটা গ্রামে। মোখলেছুর রহমান ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা প্রথম পুলিশ সদস্য।

জানা গেছে, করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ১৬ পুলিশ সদস্যদের পরিবারের পক্ষ থেকে সম্প্রতি ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করা হয়। কিন্তু এদের মধ্যে ৯ পুলিশ সদস্যের পরিবার অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পরিপত্র অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করলে তাদের আবেদন মঞ্জুর হয়। এসব পরিবারকে ক্ষতিপূরণে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য রোববার (৪ অক্টোবর) হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। বাকি আবেদনগুলো এখনও মঞ্জুর হয়নি।

মোখলেছুর রহমান ছাড়া বাকি যে ৮ পুলিশ সদস্যের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে, তাদের মধ্যে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি), ঢাকার এসআই (নিরস্ত্র) মো. রাসেল বিশ্বাসের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা। ঢাকা মেট্রোপলিটন উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) অনিতা রায়ের পরিবার পাচ্ছে ৫০ লাখ টাকা। আরআরএফ রাজশাহীর এসআই (নিরস্ত্র) মোশারফ হোসেন শেখের পরিবার পাচ্ছে সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা।

অন্যদিকে ডিএমপির পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) রাজু আহম্মেদের পরিবার পাচ্ছে ৫০ লাখ টাকা, ডিএমপির কনস্টেবল আলমগীর হোসেনের পরিবার পাচ্ছে সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা, পিএমপির নায়েক আল মামুনুর রশিদের পরিবার পাচ্ছে সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা। এছাড়া সিরাজঞ্জের পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) ফজলুর রহমানের পরিবার ৫০ লাখ টাকা এবং রাজশাহীর এসআই (নিরস্ত্র) আবুল কালাম আজাদের পরিবার সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে।

করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি চাকরিজীবীদের কাজে উদ্বুদ্ধ করতে সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হলে ক্ষতিপূরণ বাবদ গ্রেডভেদে পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকা পাবেন। মারা গেলে পাবেন ২৫ থেকে ৫০ লাখ টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা পরিপত্রে বলা হয়, ২০১৫-এর বেতন স্কেল অনুযায়ী, ১৫-২০তম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে তিনি ক্ষতিপূরণ পাবেন পাঁচ লাখ, মারা গেলে পাবেন ২৫ লাখ টাকা। ১০-১৪তম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে পাবেন সাড়ে সাত লাখ এবং মারা গেলে সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা। এছাড়া প্রথম-নবম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে পাবেন ১০ লাখ এবং মারা গেলে ৫০ লাখ টাকা।

দেশে প্রথমবারের মতো গত ২৭ জুলাই করোনায় মারা যাওয়া প্রতিরক্ষা সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী এবং সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক মঈন উদ্দিনের পরিবার ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫০ লাখ টাকা করে মোট এক কোটি টাকা পেয়েছেন।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!