২ লাখ কন্টেইনার পরিচালনার লক্ষ্য নিয়ে আফছারুল আমীনের ‘ডিপো’

চট্টগ্রাম বন্দরভিত্তিক ‘ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো’ স্থাপন করছে চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী) আসনের সংসদ সদস্য আফছারুল আমীনের প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাংকোরেজ কন্টেইনার ডিপো লিমিটেড।’ তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। স্থানীয় বিনিয়োগে এই ডিপো স্থাপন করা হবে।

এই ডিপো স্থাপনে ৫০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাবনা নিবন্ধনপত্র দিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ড (বিডা)। তবে নিবন্ধনপত্রের বিপরীতে নয়টি শর্ত দিয়েছে বিডা। আগামী ২০২০ সালের নভেম্বরে এটি উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এতে ১২০ জনের কর্মসংস্থান হবে। এ ডিপো বছরে ১ লাখ ৮০ হাজার টিউস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করবে, যার আর্থিক মূল্য ৩৬ কোটি টাকা।

বিডা চট্টগ্রাম কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ‘অ্যাংকোরেজ কন্টেইনার ডিপো লিমিটেড’ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ‘কন্টেইনার ডিপো’ স্থাপনের নিবন্ধন চেয়ে গত বছরের ১৮ নভেম্বর বিডা চট্টগ্রাম কার্যালয়ের পরিচালক বরাবর আবেদন করেন আফছারুল আমীন। এরপর ২৫ নভেম্বর এর নিবন্ধন দেয় বিডা।

বিনিয়োগ প্রস্তাবনা থেকে জানা যায়, অ্যাংকোরেজ কন্টেইনার ডিপো লিমিটেডের অফিস নগরীর দেওয়ানহাটে এবং কারখানা পড়েছে পাহাড়তলীর দক্ষিণ কাট্টলী চানমিয়া রোডে। মোট ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের বিপরীতে ‘ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো’ স্থাপনে জমি কেনায় ব্যয় হবে ১৫ কোটি টাকা, দালানকোঠায় ১০ কোটি টাকা, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি কেনায় ২০ কোটি টাকা, অন্যান্য খাতে তিন কোটি টাকা এবং চলতি মূলধনে থাকবে দুই কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০ শতাংশ বা ১০ কোটি টাকা পুঁজিবাজার এবং ৮০ শতাংশ ৪০ কোট টাকা স্থানীয় ঋণ থেকে অর্থায়ন করা হবে। অন্যদিকে ২০ কোটি টাকার মধ্যে ১৫ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম বিদেশ থেকে আমদানি এবং পাঁচ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামা স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহ করা হবে।

আফছারুল আমীন ছাড়াও এই ডিপো স্থাপনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছেন মোরশেদুল আমীন, খোরশেদুল আমীন, আরশাদুল আমীন এবং মোহাম্মদ আরিফুল আমীন। তারা চারজনই ‘অ্যাংকোরেজ কন্টেইনার ডিপো লিমিটেড’র পরিচালক।

এদিকে প্রকল্প বিনিয়োগ প্রস্তাবনায় নিবন্ধনপত্রের বিপরীতে বিডার কিছু শর্ত আরোপ করেছে। সেগুলো হলো শিল্প প্রকল্পের মালিকানা অথবা অবস্থানের পরিবর্তন হলে তাৎক্ষণিকভাবে বিডাকে অবহিত করা; প্রকল্পটি নিবন্ধপত্রে প্রদত্ত সময়সীমার মধ্যে বাস্তাবয়নে ব্যর্থ হলে বা বাস্তবায়নের নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রমের পর সময়সীমা নবায়নের জন্য বিডা বরাবরে আবেদন করা; কারখানায় উৎপাদিত শিল্পপণ্য বাজারজাত করার আগে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) কর্তৃক নির্ধারিত প্রণীত মানসম্পন্ন হওয়া; শিল্প প্রকল্প স্থাপনের পূর্বে বিদ্যমান পরিবেশ আইনের আওতায় পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র গ্রহণ করা; সরকারের বিদ্যমান আমদানী নীতির আওতায় মূলধনী যন্ত্রপাতি, খুচরা যন্ত্রাংশ এবং কাঁচামাল/মোড়ক সামগ্রী আমদানী করা; উৎপাদনে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর বিডার কার্যালয়ে প্রকল্পের উৎপাদন ও কর্মসংস্থান সম্পর্কে প্রতিবেদন দাখিল করা, কারখানার নিরাপত্তার জন্য অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকা এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট হতে ফায়ার লাইসেন্স গ্রহণ করা এবং প্রতিষ্ঠানটি উৎপাদন পর্যায়ে বা প্রাথমিক পর্যায়ে বন্ধ হয়ে গেলে তা বিডাকে অবহিত করা।

এ বিষয়ে মো. আফছারুল আমীন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘প্রকল্পটি প্রক্রিয়াধীন আছে। চূড়ান্ত অফিসিয়াল অনুমোদন পেলে বিস্তারিত বলতে পারবো।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!