২ কোটি টাকার ভ্যাট মেরে দিয়েছে চট্টগ্রামের এসি বাজার

পণ্য বিক্রি ১২৪ কোটি টাকার, খাতাকলমে ১২১ কোটি

পণ্য বিক্রি করা হয়েছে ১২৪ কোটি টাকারও বেশি। অথচ খাতাকলমে দেখানো হয়েছে ১২১ কোটি টাকা। মাঝখানে হাওয়া করে দেওয়া হয়েছে তিন কোটি টাকারও বেশি বিক্রির তথ্য।

এসি বাজার লিমিটেড নামে চট্টগ্রামের একটি ইলেকট্রনিকস ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভ্যাট ফাঁকি দিতে বিক্রির এই তথ্য গোপন করেছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির ব্যয় বা কেনাকাটার ওপর সঠিকভাবে ভ্যাট পরিশোধ না করেও ফাঁকি দিয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির প্রায় দুই কোটি টাকারও বেশি ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটন করেছে মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। রোববার (১৭ জানুয়ারি) ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এলাকার সোনারপাড়ায় অবস্থিত এসি বাজার লিমিটেড ফ্রিজ, রেফ্রিজারেটর, এসি, হিটার, ওয়াশিং মেশিনসহ বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিকস পণ্য সামগ্রী তৈরি, সংযোজন ও আমদানি করে বাজারজাত করে থাকে।

ড. মইনুল খান জানান, ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত বিক্রয়ের পরিমাণ গোপন করার মাধ্যমে ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এরই প্রেক্ষিতে ভ্যাট গোয়েন্দার পরিচালক মুহাম্মদ মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে তদন্ত দল গঠন করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, এসি বাজার ভ্যাট রিটার্নে ২০১৪ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ছয় বছরে মোট ১২১ কোটি ১৫ লাখ ৮৭ হাজার ৩৫৭ টাকার পণ্য সরবরাহ দেখিয়েছে। তদন্তে দেখা যায়, একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রকৃত বিক্রয়ের পরিমাণ ছিল ১২৪ কোটি ৭৭ লাখ ৯ হাজার ৮৫৮ টাকা।

এ হিসেবে প্রায় তিন কোটি ৬১ লাখ ২২ হাজার ৫০১ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যার ওপর প্রযোজ্য ভ্যাট ৫৪ লাখ ১৮ হাজার ৩৭৫ টাকা ফাঁকি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

অপরদিকে লিমিটেড কোম্পানির বিভিন্ন ধরনের ব্যয়ের ওপর ভ্যাট প্রযোজ্য হলেও প্রতিষ্ঠানটি তা যথাযথভাবে পরিশোধ করেনি। ছ য়বছরে প্রায় ৬২ লাখ ৬০ হাজার টাকার উৎসে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে এসি বাজার নামের এই প্রতিষ্ঠানটি। উভয় ক্ষেত্রে সময়মতো ভ্যাট পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী ২ শতাংশ হারে সুদ প্রযোজ্য। এ হিসেবে মোট সুদ ৮৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।

ভ্যাট গোয়েন্দা জানাচ্ছে, এসি বাজার লিমিটেড সুদসহ মোট ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে দুই কোটি ৩ লাখ টাকা— যা আদায়যোগ্য।

তদন্ত প্রতিবেদনটি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ড. মইনুল খান।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!