২৫ লাখ টাকা জিতে চট্টগ্রামের ত্রয়ী মায়ের জন্য কিনবে ১৭ ভরি স্বর্ণ

রাজধানীতে গানের রিয়েলিটি শো ‘স্টার সার্চ প্রতিযোগিতা’য় অংশ নিয়ে ২৫ লাখ টাকার প্রথম পুরস্কার জিতে নিল চট্টগ্রামের মেয়ে মহিমা দেব ত্রয়ী। ত্রয়ী চট্টগ্রাম সিটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।

বাবা-মা ও প্রতিযোগিতার তিন বিচারকের সঙ্গে চট্টগ্রামের মেয়ে মহিমা দেব ত্রয়ী।
বাবা-মা ও প্রতিযোগিতার তিন বিচারকের সঙ্গে চট্টগ্রামের মেয়ে মহিমা দেব ত্রয়ী।

শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) আনুষ্ঠানিকভাবে স্টার সার্চ প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালে সেরা প্রতিযোগীর নামটি ঘোষণা করা হয়। ওই প্রতিযোগিতার প্রধান তিন বিচারক তারিক আনাম খান, দিলারা হানিফ পূর্ণিমা ও চঞ্চল চৌধুরী বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন এবং তাদের হাতে ক্রেস্ট-চেক তুলে দেন। তারা প্রতিযোগীদের সঙ্গে মঞ্চে পারফর্মও করেন।

গত নভেম্বরে শুরু হওয়া ‘টফি স্টার সার্চ’ সারা দেশ থেকে প্রতিভাবানদের আহ্বান জানায় নাচ, গান, অভিনয়সহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভিডিও সাবমিট করার জন্য। অসংখ্য প্রতিযোগী সাড়া দিয়ে তাদের ভিডিও সাবমিট করেন এই শোতে অংশ নেন।

এই প্রতিযোগিতায় প্রথম ও দ্বিতীয় রানারআপ হিসেবে ঘোষণা করা হয় ঈশান দে ও সাদমান খানের নাম। সংগীত বিভাগে অংশ নেওয়া এই দুই প্রতিযোগীও পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন ক্রেস্ট এবং যথাক্রমে ১৫ ও ১০ লাখ টাকার চেক। চতুর্থ থেকে দশম স্থান অধিকারী প্রতিযোগীরা পেয়েছেন ক্রেস্ট ও তিন লাখ টাকার চেক। ২১তম থেকে ৩০তম এবং ১১তম থেকে ২০তম স্থান অধিকার করা প্রতিযোগীরা পেয়েছেন ক্রেস্ট এবং যথাক্রমে ১ ও ২ লাখ টাকার চেক।

চট্টগ্রামের মেয়ে ত্রয়ীসহ তার পরিবার এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে গত দেড় মাস ধরে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় অবস্থান করছিল।

গানে ত্রয়ীর হাতেখড়ি বড় ভাই মহৎ দেব আপনের কাছে। এরপর ওস্তাদ রিটন কুমার ও সুব্রত দাশ অনুজের কাছে গান শিখছে এখন। ছোটবেলা থেকেই চট্টগ্রামের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে শতাধিক পুরস্কার অর্জন করেছে ত্রয়ী। ২০১৯ সালে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহেও শাস্ত্রীয় সংগীতে সেরার পুরস্কার জিতেছে ত্রয়ী।

ত্রয়ী জানালো, পুরস্কার হিসেবে পাওয়া ২৫ লাখ টাকার সম্মানী দিয়ে তিনি হারমোনিয়াম-তবলার মতো কিছু ইনস্ট্রুমেন্ট কিনতে চায়। নিতে জায় সংগীতের ওপর একটি ডিগ্রিও। এই টাকা থেকে মাকে কিনে দিতে চায় ১৭ ভরি স্বর্ণও।

মাকে ১৭ ভরি স্বর্ণ কিনে দেওয়ার রহস্য জানাতে গিয়ে ত্রয়ী জানায়, ‘চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার পাশে আমার বাবার স্মৃতি স্টুডিও অ্যান্ড মিউজিক নামে একটি দোকান ছিল। দোতলায় স্টুডিও আর নিচতলায় ক্যাসেট ও সিডির দোকান। বাবা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওখানেই থাকতেন। মা আমাদের দুই ভাইবোনকে গানের তালিমে নিয়ে যেতেন। ২০০৭ সালের একদিন গানের ক্লাস থেকে বাসায় এসে দেখি, সব চুরি হয়ে গেছে। এর মধ্যে মায়ের ১৭ ভরি স্বর্ণ ছিল আর পরিষ্কার মনে আছে, চোরেরা আমার গান শেখার হারমোনিয়ামটা ভেঙে রেখে যায়। হারমোনিয়াম মেরামত করে গান শেখার কাজ এখনো চালিয়ে নেওয়া গেলেও স্বর্ণ আর পাওয়া যায়নি। তাই পুরস্কারের চেকের টাকা পেলে মায়ের সেই চুরি হওয়া স্বর্ণালংকার ফিরিয়ে দেব। আর নিজের জন্য নতুন একটা হারমোনিয়াম আর তবলা কিনব।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!