২৫ বছর পর দেশে ফিরে চট্টগ্রামের বৃদ্ধ প্রবাসী এখন পরিবার খুঁজে পাচ্ছেন না

২৫ বছর পর সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে আবুল কাশেম নামের এক রেমিট্যান্স যোদ্ধাকে এখন দিন কাটাতে হচ্ছে একটি এনজিওর আশ্রয়ে। বৃদ্ধ ওই রেমিট্যান্স যোদ্ধার পরিবারের কোনো খোঁজ মিলছে না। বৃদ্ধের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তার নাম আবুল কাশেম। তার বাবার নাম ফজল আহমেদ। মায়ের নাম সাবানা। তিনি কখনও ঠিকানা বলছেন চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বারৈয়ারহাট। আবার কখনো বলছেন চট্টগ্রামের রাউজানের পাহাড়তলী ইউনিয়নের শংকরহাট, রাউজান। তার ৬ মেয়ে ও ৩ ছেলে রয়েছে জানিয়ে বৃদ্ধ বলছেন, তার তিন ছেলের নাম মান্নান, নূর হাসান ও এনামুল হাসান।

ঢাকা বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এই বৃদ্ধ রেমিট্যান্স যোদ্ধা শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে সৌদি আরব থেকে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে দেশে ফিরেছেন। এরপর বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ওই কর্মীর পরিবারের সন্ধান ও তাকে নিরাপদে হস্তান্তর করার জন্য ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারে হস্তান্তর করে।

বৃদ্ধ এই রেমিট্যান্স যোদ্ধার পরিবারের সন্ধান জরুরি বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। কেউ কোনো তথ্য পেলে ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ম্যানেজার আল-আমিন নয়নের সঙ্গে ০১৭১২১৯৭৮৫৪ নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হয়েছে।

রোববার (১৫ জানুয়ারি) বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন এন্ড ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভ প্রোগ্রাম হেড শরিফুল হাসান ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধমে এসব তথ্য জানান।

সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা তাঁর পরিবারের সন্ধান পাইনি। তার কাছে কোন পাসপোর্ট ছিল না। কাজেই সঠিক কোন ঠিকানাও পাওয়া যায়নি। তিনি ট্রাভেল পাস নিয়ে এসেছেন। প্রায়ই এভাবে লোকজন আসে। আমাদের অবজারভেশন হলো, সম্ভবত তাঁর ডিমেনশিয়া আছে। উনার শারীরিক অবস্থাও কথা বলার মত না, আধো আধো ভাষায় কথা বলেন। প্রায় ২৫ বছর পর তিনি সম্ভবত বাংলাদেশে এসেছেন।’

আবুল কাশেমের তথ্য অনুযায়ী তাঁর নাম মোঃ আবুল কাশেম। পিতা ফজলে আহমেদ, মায়ের নাম সাবানা, স্ত্রীর নাম আমেনা। ঠিকানা হিসেবে কখনও বলছেন চট্টগ্রামের নয়াবাজার, কখনও হালিশহর, কখনও পাহাড়তলী ইউনিয়ন, রাউজান, চট্টগ্রাম। আবার মাঝে মধ্যে বলছেন, তার বাড়ি টেকনাফের নয়াবাজার। সেখানকার এজাহার মিয়ার নাম জানেন।

ব্র্যাকের মাইগ্রেশন এন্ড ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভ প্রোগ্রাম হেড শরিফুল হাসান লিখেছেন, ‘আমরা তাঁর বাড়ি কোথায় নিশ্চিত হতে না পারলেও ভাষা শুনে এটুকু বুঝতে পারছি তার বাড়ি চট্টগ্রাম অঞ্চলে।’

আবুল কাশেমের দাবি, তাঁর ৬ মেয়ে ও ৩ ছেলে রয়েছে। তার ৩ ছেলের নাম মান্নান, নূর হাসান, এনামুল হাসান। এর মধ্যে নূর হাসান নয়াবাজারে তরকারির দোকান চালায় বলে দাবি তাঁর। ছোট ছেলে এনামুল হাসান দুবাই থাকেন। মান্নান সৌদি থাকেন বলে দাবি তাঁর। ৮-১০ জন নাতি নাতনি নাকি উল্লেখ করে ওই বৃদ্ধ এও জানান, যেহেতু দীর্ঘ ২৫ বছর দেশে ছিলেন না, তাই সঠিকভাবে সব বলতে পারেন না।

শরিফুল হাসান লিখেছেন, ‘আমি তাঁর সাথে বেশ খানিকটা সময় কথা বলার চেষ্টা করেছি চট্টগ্রামের ভাষায়। এলোমেলোভাবে নানা তথ্য দিয়েছেন। আমার ধারণা তাঁর পরিবার চট্টগ্রাম বা টেকনাফে আছে। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী বিমানে ওঠার আগে পরিবারের সাথে কথা বলেছেন।‌’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!