২০ বছরের সংসার ভাঙল তালাকে, ২৫ দিনের সংসার শেষ মৃত্যুতে

সুখ ধরা দিল না রোকসানার জীবনে

পরিবারের পছন্দে ২০ বছর বয়সেই বিয়ে হয়েছিল রোকসানার। সেই ঘরে জন্ম নেয় পরপর ৪ সন্তান। কিন্তু স্বামী ও শশুড়বাড়ির নির্যাতনে ঘর ছাড়তে হয় রোকসানাকে। সংসার ছেড়ে স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে চলে আসেন বাবার বাড়ি। বিয়ে করেন আবার। মাত্র ২৫ দিনের সংসার। এ সংসারে এসেও পড়তে হয় যৌথ পরিবারে। এ নিয়ে মনোমালিন্য। ঝগড়াঝাটি। অবশেষে ৪ এপ্রিল (মঙ্গলবার) রাতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে রোকসানা -এমন অভিযোগ তার শ্বশুরবাড়ির।

নাম রোকসানা (৪০)। চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার ব্র্যাক অফিস সংলগ্ন গিয়াস উদ্দিন বাবুর স্ত্রী তিনি। রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। বুধবার (৫ মে) ময়নাতদন্তের জন্য রোকসানার লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।

রোকসানার মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন খুলশী থানার সাব ইনস্পেক্টর আবু হাসনাত মিশু। তিনি রোকসানার স্বামীর বরাত দিয়ে জানান, রোকসানার আগের সংসারে চার ছেলেমেয়ে রয়েছে। সেখানে প্রায় তার ২০ বছরের বেশি সংসার জীবন ছিল। স্বামীর সাথে বিরোধের জের ধরে গত বছর তাদের ডিভোর্স হয়।

২০/২৫ দিন আগে লালখান বাজার নিবাসী গিয়াস উদ্দিন বাবুর সাথে তার বিয়ে হয়। কিন্তু নতুন সংসারে এসে যৌথ পরিবারের রোকসানা থাকতে রাজি হননি। আগের বিয়ে নিয়ে শশুড়বাড়ির লোকজন তাকে খোঁটা দিত। আলাদা বাসা ভাড়া করে থাকতে চাইলে এ সংসারেও রোকসানার সাথে তার স্বামীর বিবাদ বাঁধে।

মঙ্গলবার ইফতারের আগে তার শশুড়বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের সাথে ঝগড়া হয়। ইফতার শেষ করে সে ঘর বন্ধ করে দেয়। সবাই ভাবে সে ঘুমিয়ে পড়েছে। পরে সাড়াশব্দ না পেয়ে তার স্বামী বাবু দরজায় কড়া নাড়লে ভিতর থেকে কোন জবাব আসে না। পরে দরজা ভেঙে গিয়ে রোকসানাকে গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান তার স্বামী।

এসআই মিশু বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি রোকসানার লাশ নীচে নামিয়ে রাখা হয়েছে। পরে আমরা সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে লাশ থানায় নিয়ে আসি। বুধবার সব কাগজপত্র ঠিক করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের পর বোঝা যাবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা। আমরা রোকসানার স্বামীকে প্রাথমিক জ্ঞিাসাবাদ করেছি।

আইএমই/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!