২০ কোটি টাকার বেদখলে যাওয়া জমি উদ্ধার করল আইআইইউসি

আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) বেদখলে থাকা ৮০ শতক জমি উদ্ধার করেছে কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এই জমির মূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা। দীর্ঘদিন আগে কেনা এই জমি এক ব্যক্তির দখলে ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়টির নতুন ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মোহাম্মদ নিজামুদ্দিন নদভী এই জমি উদ্ধারের উদ্যোগ নেন।

জানা গেছে, বহদ্দারহাট বাসস্ট্যান্ড ঘেঁষেই রয়েছে আইআইইউসির ফিমেল ক্যাম্পাস। ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী ফিমেল ক্যাম্পাস সীতাকুণ্ডে স্থানান্তর করা হয় কয়েক বছর আগে। গত মার্চে প্রফেসর ড. আবু রেজা নদভীর নেতৃত্বে নতুন ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হলে এই ক্যাম্পাসটি ট্রাস্ট অফিস হিসেবে ব্যবহার করা শুরু হয়৷ পাশাপাশি এই স্থানে এক হাজার আসনের একটি ছাত্রী হোস্টেল নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। এই ক্যাম্পাসের জন্য কেনা অন্যান্য জমির সাথে প্রায় ৮০ শতক জমি আইইউসি কর্তৃপক্ষ কিনলেও জমিগুলোতে স্থাপনা নির্মাণে বাধা দিয়ে আসছিল স্থানীয় কিছু ভূমিদস্যু। গত ১৯ আগস্ট এই জমি উদ্ধার করা হয়।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ওই জমিতে দুইটি স্কেভেটরের মাধ্যমে মাধ্যমে মাটি ভরাট করছে আইআইইউসি কর্তৃপক্ষ। দেওয়া হয়েছে সীমানাপ্রচীরও। খুঁটি দিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে সীমানাও।

বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) জমি উদ্ধারের সময় উপস্থিত ছিলেন আইআইউসির উপ উপাচার্য প্রফেসর ড. মসররুল মওলা, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য প্রফেসর ড. কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, ট্রেজারার প্রফেসর ড. হুমায়ুন কবির, ট্রান্সপোর্ট ও সিকিউরিটি ডিভিশনের চেয়ারম্যান ড. মহিউদ্দিন মাহি, অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক আফজাল আহমেদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।

আইইউসি’র পারচেজ এন্ড প্রকিউরমেন্ট ডিভিশনের (পিপিডি) সাবেক কর্মকর্তা ও বর্তমান এডিশনাল ডিরেক্টর (এক্সামিনেশন) মহীউদ্দীন হোছাইন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বহদ্দারহাটের ফিমেল ক্যাম্পাস এলাকায় ২০০৭ সাল থেকে জমি কেনা শুরু করে আইআইইউসি। স্থানীয় এক ব্যক্তি ২০১২ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনা ৮০ শতক জমিতে স্থাপনা নির্মাণ করতে গেলে ক্ষমতা দেখিয়ে বাধা দিতেন। এই ৮০ শতক জমি উদ্ধারে বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ডের মাননীয় চেয়ারম্যান ড. আবু রেজা নদভী স্যার উদ্যোগ নেন। আমরা জমিগুলো এখন বুঝে নিয়েছি। এসব জমির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওই ব্যক্তি এখান থেকে ৮ শতক জমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে বিক্রি করার পর একই জমি আরও একজনের কাছে বিক্রি করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব রাস্তাকে ওই জমির রাস্তা দেখিয়ে এই জমি বিক্রি করেন তিনি।’

আইআইইউসির ল্যান্ড সুপারভাইজার এজাহার মিয়া বলেন, ‘এই জমিগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনা জমি। এই জমিগুলোর নামজারিও হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে। হালসনসহ এই জমিগুলোর খাজনা আদায় রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকার পরও এক ব্যক্তি স্থাপনার নির্মাণে বাধা দিয়ে আসছিল। জমি বিক্রির নামে তিনি আইইউসি থেকে চেকের মাধ্যমে ২৯ লাখ টাকা নেন। কিন্তু তিনি জমিও বিক্রি করেননি, টাকাও ফেরত দেননি। তাই তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!