১৭০ টাকাতেই খুশি চট্টগ্রামের চা শ্রমিকরা, কাজে ফিরবে রোববার

দেশের চা শ্রমিকদের জন্য ১৭০ টাকা দৈনিক বেতন নির্ধারণ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে ১২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা বাড়িয়ে মালিকপক্ষ প্রাথমিকভাবে ১৪৫ টাকা বেতন নির্ধারণ করলে শ্রমিকদের একপক্ষ বিষয়টি মেনে নেয়। কিন্তু আরেক পক্ষ কাজ বন্ধ করে এ নিয়ে লাগাতার আন্দোলন করতে থাকে। তবে নতুন করে আবার বেতন বাড়ানোয় চট্টগ্রামের চা শ্রমিকরা খুশি হয়েছে। তারা রোববার (২৮ আগস্ট) থেকেই কাজে ফিরবে বলে জানান।

শনিবার (২৭ আগস্ট) চা শ্রমিকদের দৈনিক বেতন ১৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এ তথ্য জানান।

কর্ণফুলী চা বাগানের শ্রমিক প্রেম লাল মানব্রাজি বলেন, ‘আমাদের বেতন ৫০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এতে আমরা খুশি। আমরা কাল (রোববার) থেকে কাজে যোগ দেবো।’

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের চট্টগ্রাম ভ্যালির সভাপতি নিরঞ্জন নাথ মন্টু চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৭০ টাকা বেতন নির্ধারণ করেছেন। এতে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি ছাড়া চা শ্রমিকদের রুটি-রুজির বিষয়টি কেউই ভাবেন না। আমরা কাল থেকেই কাজে যোগ দেবো। এ বেতন চট্টগ্রামের সবাই মেনে নেবেন। এখানে আর আন্দোলন হবে না।’

শনিবার রাত বিকাল ৪টায় গণভবনে ১৩ জন চা বাগান মালিকের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মালিকদের প্রতিনিধিত্ব করেন টি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘শ্রমিকদের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৭০ টাকা দৈনিক মজুরি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ১৭০ টাকা দৈনিক মজুরি মেনে নিয়ে চা শ্রমিকদের রোববার থেকে কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’

ড. কায়কাউস বলেন, ‘দৈনিক ১৭০ টাকা সর্বনিম্ন মজুরির সঙ্গে বোনাস ও বার্ষিক ছুটি ভাতা আনুপাতিক হারে বাড়বে। এছাড়া অসুস্থতাজনিত ছুটির টাকা ও ভবিষ্যৎ তহবিলে নিয়োগকর্তার চাঁদাও বাড়বে আনুপাতিক হারে। সব মিলে দৈনিক প্রায় সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মজুরি পড়বে চা শ্রমিকদের।’

মুখ্য সচিব আরও জানান, ‘চা শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী। শিগগির ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা করবেন তিনি।’

এদিকে টানা ১৯ দিন ধরে দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে কর্মবিরতিসহ নানা কর্মসূচি পালন করে চা শ্রমিকরা। এরপর বারবার মালিকপক্ষ-শ্রমিক আর প্রশাসনের বৈঠক হলেও কোনো সমাধান হয়নি। ফলে এ আন্দোলন কর্মসুচি পালন করেছে চট্টগ্রামের বাগানসহ সারাদেশের ২৪১টি চা বাগানে শ্রমিকরা।

সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের চা শ্রমিকরা গত ৯ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত ২ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেন। ১৩ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেন তারা।

গত ১৯ আগস্ট রাতে মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করার বিষয়ে একটি চুক্তি হয়। সেটি প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শ্রমিকরা।

এএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!