১৫ হাজার জনবল নিয়োগে ব্যাকুল রেল তাকিয়ে আছে আইনের দিকে

দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এবার নিয়োগ দিতে চায় সংস্থাটি ১৫ হাজার জনবল। ইতোমধ্যে অনলাইনে আবেদনের প্রক্রিয়া চালুর লক্ষ্যে ডেভেলপ করা হয়েছে একটি সফটওয়ারও।

এদিকে কোন নিয়োগবিধি অনুযায়ী এ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে তা নিয়ে সংস্থাটিতে কাজ করছে সংশয়। এ বিষয়টির সুরাহা চেয়ে রেল মন্ত্রণালয় দ্বারস্থ হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ের।

২০২০ সালের নিয়োগবিধি অনুসরণ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনা করা যাবে কি-না সে বিষয়ে মতামত চেয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হয়েছে চিঠি। এই চিঠির জবাব মিললেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নামবে রেল মন্ত্রণালয়। রেল মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রে এসব বিষয় জানা গেছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, গত ১৫ ফ্রেব্রুয়ারি রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডিজি, এডিজিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এতে চলতি বছরের মার্চ থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়েও আলোচনা করা হয়। নিয়োগের ক্ষেত্রে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার বিষয়েও চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সংস্থাটি। এ বিষয়টি বাস্তবায়নে কেন্দ্র থেকে গঠন করা হবে উচ্চপর্যায়ের কমিটি।

জানা গেছে, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের পক্ষ থেকে এ নিয়োগ প্রক্রিয়ার আবেদন বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য রেল মন্ত্রনালয়ের সামনে উপস্থাপন করা হয়। এ সময় রেলমন্ত্রীসহ উপস্থিত কর্মকর্তারা ইতিবাচকভাবে বিষয়টি গ্রহণ করেন। এ সময় অনলাইনে আবেদন মনিটরসহ নিয়োগ সংক্রান্ত বিস্তারিত বিষয় মনিটরিং করতে একটি কমিটি প্রস্তাব করা হয়।

এর আগে ২০১৯ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ১৯৮৫ সালের নিয়োগবিধি অবৈধ ঘোষণা করলে বন্ধ হয়ে যায় রেলওয়ের নিয়োগ কার্যক্রম।

এ বিষয়ে রেলওয়ের বিভাগীয় সহকারী সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক (পূর্ব) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘মার্চে লোকবল নিয়োগের প্রক্রিয়া পুরোপুরি চালু করতে চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ।’

রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সর্দার শাহাদাৎ আলী বলেন, ‘মার্চেই জনবল নিয়োগের কাজ শুরু হতে পারে। পদোন্নতি ও আগের ঝুলে থাকা নিয়োগ বিষয়েও এবার সিদ্ধান্ত হবে। আইন মন্ত্রনালয়ে মতামত চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আইনী জটিলতা না থাকলে দ্রুত নিয়োগ শুরু হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সর্বপ্রথম নিয়োগ তালিকায় থাকবে এলএম, এএলএম, স্টেশন মাস্টার ও গার্ড। ইতোমধ্যে অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া চালু করতে সফটয়ার ডেভেলপ করা হয়েছে।’

রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার বলেন, ‘জনবল নিয়োগের বিষয়টি মার্চের দিকে দৃশ্যমান হবে।’

জানা গেছে, ১৯৮৫ সালের নিয়োগবিধি অনুসারে শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণীর কথা বলা হলেও ২০২০ সালের নিয়োগবিধিতে যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয় দশম শ্রেণী। এর আগে ২০১৯ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নিয়োগবিধি অবৈধ ঘোষণা করায় রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের ১২ ক্যাটাগরির ৬৫২ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে যায়। এদের মধ্যে রয়েছে পোর্টার, গেইট কিপার, টিএক্সআর, চেকার, স্টোর মুন্সি, টাইম কিপার, সাব ইন্সপেক্টর, টাইম কিপার।

পূর্বাঞ্চলের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আটকে যায় এসএম, এএলএম (গ্রেড-২), রিভেটার (গ্রেড-২), ফুয়েল চেকার, টিকেট ইস্যুকারী, সহকারী মাওলানা, ট্রেড এপেন্টিস, আয়া, প্রহরী, চৌকিদারসহ বেশ কিছু পদ।

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!