১৫ হাজারেই চট্টগ্রাম, ভাসানচরের রোহিঙ্গারা পালাচ্ছে নোয়াখালীর মাঝিদের মদদে

ভাসানচর থেকে রোহিঙ্গারা পালিয়ে যাচ্ছেন নোয়াখালীর মাঝিদের সহযোগিতায়। ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে ভাসানচর থেকে নোয়াখালী হয়ে চট্টগ্রাম পৌঁছে দেওয়ার জন্য স্থানীয় মাঝিদের সাথে এমন চুক্তি করেন তারা। সন্দ্বীপে আটক হওয়া ১৪ রোহিঙ্গার সাথে আলাপ করে এমন তথ্যই মিলেছে।

রোববার (৩০ জুন) ভোরে সন্দ্বীপের মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নের চৌধুরী বাজার ১ নং ওয়ার্ডের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন নদীর কূল থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটক হওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে মিনহা ইমতিয়াজ নামে একজন চটগ্রাম প্রতিদিনের সন্দ্বীপ প্রতিনিধিকে বলেন, পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের থেকে বিচ্ছিন্ন থাকায় তারা ভাসানচর ছেড়ে কক্সবাজার যাওয়ার চেষ্টা করেন। এজন্য স্থানীয় এক জেলের সাথে কথা বললে ওই জেলে তাদের কাছে ৩ হাজার টাকা চান। জনপ্রতি হাজার টাকার বিনিময়ে ভাসানচর থেকে তাদের নোয়াখালী নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে তাদের চট্টগ্রাম পৌঁছানোর কথা ছিলোই মাঝির। তবে তা না করে মাঝি তাদের সন্দ্বীপের কূলে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়।

মিনহা ইমতিয়াজ জানান, মাঝি নামিয়ে দেওয়ার আগে তাদের মোবাইল থেকে মাঝির নম্বরটাও ডিলেট করে দেন। তবে বিকাশের মাধ্যমে মাঝিকে টাকা দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, বিকাশ একাউন্টের লেনদেন চেক করলে মাঝির নম্বর পাওয়া যাবে।

টাকার বিনিময়ে দালালচক্র রোহিঙ্গাদের ভাসানচর থেকে বের হতে সাহায্য করছে— এমন আলাপ গত এক মাস ধরেই সন্দ্বীপে বেশ চাউর। গত এক মাসে ৩ দফায় ১৫ জন রোহিঙ্গাকে সন্দ্বীপের উপকূলীয় এলাকা থেকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা। ফলে সেখানে রোহিঙ্গাদের উপদ্রব নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে এক ধরনের আতংকও সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, এর মধ্যে মাইটভাঙ্গার এক জেলের একটি ফোনালাপের রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পরে। যেখানে সন্দ্বীপ থেকে গিয়ে স্থানীয় এক ইউপি মেম্বারের ছেলে সহ রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র কেনার বিষয়েও কথা বলতে শোনা যায় ওই মাঝিকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাইটভাঙ্গা চৌধুরীবাজারের একজন স্থানীয় একজন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘সন্দ্বীপ থেকে যারা মাছ ধরতে নদীতে যায় সেই মাঝিরা বলেছে রোহিঙ্গারাই তাদের টাকার বিনিময়ে পার করে দেয়ার প্রস্তাব দেয়। এদের সাথে রোহিঙ্গাদের যোগাযোগ আছে এটা প্রশাসন অনেক আগে থেকেই জানে। কিন্তু এই বিষয়ে প্রশাসনের কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি।’

এই বিষয়ে জানতে চাইলে সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বশির আহমেদ খান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এই ১৪ জন রোহিঙ্গা যাকে বিকাশে টাকা দিয়েছে বলে জানিয়েছে সেই নম্বরটা আমরা পেয়েছি। আমরা এই বিষয়ে তদন্ত করছি।’

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!