১৫ বছর পর স্ত্রী জানলেন বিয়েটাই ছিল ভুয়া, চট্টগ্রামের মদ মহালের মালিকের কাণ্ড

কাবিননামা চাইতেই গুম করে ফেলার হুমকি

১৫ বছর ধরে সংসার করার পর মেয়েটি জানলেন, তার বিয়ের কাবিনই ভুয়া। শুধু তাই নয়, প্রায় দেড়যুগ কাটানোর পর সেই মেয়েটি জানলেন তার স্বামীর আছে আরও একটি স্ত্রী। ‘স্বামী’র হাতেই প্রতারিত মেয়েটি যখন বিয়ের কাবিননামা দাবি করলেন, তখন শুরু হল নির্যাতন। বাড়াবাড়ি করলে তাকে গুম করে ফেলারও হুমকি দেন কথিত ওই স্বামী।

এমন অভিনব প্রতারণার শিকার হয়ে গত ৮ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ থানায় সাধারণ ডায়রি করেন লিজা নামের ৩১ বছর বয়সী ওই নারী। স্বামীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে সম্প্রতি লিজা তার বোনের বাসায় চলে যান। এরপর তার ভরণপোষণের টাকা দেওয়াও বন্ধ করে দেন কথিত স্বামী জাহেদ। এর আগে লিজার নামে থাকা ফ্ল্যাটের কাগজপত্রও চাপ দিয়ে নিজের নামে করে নেন তিনি।

অভিযোগে জানা যায়, চট্টগ্রামের দেওয়ানহাটের মদের মহাল মালিক জাহেদ আলী শাহজাদা। মদ বেচে কোটিপতি বনে যাওয়া জাহেদ আলী নামে-বেনামে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। স্ত্রী থাকার পরও লিজাকে ‘রক্ষিতা’ হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন তিনি। অথচ তাকে স্ত্রী হিসেবেই সংসার পেতেছিলেন জাহেদ—এমনটাই জানতেন লিজাসহ পরিচিতজনরা।

জানা গেছে, বিভিন্ন ইস্যুতে লিজাকে নির্যাতন শুরু করলে তিনি বাধ্য হয়ে বোনের বাসায় চলে যান। জিডিতে লিজা অভিযোগ করেন, তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘ ১৫ বছর জাহেদ ভোগ করে আসছেন। বিয়ের নামে বিভিন্ন কাগজপত্রে স্বাক্ষর নেন।

তিনি বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রে স্বামী হিসেবে তার নামই (জাহেদ) লেখা আছে। সম্প্রতি বিয়ের কাবিন চাইলে জাহেদ তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। তাকে (লিজা) স্ত্রী উল্লেখ করে তার নামে বিভিন্ন জায়গা ও ফ্লাট কেনার পর কৌশল হিসেবে তার কাছ থেকে ‘পাওয়ার’ নিয়ে রাখে জাহেদ।

লিজার অভিযোগ, তাকে পাগল সাজিয়ে গৃহবন্দি করার চক্রান্ত করছেন জাহেদ। ৩১ ডিসেম্বর তিনি তার বড় বোন জুলেখার বাসায় আশ্রয় নেন। মামলা করলে জাহেদ আলী তাকে গুম করারও হুমকি দেন। এ সম্পর্কিত একটি ভয়েস রেকর্ড চট্টগ্রাম প্রতিদিনের কাছে সংরক্ষিত আছে।

আকবরশাহ থানার সেকেন্ড অফিসার নুরুল ইসলাম জানান, দুই পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় তারা আসবেন।

জেএস/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!