১২০ টাকায় বাগানে দিনভর খাটেন চা শ্রমিকরা, তুলতে হয় ২৫ কেজি পাতা

চা শ্রমিকদের মজুরি ১২০ টাকা। এই ১২০ টাকার বিনিময়ে ২৫ কেজি কাচা পাতা তুলে দিতে হয় প্রত্যেক শ্রমিককে। এর বাইরে প্রতি কেজি ৪ টাকা করে পান শ্রমিকরা।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই টাকায় চলে না শ্রমিকদের সংসার। তাই এবার শ্রমিকদের দাবি, তাদের মুল বেতন ৩০০ টাকা করা হোক।

১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করছেন চা শ্রমিকরা।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে গত ৯ আগস্ট (মঙ্গলবার) সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এ কর্মসুচি পালন করছেন চট্টগ্রামের ২৪টি বাগানসহ সারাদেশের ২৪১টি চা বাগান।

তারই ধারাবাহিকতায় গত ১২ আগস্ট চট্টগ্রাম ফটিকছড়ি কৈয়াছড়া, কর্ণফুলী চা বাগানের লেলাং ডিভিশনে কর্মবিরতির পাশাপাশি বেতন বাড়ার দাবিতে আন্দোলন ও র‍্যালী করেছে ওই এলাকার চা শ্রমিকরা।

তাদের দাবি, প্রতিনিয়ত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলেছে। অথচ বাংলাদেশের চা শ্রমিককরা ১২০ টাকা দৈনিক মজুরিতে কাজ করছেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে শ্রমিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদ নেতৃবৃন্দের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ সময় শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়।

কিন্তু চুক্তির ১৯ মাস অতিবাহিত হলেও সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন করেনি মালিক পক্ষ।

লেলাং ডিবিশিনের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি অপু মুন্ডা বলেন, ‘বাংলাদেশে চা শ্রমিকদের একটা বিশাল অংশ রয়েছে। এ দেশের ভোটার হয়েও তারা অবহেলিত। মৌলিক অধিকারও তাদের ভাগ্যে জুটে না। এছাড়া রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে ১২০ টাকা মজুরি পায়। এভাবে আর আমরা চলতে পারছি না। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করানোর সাধ্য হচ্ছেনা। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের যেভাবে দাম বেড়েছে আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।’

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের চট্টগ্রাম ভ্যালীর সভাপতি নিরঞ্জন নাথ মন্টু চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘৩০০ টাকা মজুরী আমাদের ন্যায্য দাবি। এটি না দিলে আমাদের চা বাগানে কাজ করা সম্ভব হবে না। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির এ সময়ে আমাদের সংসারই চলে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি চলবে প্রতিদিন।’

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!