১১ বাঁধে রক্ষা পাচ্ছে হালদা, খালপাড়ে রাতভর ইউএনও-গ্রামবাসী একাকার

একে একে দেওয়া হয়ে গেছে ১১টি বাঁধ। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা, সন্ধ্যার পর রাত। ঘড়ির কাঁটায় রাত দেড়টা। সারা গায়ে ছোপ ছোপ লেগে আছে ফার্নেস অয়েল। কেউ চামচ দিয়ে, কেউ কোন রকম হাত ধুয়ে খাচ্ছেন রাতের খাবার। তাও খালপাড়ে বসে। তারা সংখ্যায় ২৫ জন, সঙ্গে আছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও। রাত জাগছেন শত শত গ্রামবাসীও।

হাটহাজারীর মরাছড়া খালপাড়ে ৩০ এপ্রিলের এই মধ্যরাতেও অবিকল একই দৃশ্য। সোমবার বিকেলে (২৯ এপ্রিল) ফার্নেস অয়েলবাহী ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়ে তিনটি ওয়াগন কালভার্ট ভেঙে খালে পড়ে যায়। প্রতিটি ওয়াগনে ২৬ হাজার লিটার ফার্নেস অয়েল ছিল। ফার্নেস অয়েলগুলো যাচ্ছিল হাটহাজারী ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রে।

এবারও আশঙ্কা করা হচ্ছিল ফার্নেল অয়েল ছড়িয়ে গিয়ে হালদায় দূষণ ঘটাবে কিনা। কিন্তু হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিনের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে ভয়াবহ দূষণ থেকে রক্ষা পাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী। ফার্নেস অয়েলবাহী ওয়াগন কালভার্ট ভেঙ্গে খালে পড়লে ছড়িয়ে পড়ে ফার্নেস ওয়েল। তিনি তাৎক্ষণিক লোকজন নিয়ে খালে বাঁধ দিয়ে ফার্নেস অয়েল আটকানোর চেষ্টা করেন।

রেল কর্মকর্তাদের বরাতে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, দুর্ঘটনার পর রেলওয়ের কর্মকর্তারা দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা জানিয়েছেন, প্রতিটি ওয়াগনে ২৬ হাজার লিটার ফার্নেস অয়েল ছিল। দুর্ঘটনাকবলিত তিনটি ওয়াগনের একটি লিক হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাত দেড়টা পর্যন্ত প্রায় সাত হাজার লিটার তেল পৌরসভার টিম ও স্থানীয় এলাকাবাসী মিলে খাল থেকে সরাতে পেরেছেন বলে তিনি জানান।

তিনি আরো জানান, দুর্ঘটনাস্থলের কাছে তিনটি বাঁধ দেওয়া হয়েছে। ভাটির দিকে দেওয়া হয়েছে আরো আটটি বাঁধ। মোট ১১টি বাঁধ দিয়ে হালদা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে আটকে দেওয়া হয়েছে ফার্নেস অয়েল। ফার্নেস অয়েল ১১টি বাঁধের মাঝে দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রথম চারটি বাঁধ অতিক্রম করতে পারেনি।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!