১১ দিন পর শনাক্ত নামল দুইশর নিচে, চট্টগ্রামে নমুনা পরীক্ষাও কমে অর্ধেক

গত ২৮ জুন থেকে চট্টগ্রামে করোনা শনাক্ত নামেনি দুইশর নিচে। প্রায়ই দিনেই শনাক্তের সংখ্যা ছিল তিনশর আশেপাশে। অবশ্য এই কদিনই গড়ে প্রায় ১৩শ করে নমুনা পরীক্ষা হয়ে আসছিল চট্টগ্রামে। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় হঠাৎ করে করোনা শনাক্ত নেমে গেলে ১৬২-তে। অথচ আগেরদিনও শনাক্ত হয়েছিল ২৫৯ জন। কম শনাক্তের কারণ কম নমুনা পরীক্ষা কিনা সেটি জানা যায়নি সিভিল সার্জনের দেয়া তথ্যে। গত ২৪ ঘন্টায় ৭টি ল্যাব মিলে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে মাত্র ৭৮১টি। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১২৬৫ জনের, বুধবার নমুনা পরীক্ষা হয় ১৪৭১ জনের, মঙ্গলবার পরীক্ষা হয় ১৩৬০ জনের নমুনা। নমুনার জট থাকার পরও কেন নমুনা পরীক্ষা কমে গেল তাও স্পষ্ট জানাতে পারেনি সিভিল সার্জন কার্যালয়।

গত ২৪ ঘণ্টায় নতুনভাবে আক্রান্ত ১৬২ জনের মধ্যে নগরের ১১৭ ও উপজেলার ৪৫ জন। এ নিয়ে চট্টগ্রামে ১১ হাজার ১৯৩ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের জীবাণু পাওয়া গেছে। যাদের মধ্যে ৭ হাজার ৭৯৫ জন নগরের ও ৩ হাজার ৩৯৮ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। একই সময়ে করোনায় চট্টগ্রাম নগরে দুই জন ও উপজেলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন মোট ২১৩ জন, যাদের মধ্যে ১৫২ জন নগরের ও ৬১ জন উপজেলার বাসিন্দা। ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন আরও ১৬ জন। ফলে এখন পর্যন্ত একহাজার ৩৪০ জন রোগী করোনাজয় করলেন।

শুক্রবার (১০ জুলাই) সকালে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, চট্টগ্রামের সরকারি চারটি ও বেসরকারি দুটি ল্যাব এবং কক্সবাজারের একটি ল্যাব মিলিয়ে মোট ৭৮১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় আরও ১৬২ জনের দেহে করোনাভাইরাস পজিটিভ পাওয়া গেছে। নতুন শনাক্তদের মধ্যে নগরের ১১৭ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার ৪৫ জন। একইসাথে চট্টগ্রামে সুস্থ হয়েছেন আরও ১৬ জন এবং মারা গেছেন তিন জন, যাদের দুজন নগরের ও এক জন উপজেলার।

গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের প্রধান করোনা পরীক্ষাগার ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি)-তে দিনের সর্বোচ্চ ১৮১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় ১০০ কম। পরীক্ষায় ২৮ জনের দেহে করোনা পজিটিভ মিলেছে। যাদের মধ্যে ১২ জন নগরের ও ১৬ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ইউনিভার্সিটি (সিভাসু) ল্যাবে আগেরদিনের চেয়ে অর্ধেকেরও কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। সেখানে মাত্র ৭৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে করোনাভাইরাসের জীবাণু পাওয়া গেছে ১৬ জনের শরীরে। যাদের ১২ জন নগরের ও ৪ জন উপজেলার বাসিন্দা।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে এদিনও অন্যান্যদিনের মতো সর্বাধিক নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি। সেখানে ২৪ ঘণ্টায় আগেরদিনের চেয়ে প্রায় একশ কম নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ফলে ১৩২টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৫ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়, যাদের মধ্যে ২৩ জন নগরের ও ২ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। এর আগে টানা দুদিন চট্টগ্রামের প্রথম ল্যাব হিসেবে একদিনে পাঁচশর উপরে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে আগেরদিনের চেয়ে কিছুটা কম নমুনা পরীক্ষা করা হয়। মোট ১৬২ জনের নমুনা পরীক্ষা করিয়ে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন দিনের সর্বোচ্চ ৩৩ জন। যাদের ১৬ জন নগরের ও ১৭ জন বিভিন্ন উপজেলার।

অন্যদিকে, বেসরকারি ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে ১৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করিয়ে করোনা পজিটিভ পাওয়া যায় ৩১ জনের। যাদের ২৮ জনই নগরের এবং বাকি ৩ জন উপজেলার বাসিন্দা।

গত ২৪ ঘণ্টায় শেভরণ ল্যাবে আগেরদিনের চেয়ে অর্ধেক ৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় ২৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়। আক্রান্তদের মধ্যে ২৬ জন নগরের ও ৩ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।

এদিন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের একজনের নমুনা পরীক্ষা করানো হলেও সেটি নেগেটিভ আসে।

উপজেলা পর্যায়ে নতুনভাবে করোনা শনাক্ত ৪৫ জনের মধ্যে আবারও সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গেছে হাটহাজারী উপজেলায়। সেখানে ১৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়। টানা চতুর্থ দিনের মতো দ্বিতীয় সর্বোচ্চ করোনা রোগীর খোঁজ মেলে রাউজানে, ৭ জন। এছাড়া মিরসরাইয়ে ৬ জন, বাঁশখালী ও ফটিকছড়িতে ৪ জন করে, সীতাকুণ্ডে ৩ জন, রাঙ্গুনিয়া ও সন্দ্বীপে ২ জন করে এবং আনোয়ারা, চন্দনাইশ ও পটিয়ায় ১ জন করে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!