১০ হাজার টাকার লোভে নিজের সন্তান বিক্রি করল মা

২৬ এপ্রিল সকালের দিকে চকরিয়ার একটি স্থানীয় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক ফুটফুটে শিশু সন্তান প্রসব করেন জান্নাত আরা বেগম। জন্মের পর মাত্র ১০ হাজার টাকা ও একটি থ্রি-পিসের লোভে ওই শিশু সন্তান বিক্রি করে দেন মা। পরে তার সদ্য ভুমিষ্ট শিশু সন্তানটি বাড়ি থেকে চুরি হয়েছে অভিনয় শুরু করে মা জান্নাত আরা বেগম। কিন্তু টাকা দেনা-পাওনার হিসেবে গড়মিল হওয়ায় পুলিশের শরণাপন্ন হলে বেরিয়ে আসে সন্তান বিক্রির রহস্য। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজার চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট কাটাখালী গ্রামে।

জানা যায়, ডুলাহাজারা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৬ এপ্রিল রাতে মালুমঘাট কাটাখালী গ্রামের আবদুল খালেকের স্ত্রী জান্নাত আরা বেগম (৩৫) শিশু সন্তান প্রসব করেন। ওই দিন রাতেই স্থানীয় শাহাব উদ্দিনের স্ত্রী মিনু আরার মাধ্যমে ১০হাজার টাকা দিয়ে খুটাখালীর এক ব্যক্তিকে নবজাতককে বিক্রি করে দেয় মা জান্নাত আরা বেগম।

৩০ এপ্রিল (শুক্রবার) রাতে জান্নাত আরা বাদি হয়ে তার সদ্য ভুমিষ্ট সন্তান হারিয়ে গিয়েছে দাবি করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে শিশু সন্তানকে উদ্ধারে অভিযানে নামেন পুলিশের একাধিক টিম। অল্প সময়ের মধ্যেই উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে। এরপর তদন্তে বেরিয়ে আসে মূল ঘটনা।

ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, ‘শিশুটিকে চুরি করা হয়নি। ১০ হাজার টাকা ও একটি থ্রি-পিসের লোভে শিশুটিকে বিক্রি করে দিয়েছে মা জান্নাত আরা। পার্শ্ববর্তী এক মহিলা মিনু আরার মাধ্যমে জান্নাত আরা শিশুটিকে বিক্রি করে। বিক্রির পর জান্নাত জানতে পারে মিনু আরা ৬০ হাজার টাকা দিয়ে তার শিশুকে বিক্রি করে তাকে ১০ হাজার টাকা ধরিয়ে দেয়।

এনিয়ে দুইজনের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। পরে মা জান্নাত আরা শিশু চুরির নাটক সাজিয়ে মিনু আরার বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর পুলিশি তদন্তে প্রকৃত ঘটনাটি উদঘাটিত হয়।

চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বলেন, জান্নাত আরা বেগম তার সদ্য ভুমিষ্ট শিশু সন্তান চুরির অভিযোগে মিনু আরা নামের এক মহিলাকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি এজাহার দেয়। এজাহার দায়েরের পর শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযানে নামে পুলিশ। অভিযুক্ত মিনুর সহযোগিতায় শিশুটিকে পাশ্ববর্তী খুটাখালী এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানতে পারে। পরে খুটাখালী থেকে শিশুটিকে উদ্ধারের পর স্থানীয় চেয়ারম্যানের জিন্মায় দেয়া হয়েছে।

কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!