১০টি ভেলা নিয়ে ফের ৬শতাধিক রোহিঙ্গার আগমন

১০টি ভেলা নিয়ে ফের ৬শতাধিক রোহিঙ্গার আগমন 1গিয়াস উদ্দিন ভুলু,টেকনাফ : মিয়ানমার রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গাদের আগমনের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদী ও সাগর পথে নৌকা চলাচলে প্রশাসনের সদস্যরা কঠোর নজরদারী বৃদ্ধি করাই। রোহিঙ্গারা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে চলে আসার জন্য ভিন্ন,ভিন্ন,কৌশল ব্যবহার করছে। তারা এই মানবিক বাংলাদেশে চলে আসার জন্য, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁতার কেটে, ভেলায় চড়ে নদীপথে অনুপ্রবেশ অব্যাহত রেখেছে। প্রতিদিন রোহিঙ্গারা নিজের জীবন বাজি রেখে ছোট ছোট শিশু কোলে নিয়ে ভেলায় চড়ে নদীপথ অতিক্রম করছে।সেই ধারাবাহিকতায় গত কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রায় ২ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে। সেই সুত্র ধরে ১২ নভেম্বর রবিবার আরো ১০টি ভেলা নিয়ে প্রায় ৬শতাধিক রোহিঙ্গা এপারে প্রবেশ করেছে। সাবরাং ইউনিয়নের নয়াপাড়া সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে সকালে ২ টি,বিকালে আরো ৮টিসহ মোট ১০টি ভেলা নয়াপাড়া উপকুলে পৌছায়। এর মধ্যে অনেক রোহিঙ্গা নারী ও শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদেরকে উদ্ধার মানবিক বাংলাদেশের বার্ডার গার্ড (বিজিবি) সদস্যরা সাবরাং হারিয়াখালীর অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেয়।
এদিকে এপারে আসা রোহিঙ্গাদের তথ্য সুত্রে জানা যায়,রাখাইনের মংডুর দংখালীর বালুচর সীমান্ত হতে শনিবার দিবাগত রাত ও রবিবার সকাল ৭ টার দিকে জোয়ারের স্রোতে ভেলা ভাসিয়ে দিয়ে নাফ নদ অতিক্রম করে তারা এপারে পৌঁছে।
তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে জানা যায়, মংডুর দংখালীর বালুচর সীমান্ত এলাকায় গত দুই মাস ধরে এপারে আসার জন্য প্রায় ২০ হাজার রোহিঙ্গা জড়ো এখনো জড়ো হয়ে আছে। তারা বাংলাদেশী কোন নৌকা বা ট্রলার না যাওয়ায় আসতে না পেরে সেখানে আটকা পড়ে আছে। তারা আরো জানায় ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরে এপারে চলে আসার জন্য নিজেরাই টাকা খরচ করে ভেলা বানিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নাফ নদী পাড়ি দিতে প্রস্তুত হয়েছি। খবর নিয়ে জানতে পারি এর আগেও ভেলায় চড়ে অনেক রোহিঙ্গা এপারে আসতে সক্ষম হয়েছে। এই সমস্ত রোহিঙ্গরা হচ্ছে রাখাইনের পূর্বাঞ্চলীয় বুছিডং ও রাসিডং থানার ছেগাম পাড়া, ধানী পাড়া, পুঁইমালি, ওয়ারিঅং, পুুঁইয়াংদং এলাকার বাসিন্দা।
সরজমিনে নয়াপাড়া নাফ নদীর বেড়ীবাঁধে গিয়ে  দেখা যায়, শত শত রোহিঙ্গাদের আগমনে ভরে গেছে টেকনাফের নাফনদী ও বেঁড়িবাধ।
এর হঠাৎ চোখে পড়ে হামিদা বেগম নামে এক অসুস্থ নারী বেড়ী বাঁধে পড়ে আছে। পাশে শুয়ে আছে তার চার সন্তান। তার স্বামী সেলিম জানান,গত তিনদিন যাবৎ তার স্ত্রী ডায়রিয়া ও জ্বরে আক্রান্ত। গত এক মাস পূর্বে সে গ্রাম থেকে বাহির হয়ে তিন দিন ঢালাপথ অতিক্রম করে গত এক মাস যাবৎ ধংখালী বালুচরে পরিবার নিয়ে নৌকার অপেক্ষায় ছিল।।
কান্না জড়িত কন্ঠে সে আরো বলেন, নিজেদের লাগানো ধান কাটতে দিচ্ছেনা। পালিত গরু, হাস, মুরগী, ছাগল গুলো ধরে নিয়ে যাচ্ছে রাখাইন সেনা ও মগেরা। সেই অত্যাচার জুলুম ও নির্যাতন সইতে না পেরে নিজের জন্মভুমি পেলে আমরা এপারে পাড়ি জমাচ্ছি।।
এদিকে রবিবার সকালে সাগর পথে টেকনাফের মিঠাপানির ছড়া, হাবিরছড়া পয়েন্ট দিয়ে দালালদের সহযোগীতায়  প্রায় দুই শতাধিক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। খবর পাওয়া গেছে দালালরা তাদের স্বর্নলংকার,নগদ টাকাসহ সব কিছু লুট করে নিয়ে গেছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!