হিমবাহ গললেই সাগরে তলিয়ে যাবে চট্টগ্রাম, ৬৯% এলাকা এখনই ডুবছে জোয়ারে

ভুতুড়ে এলাকা আগ্রাবাদ আবাসিক, উচ্চতায় সাগরের সমানে যাচ্ছে শুলকবহর

সাবেক মন্ত্রী এল কে সিদ্দিকীর ডুপ্লেক্স দুটি বাড়ি ছিল চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদের সিডিএ আবাসিক এলাকার ২০ নম্বর সড়কে। সেই ১৯৭৭ সালে ৩ হাজার ৩৮০ বর্গমিটার জমিতে গড়ে তোলা বাড়ি দুটিতে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে বসবাস করে আসছিলেন সীতাকুণ্ডের এই সাবেক সাংসদের পরিবার। ১৯৯২ সালে হঠাৎ তারা দেখতে পান, জোয়ারের পানিতে বাড়ির নিচতলাটা ডুবে থাকছে। সেই দশা একসময় হয়ে দাঁড়ায় নিয়মিত ঘটনা। অবস্থা শেষপর্যন্ত এমন পর্যায়ে পৌঁছালো, পানিবন্দি হয়ে থাকা সেই বাড়িই ছাড়তে হয় তাদের। নতুন বসতি হল ঢাকায়। মাঝেমধ্যে আগ্রাবাদে যাওয়া-আসা তবু থাকলেও ২০১৮ সালে এসে জোয়ারের পানির বিড়ম্বনা এমনই গুরুতর রূপ নেয় যে, বাড়ি দুটি পুরোপুরি ছাড়তে বাধ্য হয় এল কে সিদ্দিকীর পরিবার। সেখানে একই অবস্থা বিশিষ্ট নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি জেরিনা হোসেনেরও। ৬৯১ নম্বর প্লটে নিজের বাড়িটি ছাড়তে হয়েছে তাকে।

এ তো শুধু দুটি বাড়ির কথা। প্রায় একই অবস্থা সেখানকার আরও প্রায় দেড় হাজার বাড়ির মালিকের। বছরপাঁচেক আগেও যে সিডিএ আবাসিক ছিল বিত্তশালী মানুষের আবাসিক এলাকা, সেই এলাকা এখন অনেকটাই পরিত্যক্ত ভুতুড়ে এলাকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেখানে এখনও যারা নিজেদের বাড়িগুলো আঁকড়ে আছেন, আর যারা কাজের সূত্রে বিস্ময়কর কম মূল্যে ভাড়াটে হিসেবে থাকছেন, খাবার-পানি-পোশাকের মতোই তাদের জীবনযাপনের জরুরি কাজটি হল— প্রতিদিনের জোয়ারের সময়টুকু জানা। ঘরে ঘরেই সেখানে রয়েছে পঞ্জিকা অনুসারে জোয়ারের পূর্বাভাসের ক্যালেন্ডার।

জোয়ারে পানিতে এমন দুর্বিসহ জীবনযাপনের এই দৃশ্য শুধু আগ্রাবাদের সিডিএ আবাসিকেই নয়, চট্টগ্রামের বিশাল একটি এলাকা এখন প্রতিদিনই নিয়ম করে চলে যাচ্ছে কর্ণফুলী নদী থেকে ধেয়ে আসা জোয়ারের পানির নিচে। এসব এলাকার অনেকগুলোই দিনে কমপক্ষে ছয় ঘণ্টা জোয়ারের পানিতে বন্দি হয়ে থাকছে। এভাবে প্রতিদিন দুবার বঙ্গোপসাগর থেকে কর্ণফুলী হয়ে আসা জোয়ারের স্রোতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জীবন কাটাচ্ছে মানুষ। জোয়ারের সময় পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে চান্দগাঁও, মোহরা, চকবাজার ও পতেঙ্গা এলাকা। পূর্ব বাকলিয়া, দক্ষিণ বাকলিয়া, হালিশহর, শুলকবহর, সবুজবাগ আবাসিক এলাকা, মুরাদপুর এলাকা প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে জোয়ারের পানিতে। আর এই প্রথমবারের মতো গত ২১ ও ২২ আগস্ট দেখা গেল, জোয়ারের পানি এসে ডুবিয়ে দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন জেটিও।

চট্টগ্রামের অনেক জায়গা দিনে কমপক্ষে ছয়ঘণ্টা জোয়ারের পানির নিচে তলিয়ে থাকে। ছবি: দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।
চট্টগ্রামের অনেক জায়গা দিনে কমপক্ষে ছয়ঘণ্টা জোয়ারের পানির নিচে তলিয়ে থাকে। ছবি: দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

নাসার গবেষণায় চট্টগ্রাম নগরী

জোয়ারের পানির উচ্চতা বাড়ার কারণে প্রায় ৬০ লাখ মানুষের ঠিকানা চট্টগ্রাম মহানগরী এখন রয়েছে চরম ঝুঁকিতে। তিন বছর আগে, ২০১৭ সালেই যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এক গবেষণার সূত্রে জানিয়ে দিয়েছিল, আগামী এক শতাব্দী জুড়ে হিমবাহে বরফের আস্তরণ গলে গিয়ে সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাবে ১৪ দশমিক ১ মিটার। আর এতে পুরোপুরি পানির নিচে চলে যাবে চট্টগ্রাম। সেই গবেষণার অন্যতম পরিচালক নাসার বিজ্ঞানী সুরেন্দ্র অধিকারীর ভাষায়, ‘রেহাই পাবে না বাংলাদেশের বন্দর শহর চট্টগ্রামও। বিশ্বের বাকি ২৯২টি শহরের সঙ্গে চট্টগ্রামও হারিয়ে যাবে জলের অতলে, ১০০ বছর পর। সমুদ্রের জল-স্তর যেভাবে বাড়ছে, তাতে চট্টগ্রামকে বাঁচানো আর সম্ভব হবে না।’

বন্দরনগরী চট্টগ্রামকে বিশেষ করে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোর মধ্যে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থাটি বলেছে, আগামী ১০০ বছরে চট্টগ্রামের পাশাপাশি বিশ্বের ২৯৩টি প্রধান বন্দর শহরও সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা পূর্বাভাস দেওয়ার এমন এক পদ্ধতি তৈরি করেছেন, যাতে দেখা যায় উপকূলীয় শহরগুলোতে বরফের চাদর গলে যাওয়ার ফলাফল কতোটা ভয়াবহ হতে যাচ্ছে।

জোয়ারের উচ্চতা গড়ছে নিত্যনতুন রেকর্ড

চট্টগ্রামে সেই লক্ষণ কিছু কিছু মিলছে এখনই। প্রতি বছর বন্দরনগরীর নতুন নতুন এলাকা জোয়ারের পানির তাণ্ডবে পড়ছে। দেখা গেছে, জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা পেতে মাত্র গত বছরই চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিকের যে সড়কগুলো তিন ফুট উঁচু করেছিল, চলতি বছরই সেগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। এভাবে চট্টগ্রাম নগরীর ভেতরে জোয়ারের পানির উচ্চতা গড়ছে নিত্যনতুন রেকর্ড। গত ২১ আগস্ট কর্ণফুলী নদীতে আসা জোয়ারের উচ্চতা ছিল ৪.৮১ মিটার। এর পর দিন সেই জোয়ারের উচ্চতা ছিল ৪.৬৬ মিটার।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের জরিপ বলছে, চট্টগ্রাম নগরীর প্রায় ৬৯ শতাংশ এলাকা এখন কম-বেশি জোয়ারের পানির কবলে পড়ছে। সেই জোয়ারের স্রোতে যখন এলাকা ডুবে যায়, তখন বাড়িতে বসে থাকা ছাড়া উপায় থাকে না এলাকাবাসীর। অনেক জায়গা দিনে কমপক্ষে ছয়ঘণ্টা জোয়ারের পানির নিচে তলিয়ে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে কখন জোয়ার সরে যাবে— সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া গতি থাকে না মানুষের। প্রতিদিন নিয়ম করে দুইবার বঙ্গোপসাগর থেকে আসা জোয়ারের স্রোতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জীবনযাপনেও অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে স্থানীয়রা। কিন্তু সেই জীবন স্বাভাবিক নয়।

চট্টগ্রাম নগরীর এক অভিজাত এলাকার বাসিন্দা জসীম উদ্দিন বললেন, ‘অন্তত তিন ঘণ্টা এই জোয়ারের পানি থাকেই প্রতিদিন। এজন্য আমরা জোয়ারের পূর্বাভাসসহ ক্যালেন্ডার ঘরে রাখি। আমাদের প্রতিটি দিন শুরু হয় ওই ক্যালেন্ডার দেখে।’

জোয়ারের জেরে ভুতুড়ে এলাকা

গবেষণায় দেখা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর ১৮ শতাংশ এলাকায় সমুদ্রের পানির উচ্চতা ০.৫ থেকে ২.৫ মিটার পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এর মধ্যে আগ্রাবাদ এলাকার উচ্চতা সাগরপৃষ্ঠ থেকে এখন দশমিক ৪২ মিটার উচ্চতায় পৌঁছে গেছে ঠিক, কিন্তু প্রতিদিন জোয়ারের যে ঢেউ সেখানে আসে তার উচ্চতা কমপক্ষে ২ দশমিক ৫১ মিটার। বসন্তকালে জোয়ারের এই পানির উচ্চতা ২.৭৬ মিটারও রেকর্ড করেছে বাংলাদেশ জরিপ অধিদপ্তর। চাঁদনী রাতে কিংবা দুর্যোগের সময় স্রোতের উচ্চতা ছাড়িয়ে যায় স্বাভাবিকের চেয়ে আরও এক বা দুই মিটার— তখন সাধারণ মানুষের অবস্থা হয়ে পড়ে খুবই শোচনীয়। ২.৫১ মিটারের এই জোয়ারের ধকল সইতে না পরে আগ্রাবাদ এলাকার অনেক মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে অন্যখানে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। আর এই একই কারণে কর্ণফুলী নদী তীরের আগ্রাবাদে ৮২.১৮ একর জমির ওপর নির্মিত সিডিএ আবাসিক এলাকা এখন প্রায় পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে।

আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিকের ঘরে ঘরে দিন শুরু হয় জোয়ারের পূর্বাভাসের ক্যালেন্ডার দেখে। ছবি: দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।
আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিকের ঘরে ঘরে দিন শুরু হয় জোয়ারের পূর্বাভাসের ক্যালেন্ডার দেখে। ছবি: দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

আগ্রাবাদ আবাসিকের ২১ নম্বর সড়কের বাসিন্দা জাহাজ ব্যবসায়ী মীর রেজওয়ান হোসেন টিপু সেই ১৯৭৬ সালে ১ হাজার ৫২১ বর্গমিটার জমিতে তার বাড়িটি তৈরি করেছিলেন। গত জানুয়ারি মাসে চার দশকের স্মৃতি-বিজড়িত বাড়িটি চিরতরে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন তিনি। পরিবারসহ তার ঠিকানা এখন ভাড়া বাড়ি।

সাবেক এই মেরিনার বললেন, ‘নব্বই দশকের আগে আমরা কখনও বাড়িতে পানি ঢোকার এই সমস্যায় পড়িনি। তবে একসময় বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া এলাকার সংখ্যা বাড়তে থাকলে ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমরা বাড়ির নিচতলাটা আরও উঁচু করি। এভাবে ১৯৯০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাড়ির নিচতলাটা অন্তত পাঁচ ফুট উঁচু করেছি। কিন্তু শেষপর্যন্ত দেখা গেল, এই চেষ্টা বৃথা।’

উচ্চতায় সাগরের সমান হতে চলেছে শুলকবহর

সমুদ্রের পানির উচ্চতা চট্টগ্রাম নগরীর ১৮ শতাংশ এলাকায় ০.৫ থেকে ২.৫ মিটার পর্যন্ত বেড়েছে। হিসাবে দেখা গেছে, এসব এলাকায় জোয়ারের পানির গড় উচ্চতা প্রতিদিন ২.৫ থেকে ২.৭৬ মিটার পর্যন্ত উঠছে। অন্যদিকে বৃষ্টি, চাঁদনী রাত আর ঘূর্ণিঝড়ের মতো দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় চট্টগ্রাম নগরীর ৫১ ভাগ এলাকায় পানির স্তর ২.৫ – ৪.৫ মিটার পর্যন্তও বেড়ে যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হচ্ছে শুলকবহর এলাকা। সাগরপৃষ্ঠ থেকে ওই এলাকার উচ্চতা মাত্র দশমিক ১৯ মিটার। সেখানে আসা জোয়ারের গড় উচ্চতা পৌঁছে গেছে ২.৫০ মিটারে। একই অবস্থা হালিশহরেরও। গত অন্তত ১৫ বছর ধরে এলাকাটি জোয়ারের কবলে পড়ছে। কমপক্ষে এক থেকে দেড় মিটার জোয়ারে আবাসিক এলাকাটি প্লাবিত হচ্ছে নিয়ম করে।

বারোটা বাজছে ব্যবসা-বাণিজ্যেরও

সাগরে পানির উচ্চতা বেড়ে চট্টগ্রাম নগরীতে ধেয়ে আসা জোয়ারে সাধারণ মানুষের জীবনই শুধু অস্বাভাবিক হয়নি, বাণিজ্যিক রাজধানীর ব্যবসাবাণিজ্যেও ফেলেছে ব্যাপক প্রভাব। চট্টগ্রামে ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ ও আছদগঞ্জে জোয়ারের পানি ঢুকে পণ্য নষ্ট হওয়ায় বছরে ক্ষতি হচ্ছে অন্তত এক হাজার কোটি টাকা। খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা এমনটি দাবি করে জানাচ্ছে, প্রতিদিনের এই দুর্ভোগের পাশাপাশি শুধু জোয়ারের পানির কারণে অনেক ব্যবসায়ী সর্বহারা হওয়ার পথে।

সিডিএ আবাসিকের পাশাপাশি গত দুই-তিন বছর ধরে আগ্রাবাদের বাণিজ্যিক এলাকায়ও জোয়ারের পানি ঢুকছে নিয়মিত। সেখানকার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারসহ বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অফিসও প্লাবিত হচ্ছে জোয়ারে। চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বিস্ময় নিয়ে বললেন, ‘আগ্রাবাদের বাণিজ্যিক এলাকায় জোয়ারের পানির এমন দৃশ্য আমি দুই বছর আগেও দেখিনি। আর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সামনে পানি জমার কথা তো কল্পনাই করতে পারি না। অথচ গত দুই বছর ধরে এই ট্রেড সেন্টারের সামনের রাস্তাটা পানিতে ডুবে যেতে দেখছি।’

পাশের আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালটিও তলিয়ে যায় জোয়ারের হাঁটুপানিতে। রোগীদের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঢুকে যায় পানি। সেখানে ভোগান্তিই যেন প্রতিদিনের সঙ্গী রোগী ও তাদের স্বজনদের।

এখন কী হবে উপায়?

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নগর পরিকল্পনা বিভাগের প্রধান এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ একেএম রেজাউল করিম বলছেন, ‘জোয়ারের পানি যাতে শহরের ভেতরে প্রবেশ না করতে পারে এজন্য জোয়ার নিয়ন্ত্রণে টাইডাল রেগুলেটর নির্মাণে গতি বাড়াতে হবে। পাশাপাশি জোয়ারের পানি ধারণ করার জন্য শহরে জলাধার নির্মাণ করাটাও জরুরি।’
তিনি বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীতে যাতে জোয়ারের পানি বেশি পরিমাণে নিষ্কাশন করা যায়, সেজন্য নগরীর জলাশয় ও খালগুলোর পাশে জেনারেটরসহ পাম্প বসানো দরকার।’

কর্ণফুলী নদী হয়ে চট্টগ্রাম শহরে জোয়ারের পানি ঢোকা ঠেকাতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড ৪০টি টাইডাল রেগুলেটর (স্রোত নিয়ন্ত্রক) বসানোর কাজ করছে নগরীতে। এর মধ্যে পাঁচটি রেগুলেটর স্থাপনের কাজ শেষ হবে আগামী বছরের মধ্যেই— এমন আশাবাদ জানিয়েছেন নগরীতে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ শাহ আলী।

অন্যদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড ১ হাজার ৬২০ কোটি টাকায় ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলমগ্নতা/জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন’ শীর্ষক আরেকটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর আওতায় চট্টগ্রাম বিমান বন্দর, মহেশখাল, শাহ আমানত সেতু, কালুরঘাট এবং হালদা নদীর মুখে আরও ২৩টি টাইডাল রেগুলেটর স্থাপন করা হবে। এছাড়া চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও চাক্তাই খাল এবং রাজাখালে আরও ১২টি রেগুলেটর বসানোর কাজ করছে।

তবে এ নিয়ে সতর্কবাণীও দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. রিয়াজ আক্তার মল্লিক। তিনি বললেন, ‘নালায় যেন বর্জ্য না ফেলা হয়— সে ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে হবে যে কোনো মূল্যে। নইলে জোয়ার ঠেকাতে টাইডাল রেগুলেটর বসিয়েও কোনো লাভ হবে না।’

সিপি

দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড অবলম্বনে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!