হাসপাতালে অভিযান বন্ধ হলে স্বাস্থ্যখাতে নৈরাজ্য থামবে না: ক্যাব

সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করতে হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগবে- স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম। তারা মনে করছেন- এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে দেশে স্বাস্থ্যখাতে নৈরাজ্য থামবে না। পাশাপাশি রোগীদের ভোগান্তি ও বিড়ম্বনার মাত্রা ভয়াবহ হবে।

মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানিয়েছেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম ও ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান।

ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশে প্রচলিত ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন ২০০৯ এর অধীনে পরিচালিত অভিযান পুরো বিশ্বে সহজ একটি আইনি প্রতিকার মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। মানুষ ভোগান্তিতে পড়লে অতিসহজে এ আইনের মাধ্যমে প্রতিকার পেতে পারছেন। যার মাধ্যমে ভেজালমুক্ত নিরাপদ খাদ্য, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, গণপরিবহনসহ অনেক অত্যাবশ্যকীয় সেবা নিয়ে ভোগান্তির সহজে আইনি প্রতিকার পাবার সুযোগ তৈরি হয়েছে। ব্যবসায়ীদের একটি মহল গোড়া থেকেই এ অভিযানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আইনটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা করেছেন।

তারা বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এমনিতেই ত্রিমুখী প্রশাসন চলছে। সরকারি প্রশাসনের বাইরে বিএমএ ও স্বাচিপের পৃথক নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য প্রশাসন এমনিতেই বিপর্যস্ত। অন্যদিকে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা একদিকে চিকিৎসক আবার অন্যদিকে তারা বেসরকারি ক্লিনিকের মালিক। কিছু চিকিৎসকদের দু’ধরনের ভূমিকার কারণে মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পায় না আর বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়েও জিম্মি।

বেসরকারি ক্লিনিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের দাবির মুখে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অভিযান পরিচালনার আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নেওয়ার প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন। বেসরকারি ক্লিনিক মালিকরা এ দাবি করছে, কালকে গণপরিবহন মালিক, পরের দিন হোটেল রেঁস্তোরা, তারপরের দিন দোকান মালিক সমিতিসহ সব ব্যবসায়ীরা এ ধরনের দাবি উত্থাপন করবে। যার চূড়ান্ত বলি হবেন দেশের সাধারণ ভোক্তারা। ভোগান্তি ও প্রতারণার শিকার হলে তখন আর কোনো জায়গায় প্রতিকার চাওয়ার সুযোগ থাকবে না।

ক্যাব নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাসপাতালে অভিযান দরকার নেই এ ধরনের মন্তব্য করার অর্থ তারা এখন যেভাবে রোগীদের হয়রানি, অতিরিক্ত বিলের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে পকেট কাটছে, ভুয়া ও মনগড়া টেস্ট রেজাল্ট দিয়ে প্রতারণা করছে, ভুয়া ডাক্তার, মেয়াদহীন রিএজেন্ট, ওষুধের ব্যবসা করছে তাকে বৈধতা দেওয়া। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হাসপাতালে অভিযানের স্বচ্ছতা ও আইনের অপব্যবহার না করার নির্দেশনা হিসেবে চলমান ভেজালবিরোধী অভিযানের আদলে অভিযান চলাকালে ক্লিনিক মালিক সমিতি ও ক্যাব প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের নির্দেশনা দিতে পারতো। তা না করে ক্লিনিক মালিকদের পক্ষে পরোক্ষ ভাবে অভিযান বন্ধের দাবিকে সমর্থন করলেন। যা কোনো ভাবেই কাম্য নয়। ক্লিনিক মালিকরা যদি স্বচ্ছতার সঙ্গে দেশি আইন অনুযায়ী হাসপাতাল পরিচালনা, সেবা মূল্য আদায় ও রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন তাহলে তাদের ভীত হবার কোনো কারণ নেই।

সিএম/এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!