হাসপাতালের ডাক্তারকে মারধর, পুলিশের কব্জায় যুবক

চট্টগ্রামের পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসকের উপর হামলা ও ভাংচুর মামলার প্রধান আসামি ইমরান হোসেন মুন্নাকে (২৮) আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার শোভনদন্ডি ইউনিয়নের আশাতা গ্রামের শ্বশুর বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। সে বড়লিয়া ইউনিয়নের ওকন্যারা এলাকার মো. ইসহাকের ছেলে।

জানা যায়, গত ৯ অক্টোবর পানিতে পড়া দেড় বছরের এক শিশু চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগে হাসপাতালে হামলা চালিয়ে চিকিৎসকদের মারধর করে শিশুর স্বজনরা। এ ঘটনায় মৃত শিশুর পিতা ইমরান হোসেন ও শিশুর মামা আবদুর রহমানসহ আরও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ডা. জিয়াউদ্দিন মো. সাকিব বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে মামলার বাদি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) জিয়াউদ্দিন মো. সাকিব জানান, গত ৯ অক্টোবর শুক্রবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে বড়লিয়া ইউনিয়নের ওকন্যারা গ্রামের ইমরান হোসনের দেড় বছর বয়সী এক শিশু সন্তান পুকুরের পানি থেকে উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে ইসিজি করে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর শিশুটিকে নিয়ে তার স্বজনরা বাড়িতে নিয়ে যান। পরে বাড়িতে কে বা কারা বলতে শুরু করে শিশুটি এখনও বেঁচে আছে। প্রায় ঘন্টাখানেক পর শিশুটিকে আবারও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন তার স্বজনরা। এ সময় আবারও দেখে চিকিৎসকরা মৃত্যু ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, এ সময় ভুল চিকিৎসায় শিশুটির মৃত্যুর অভিযোগে এলাকার বিক্ষুদ্ধ ৪০-৪৫ জন লোক কিছু বুঝে উঠার আগেই আমাদের উপর হামলা চালায় এবং অফিস ভাংচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

ঘটনার সময় দায়িত্বে থাকা কর্তব্যরত জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাক্তার সুচিতা দেব জানান, ৯ অক্টোবর মুর্মূর্ষু শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার স্বজনরা। আমরা দ্রুত শিশুটির ইসিজি করে এবং অন্যান্য চেকআপ করার পর শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করি। পরে তারা এসে বলেন শিশুটি মারা যায়নি। তখন আমরা আবারও ইসিজি করে নিশ্চিত হই শিশুটি মৃত। একপর্যায়ে তারা আমার উপর চড়াও হলে আমি ডাক্তার সাকিবকে ডেকে নিয়ে আসি। তখন উৎসুক জনতা আমাদের বেধড়ক মারধর ও ভাংচুর চালায়।

পটিয়া থানার উপপরিদর্শক বোরহান উদ্দিন জানান, পটিয়া হাসপাতালে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর জেরে চিকিৎসকের উপর হামলার ঘটনায় শিশুটির পিতা ইমরান হোসেন মুন্নাকে তার শ্বশুর বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। এর আগে একই অভিযোগে মামলার আসামি শিশুটির মামা আবদুর রহমানকেও আটক করা হয়েছিল। আটক মুন্নাকে আজ (শুক্রবার) বিকেলে আদালতে পাঠানো হবে।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!