হালিশহরে স্কুলছাত্রী অপহরণ, নাকি স্বেচ্ছায় বাড়িছাড়া!

চট্টগ্রামের হালিশহরে আইডিয়াল স্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে কোচিং সেন্টারে যাওয়ার পথে তাকে অপহরণ করা হয় বলে ওই স্কুল ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। ১৪ বছর বয়সী ওই অপহৃত ছাত্রীর নাম সাদিয়া আক্তার ঝুমকা।

তবে পুলিশ বলছে ভিন্ন কথা। পুলিশের দাবি প্রেমের টানে স্বেচ্ছায় ঘর ছেড়েছে মেয়েটি। ঘটনা যা ঘটুক না কেন, মেয়েটিকে উদ্ধারের ব্যাপারে পুলিশের পক্ষ থেকে দুই দিনেও কোনো সহযোগিতা পাননি বলে জানিয়েছেন ঝুমকার পিতা শাহজাহান।

তিনি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে হালিশহর আব্বাস পাড়ার বখাটে যুবক মারুফ (২৮) আমার মেয়েকে উত্যক্ত করে আসছিল। সে প্রায়ই ঝুমকাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতো। এতে ঝুমকা সাড়া না দেওয়ায় রোববার দুপুরে কোচিংয়ে যাওয়ার পথে মাইক্রোবাসে করে তাকে তুলে নিয়ে যায় মারুফ। মারুফকে শওকত ও তার স্ত্রী সুমি দুজনে মিলে সহযোগিতা করেছে।’

জানা গেছে, অভিযুক্ত মারুফ হালিশহর আব্বাস পাড়ার বাসিন্দা মাহবুব আলমের ছেলে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে আরও ১০ থেকে ১২টি মামলা রয়েছে।

এ ঘটনায় সোমবার (১৮ নভেম্বর) হালিশহর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানিয়েছেন ছাত্রীর পিতা মোহাম্মদ শাহজাহান ইসলাম।

পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে শাহজাহান বলেন, ‘আমার মেয়েকে অপহরণের কথা প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানতে পারি আমি। মেয়েকে উদ্ধারে পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে আমি সোমবার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করি। মামলা করতে চাইলেও ওসি সাহেব মামলা নিচ্ছেন না। গত রাতে পুলিশ আমাকে বলেছেন মেয়েকে উদ্ধার করতে কর্ণফুলি যেতে হবে। এজন্য আমাকে গাড়ি ভাড়া করতেও বলেন। আমি ৩ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করার পর আমাকে রাতের ১০টা পর্যন্ত বসিয়ে রেখে পরে পাঠিয়ে দিয়েছেন।’

হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হক বলেন, ‘এটি কোনো অপহরণের ঘটনা নয়। মেয়েটি স্বেচ্ছায় পালিয়েছে। এজন্য মামলা নেওয়া হচ্ছে না। কেউ স্বেচ্ছায় পালিয়ে গেলে আমরা কি করতে পারি?

মেয়েটিকে উদ্ধারে অভিযানে যেতে মেয়ের পিতাকে দিয়ে গাড়ি ভাড়া করানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না দাবি করেন এবং ঘটনার সময়ে থাকা দায়িত্বরত কর্মকর্তার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।

হালিশহর থানার উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ মোবারক বলেন, ‘আমি সোমবার থানার ডিউটি অফিসার থাকাকালীন ১৪ বছরের এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ পাই। সাথে সাথে আমি যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি। এখানে কোনো ধরনের গাফিলতি করা হয়নি।’

তবে অভিযানে যাওয়ার জন্য অপহৃত মেয়ের বাবাকে দিয়ে গাড়ি ঠিক করানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এআরটি/এসবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!