হালিশহরে গ্যাসের পাইপে হঠাৎ ফাটল, বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা

খবর দিলেও কর্ণফুলী গ্যাসের লোক ঘটনাস্থলে গেল ৮ ঘন্টা পর

চট্টগ্রামের হালিশহরে গ্যাসপাইপ ফাটলের ঘটনা ঘটেছে স্থানীয় একটি মসজিদের সামনেই। এলাকাবাসী সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি জানায় কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিকে (কেজিডিসিএল)। কিন্তু শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় ফাটলের এই ঘটনা ধরা পড়ার পর এমনকি বিকেলেও ওই প্রতিষ্ঠানের কারও দেখা মেলেনি। গ্যাস পাইপে ফাটলের ৮ ঘণ্টা পর রাত ১০টায় ওই প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে দেখা গেল গ্যাস পাইপের ত্রুটি সারানোর কাজে যোগ দিতে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বড় দুর্ঘটনার আশংকা থাকার পরও কেজিডিসিএলের এমন উদাসীনতায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। কারণ কয়েকদিন আগেই নারায়ণগঞ্জে মসজিদের পাশের গ্যাসপাইপ বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত এক শিশুসহ ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। অনেকে এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।

জানা গেছে, শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে হালিশহর আবাসিক এলাকার এল-ব্লক মসজিদের পাশে নির্মাণ কাজের মাটি কাটার সময় গ্যাসলাইন ফেটে যায়। গ্যাস নির্গত হলেও কোনো ধরনের বিস্ফোরণ না ঘটায় অনেক বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকার বাসিন্দারা।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার মসজিদে জুমার নামাজের পরপর গ্যাস পাইপ ফেটে যায়। নামাজ চলাকালীন অবস্থায় পাইপ ফেটে যাওয়ায় আতংক তৈরি হয় মসজিদে থাকা মুসল্লিদের মধ্যে। পরে মুসল্লিরা মসজিদ থেকে বেরিয়ে গ্যাস লাইনের ওপর মাটি চাপা দিয়ে গ্যাস নির্গমন বন্ধের চেষ্টা করে। কিন্তু এতেও গ্যাস নির্গত হওয়া বন্ধ হয়নি।

এরপর থেকে স্থানীয়দের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। গ্যাসের শব্দে আতংক তৈরি হয় ওই এলাকাজুড়ে। গ্যাসের উৎকট গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয়দের অনেকে হয়ে পড়ে অসুস্থ।

ঘটনার পর পরই স্থানীয়রা কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা ৮ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে আসে। শুক্রবার রাত ১০টায় এসে লাইনের ত্রুটি সরানোর কাজ শুরু করে। পরে শুক্রবার ভোররাত পর্যন্ত কাজ চালিয়ে ওই গ্যাস পাইপের ত্রুটি সারানো হয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

গ্যাস লাইনের ত্রুটি সারানোর কাজ করা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসএম ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তা লুৎফর রহমান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘নালা নির্মাণের কাজ করার সময় গ্যাস লাইন ফেটে গেছে। আমরা খবর পেয়ে গ্যাসলাইনের ত্রুটি সারানোর কাজ শুরু করি।’

স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বজিৎ শর্মা বলেন, ‘কয়েকদিন আগে গ্যাসলাইনে ত্রুটির কারণে বিস্ফোরণ ঘটে নারায়ণগঞ্জে বহু মানুষের মৃত্যু হল। আমরা আরেক নারায়ণগঞ্জ ট্রাজেডির মুখোমুখি হতে পারতাম। দিনভর পাইপে গ্যাস বের হলেও কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কাউকে দেখা যায়নি। রাত ১২টায় ঠিকাদারেরা লাইনের ত্রুটি সারানোর কাজ শুরু করে। গ্যাসের লাইনের ত্রুটি নিয়মিত চেক না করলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থেকেই যাবে।’

সিএম/এমএফও/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!