হালিশহরের নারী এবার ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়ে চমেক হাসপাতালে

চট্টগ্রামে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত আরও এক রোগী পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে তিনি তৃতীয় জন, যিনি প্রাণঘাতি এই রোগে আক্রান্ত হলেন। প্রথমজনের মতো এই রোগীও নারী।

চট্টগ্রামের হালিশহরের বাসিন্দা এই নারী গত বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন অতিরিক্ত ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নিয়ে। কিন্তু পরবর্তীতে ওই নারীর মধ্যে থাকা বিভিন্ন উপসর্গ দেখে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর ডাক্তাররা নিশ্চিত হন, তিনি ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সুযত পাল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপসহ নানা সমস্যা নিয়ে হাসপাতালের ১৩ নং ওয়ার্ডে ভর্তি হন হালিশহর থেকে আসা সেই নারী। জরুরি বিভাগ থেকে ‎র‍্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট ও নমুনা পরীক্ষা করে তার করোনা নেগেটিভ এসেছে। কিন্তু ভর্তির পরপরই তার মধ্যে মিউকরমাইকোসিসের উপসর্গ দেখা দেয়। চিকিৎসকদের ভাষায় ‘মিউকরমাইকোসিস’ ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের মতোই।

ডা. সুযত পাল আরো বলেন, রোগীটিকে আমরা অবজারভেশনে রেখেছি। আলাদাভাবে তার চিকিৎসা ব্যবস্থা চলছে।

তবে এর বেশি আর কোনো তথ্য জানাতে রাজি হননি ডা. সুযত পাল।

গত ৩ জুলাই দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়ার বাসিন্দা ৬০ বছর বয়সী এক নারী করোনা আক্রান্ত হয়ে করোনামুক্ত হন গত ১৫ জুলাই। তবে এরপর তার দাঁতের ইনফেকশন দেখা দেওয়ায় তাকে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিছুদিন পরে তার চোখে ইনফেকশন দেখা দেয়। পরে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এমএ হাসান ওই রোগীকে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ থাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বারডেম হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। এর মধ্যেই করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ২৩ জুলাই সিএসসিআর হাসপাতালে মারা যান ওই নারীর স্বামী। এটি ছাড়াও লকডাউন পরিস্থিতির কারণে কিছুটা দেরিতে গত ২৫ জুলাই ওই নারীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গত ২৮ জুলাই রাতে মেডিকেল বোর্ড বসিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন, ষাটোর্ধ ওই নারী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত।

এদিকে গত ৬ আগস্ট চট্টগ্রামে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত আরও এক রোগীর খোঁজ মেলে। ৪০ বছর বয়সী ওই পুরুষও বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। কর্ণফুলী উপজেলার বাসিন্দা ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী এ রোগী করোনার দুই ডোজ টিকা দিয়েছেন এবং আগে কখনও করোনা আক্রান্তও হননি। তবে আগে থেকেই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও অ্যাজমার জটিলতা ছিল রোগীর। মুখের এক পাশে দাঁতের ব্যথাজনিত জটিলতায় তাকে প্রথমে চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়।

ডাক্তারের পরামর্শে তাকে ২৫ জুলাই চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর মুখের একপাশ ফুলে যায় তার। এ অবস্থায় নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়। পরে ৬ আগস্ট জানা যায় রোগী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত। এরপর তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আইএমই/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!