সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে যান্ত্রিক নৌযান ও বালি তোলার ড্রেজার চলাচল অব্যাহত থাকায় একের পর এক মারা যাচ্ছে মৎস্য প্রাণী।
মঙ্গলবার বিকেলেও হালদা নদীর মদুনাঘাট সেতু সংলগ্ন এলাকায় মৃত একটি ডলফিন ভেসে উঠে। সেই মৃত ডলফিনটির একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরীয়া লিখেছেন, ‘হালদায় ভাসছে ছোট ডলফিনের বাচ্চাটি। দেহের মাঝ বরাবর প্রায় দ্বিখণ্ডিত।’
তার এ পোস্টে বেশিরভাগ মন্তব্যদাতা ক্ষোভ প্রকাশ করে হালদায় বালির ড্রেজার চালানো বন্ধের দাবি তুলেছেন। আর এ ডলফিনের বাচ্চাটি মারা যাওয়ার জন্য তারা ড্রেজারকেই দায়ী করেছেন।
মনজুরুল কিবরীয়াও বলছেন একই কথা, ডলফিনটি অপ্রাপ্তবয়স্ক। শরীরের মাঝ বরাবর প্রায় দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেছে, গায়ে পচন ধরেছে। আঘাতের ধরন দেখে তার মনে হয়েছে, ড্রেজারের আঘাতে ডলফিনটির মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। হালদায় ড্রেজার চলাচল নিষিদ্ধ হলেও তা মানা হচ্ছে না।
এর আগেও প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদার হাটহাজারী অংশের খলিফাঘোনা এলাকায় গত ৯ এপ্রিল প্রায় আট কেজি ওজনের একটি মৃত মৃগেল মাছ ভেসে ওঠে। ওই মা মাছের শরীরেও আঘাতে চিহ্ন ছিল।
এর আগে ৪ মার্চ নদীর রাউজান উপজেলার অংকুরীঘোনা এলাকায় ১২ কেজি ওজনের একটি কাতলা মাছ এবং হাটহাজারী উপজেলার উত্তর মার্দাশা আমতোয়া এলাকায় তিন কেজি ওজনের আইড় মাছ মারা যায়। ওই দুটি মাছের শরীরেও আঘাতে চিহ্ন ছিল।
হালদায় গত বছরের শুরুতে ড্রেজারের আঘাতে তিন মাসে ১৬টি ডলফিন মারা যাওয়ার পর নদীর বালুমহালগুলো আর ইজারা দেয়নি জেলা প্রশাসন। হাটহাজারীর উপজেলা প্রশাসন সাম্প্রতিক কয়েকটি অভিযানে কয়েকটি ড্রেজার জব্দ করলেও বন্ধ হয়নি ড্রেজার চলাচল। বিশেষ করে হালদার মোহনায় অবস্থান রত ড্রেজারগুলো হালদার বিভিন্ন স্থানে বালি নিয়ে যায়।