মা-মাছ ও ডলফিন রক্ষায় হালদা নদীতে মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিষিদ্ধ হলেও তা মানছে না অনেকে। দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা মাছ শিকারে ইঞ্জিনচালিত নৌযান চলাচল করছে। এসব নৌযানের ধারালো প্রপেলারের আঘাতে মা মাছ, ডলফিনসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মারা যাচ্ছে। মা-মাছ ও ডলফিন রক্ষায় সরকার হালদায় মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত ইঞ্জিনচালিত নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ করে।
হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে হালদায় দূষণ, মা মাছ ও ডলফিন রক্ষায় কাজ করছি। এপ্রিল, মে ও জুন মাস মাছের ডিম ছাড়ার সময়। বৃষ্টি হলে ডিম দিতে পারে মা মাছেরা। এ সময় মা মাছ খুবই দুর্বল থাকে। এ সময় ইঞ্জিনচালিত নৌযান চালালে নৌযানের প্রপেলারের আঘাতে মা মাছ ও ডলফিন আঘাতে মারা যায়।
শনিবার (২১ এপ্রিল) এক অভিযানে চারটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা আটক করে ধ্বংস করেছে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন। সকাল ১০টায় সাত্তারঘাট এলাকায় হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিনের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে চারটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা ধ্বংস করা হয়। পুরো অভিযান তত্ত্বাবধান করেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার।
অভিযান পরিচালনাকারী দলের স্পিডবোট দেখে ইঞ্জিন নৌকার বেশিরভাগ মাঝি পানিতে লাফ দিয়ে পালিয়ে যায়। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, হালদায় মা মাছ ও ডলফিন রক্ষায় ইঞ্জিনচালিত নৌযানের বিরুদ্ধে অভিযানে ৪টি নৌযান আটক করা হয়। পরে এসব নৌযান ধ্বংস করা হয়।
উল্লেখ, একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলনে ইঞ্জিনচালিত নৌযান ব্যবহার ও মা মাছ শিকার করে আসছে। এতে অন্তত ২০টি ডলফিন মারা যায়। গত ১৬ এপ্রিল হালদায় একটি ডলফিন ইঞ্জিনচালিত নৌযানের প্রপেলারের আঘাতে মারা যায়। ৯ এপ্রিল কেজি ওজনের মৃগেল ও ৪ মার্চ রাউজানের অংকুরীঘোনা এলাকায় ১২ কেজি ওজনের কাতলা মাছ ভেসে উঠে।