হার্টের ব্লক ও ডায়াবেটিস নিয়েই দুশ্চিন্তা ফজলে করিম পরিবারের

করোনা হলেই প্রভাবশালীরা ছোটেন ঢাকায়

শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্তের পর শুরুতে তেমন কোনো জটিলতা দেখা না গেলেও চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। করোনাভাইরাস এই সাংসদকে সেভাবে কাবু করতে না পারলে হার্টে ব্লক, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ জটিল কিছু রোগ থাকায় তার পরিবারও পড়ে গেছে দুশ্চিন্তায়।

এর আগে সরকার দলীয় চট্টগ্রামের আরেক সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমেদও করোনায় আক্রান্ত হয়ে সপরিবারে ঢাকা চলে গিয়েছিলেন। ঢাকামুখী শুধু সাংসদরা নয়, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে খোদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালকও চলে গিয়েছিলেন রাজধানী ঢাকায়।

সাংসদ ফজলে করিমের আগে চট্টগ্রামের আরও দুই সাংসদ করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তারা হলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চান্দগাঁও-বোয়ালখালী আসনের সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদ এবং বাঁশখালীর সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। দুজনই পরিবারের ১০ ও ১১ জন সদস্য নিয়ে করোনা আক্রান্ত হন। মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী চট্টগ্রামের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছিলেন।

মোছলেম উদ্দিন আহমদ চলে যান ঢাকায়। সেখানে তিনি আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আস্থা রাখতে পারেননি স্বয়ং স্বাস্থ্য বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবিরও। তার করোনা শনাক্ত হয় ২৪ মে। এরপর তিনি চলে যান ঢাকা। সুস্থ হয়ে ২৩ জুন যোগ দেন কর্মস্থলে। চট্টগ্রাম ছেড়ে ঢাকা চলে গিয়েছিলেন করোনায় চিকিৎসা না দেওয়া একটি বেসরকারি হাসপাতালের পরিচালকও।

আর সেই তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হলেন সরকার দলীয় সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। তবে তার পরিবারের দাবি তার হার্টে ব্লক, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ জটিল কিছু রোগ থাকায় সতর্কতা হিসেবে তাকে পরিবারের সদস্যরা রাজধানীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করান।

বুধবার (১৯ আগস্ট) তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এর আগে ১৬ আগস্ট তিনি নমুনা পরীক্ষা দিলে ১৭ আগস্ট তার করোনা শনাক্ত হয়। এর আগে ২৭ জুন তার বড় ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরীও করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন।

সাংসদ ফজলে করিম চৌধুরীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো নিয়ে তার ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরী তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ‘বাবা বর্তমানে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই তার করোনার চিকিৎসা শুরু হতে যাচ্ছে। তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। করোনা ভয়াবহ কোনো রোগ না হলেও বাবার হার্টে ব্লক, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরল থাকায় এবং বয়সের কারণে একটু দুশ্চিন্তা হচ্ছে। মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন ইচ্ছা করলে নিশ্চয়ই আমার বাবার তেমন কিছু হবে না এবং তিনি আবারো আমাদের সকলের মাঝে সুস্থ হয়ে ফিরে আসবেন।

মে মাসে সাংসদ ফজলে করিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম এহেছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে কন্ট্রাক্ট টেসিংয়ের অংশ হিসেবে সাংসদও করোনার নমুনা দেন। তবে ফজলে করিমের নেগেটিভ রেজাল্ট আসলেও তার গানম্যানের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। তখন তিনি কোয়ারান্টাইনে ছিলেন। এর পরপরই জুনের মাঝামাঝিতে অনুষ্ঠিত সংসদ অধিবেশনে তাকে করোনার ভয়ে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। এই মহামারীর মধ্যে ৪ জুন তিনি তার মেজোভাই ফজলে রাব্বি মানিককে হারান। চিরকুমার ফজলে রাব্বী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন।

এফএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!