হটলাইনে অভিযোগ, চট্টগ্রামের তিন জলাশয়ে দুদকের ঝটিকা অভিযান

দুদকের হটলাইনে চট্টগ্রাম রেলের তিন জলাশয় দখলের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক লুৎফুল কবির চন্দনের নেতৃত্বে দুদকের টিম মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় এ অভিযান পরিচালনা করে। জলাশয়গুলো হলো আগ্রাবাদ ডেবা, পাহাড়তলী জোড় ডেবা ও ভেলুয়ার দীঘি।

হটলাইন ১০৬-এ পাওয়া অভিযোগ অনুসারে, ৩ হাজার কোটি টাকা মূল্যের জলাশয় মাছ চাষের জন্য ইজারা নিয়ে ভরাট করে ঘরবাড়ি ও বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করে দখল করে কোটি টাকার বাণিজ্য করা হচ্ছে অন্যদিকে এ ভূমি পুনরায় ইজারাও দিতে পারছে না রেলওয়ে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, ‘আগ্রাবাদ ডেবা’২০ একর আয়তনের রেলওয়ের এ জলাশয় ইজারা নিয়েছিলেন সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা রহমত আলী। তিনি মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী ও সন্তানরা এটি ভরাট করে বাণিজ্যিকভাবে ভাড়া দেয়। কয়েক যুগ ধরে এ নিয়ে মামলা ঝুলে থাকায় ইজারার টাকাও পাচ্ছে না রেলওয়ে। পরবর্তীতে একাধিকবার এটির ইজারা ডেকেও ইজারা দিতে পারেনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

‘জোড় ডেবা’- ২১ একরের এ জলাশয় মাছ চাষ করার ঘোষণা দিয়ে ১৯৯৬ ও ২০০২ সালে পৃথকভাবে পাঁচ বছর করে ইজারা নিয়েছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী আবদুল হাই। এরপর থেকে শুরু হয় দখল, বাড়িঘর নির্মাণ ও বাণিজ্যিক স্থাপনা। এ জলাশয় দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের প্রমাণ পাওয়ায় ২০০৩ সালে চুক্তি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। আবদুল হাই মারা গেলে পরবর্তীতে এটি ইজারা নিয়েছিলেন তার ভাতিজা আবদুল লতিফ।

এছাড়া পাহাড়তলী স্টেশনের পশ্চিমে ১৩ দশমিক ৭৪ একর আয়তনের ‘ভেলুয়ার দীঘি’ রেলওয়ে স্কাউটসের কাছে ইজারা দেওয়া হয়েছিল। শুরুতে রেলওয়ের মহা-পরিচালকের কার্যালয় থেকে নিদের্শ দেওয়া হয়েছে পরবর্তীতে তাদেরকে আর নতুন করে চুক্তির নবায়ন করা হবে না। পরে এ চুক্তির বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করেছে রেলওয়ে স্কাউটস। এরপর থেকে ইজারার টাকাও পায়নি রেলওয়ে। দীর্ঘ সময় ধরে ওই জলাশয়ে বর্জ্য ফেলে ভরাট করে দখল করা হয়।

উপ-পরিচালক লুৎফুল কবির চন্দন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ১০৬-এ হটলাইনে রেলওয়ের তিন জলাশয়ের মোট ৫৫ একরের জায়গা ইজারা নিয়ে পৃথক ইজাদাররা দখল বাণিজ্যে করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তিনি আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে পৃথক তিন জলাশয়ের আশপাশে ভরাট করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করার সত্যতা পেয়েছি। প্রধান কার্যালয়ে তথ্য-প্রমাণের রিপোর্ট দাখিল করার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে বলে জানান তিনি।

এএম/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!