সড়ক ও ফুটপাতে হকার বসিয়ে চাঁদাবাজিতে নেমেছে আনসার সদস্যরা

এককালীন দিতে হয়েছে কাউকে ২০ হাজার টাকা। স্থান বুঝে কাউকে গুণতে হয়েছে ৩০ হাজারও। আবার দিনে মাসোহারা দিতে হয় ৫০ থেকে ১০০ টাকা।

চট্টগ্রামের ইপিজেড থানা এলাকায় সড়ক ও ফুটপাত দখল করে বসানো ভাসমান হকারের কাছ থেকে এই হারে আদায় করা হচ্ছে চাঁদা। এই চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (কেইপিজেড) নিয়োজিত বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে।

চট্টগ্রাম প্রতিদিনের হাতে আসা একটি ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, ব্যস্ত মহাসড়কের পাশে বেচাকেনার আসর বসিয়েছে হকাররা। হকারদের কেউ পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ফুটপাতের উপরও। পণ্য কিনতে ক্রেতার মনযোগ আকর্ষণে হাঁকও ছাড়ছে বিক্রেতারা৷ কেউ বিক্রি করছেন কাপড়। কেউ নিয়ে বসেছেন পান-সিগারেট, ফলমূল। মোবাইলের কাভার, হেডফোন, চার্জারও বিক্রি হচ্ছে এই ব্যস্ত সড়ক ঘেঁষে। প্রত্যেকে জায়গা দখল করেছে ৬ থেকে ৮ ফুট জায়গা।

একজন আনসার সদস্য হেটে এলেন সেখানে। তিনি একপাশ থেকে যাওয়া শুরু করলেন হকারদের মুখে মুখে। সময় বেশি নিচ্ছেন না তিনি। তার হাতে হকাররা গুজে দিচ্ছেন টাকা। এক হকারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে দ্রুত গতিতেই ছুটছেন তিনি পাশের হকারের কাছে। ইউনিফর্ম পড়ে আসা এ আনসারের সদস্যের বুকপকেটের উপর নাম লিখা আছে সুমন। এ চিত্র ইপিজেড থানার স্টীলমিলস কর্ণফুলী গেইট এলাকার। তিনি চট্টগ্রাম কর্ণফুলী ইপিজেড (সিইপিজেড) আনসার ইউনিটে কর্মরত রয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক হকার বলেন, ‘আমি ছোট ব্যবসায়ী। ফুটপাতে বা সড়কে ব্যবসা করতে হলে সবাইকে কম-বেশি টাকা দিতে হয়। সবাই নেয়। এখানে সর্বনিম্ন ২০ থেকে সর্বোচ্চ প্রতিদিন ১০০ টাকা চাঁদা দিতে হয়’।

সড়কের উপর বসা এক হকার বলেন, ‘লকডাউন তেমন ব্যবসা-বাণিজ্য হয় না। সড়কে বসছি এককালীন মোটা অংকের টাকা দিয়ে। ৬ থেকে ৮ ফুটের এই জায়গার জন্য ৩০ হাজার টাকা নিয়েছে। আবার নিয়মিত টাকা দিতে হয় কয়েকজন। বিকেলে এসেই ওই টাকা নিয়ে যায়। একেক দিন একেক আনসার সদস্য আসেন টাকা তুলতে।’

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী চট্টগ্রামের ইপিজেড থানা অফিসার আব্দুর রশিদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিষয়টি এখনই শুনলাম। এ ঘটনা সত্য হলে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী চট্টগ্রাম জেলা কমান্ড্যান্ট অফিসার বিকাশ চন্দ্র দাস চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘প্রতিটি আনসার সদস্যের কাজ হল তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করা হয়। সড়ক কিংবা ফুটপাতে চাঁদা উঠানো তার কাজ নয়। আমি এখনই এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো’।

মুআ/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!