সড়কে শাস্তির ভয়ে চালক-মালিক, ধীরে চলো নীতি ট্রাফিকের

নতুন সড়ক আইন পুরোপুরি প্রয়োগের ঘোষণায় চট্টগ্রামে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে গণপরিবহন সংশ্লিষ্টরা। তবে নতুন আইন প্রয়োগে চট্টগ্রামে মাঠ পর্যায়ের ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা এখানও দিকনির্দেশনা না পাওয়ায় এখনই কড়াকড়িতে যাচ্ছে না ট্রাফিক বিভাগ।

নতুন আইন বিষয়ে গণপরিবহন মালিক-চালক নেতারা বলছেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলেও নতুন আইনের কিছু বিধান মেনে নেওয়া যায় না। ‘বির্তকিত’ বিধানগুলোর দ্রুত সংশোধন প্রয়োজন বলে মনে করছেন চট্টগ্রামের গণপরিবহন সংশ্লিষ্ট মালিক-চালক নেতারা। নতুন সড়ক আইন সংশোধনের চাপে কিছুটা বেকায়দায় চট্টগ্রামের ট্রাফিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) নগরীর বিভিন্ন সড়ক সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের দেওয়া নির্দিষ্ট স্থানে বাস-টেম্পো না থামিয়ে যত্রতত্র থামাচ্ছেন চালকেরা। অপরাধ, অনুচিত বা শাস্তির বিধান জেনেও যত্রতত্র যাত্রী উঠা-নামা করছে তারা। নতুন আইনে চালকের সহকারীর লাইসেন্স না থাকলে এক মাসের জেল বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রো পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব বেলায়েত হোসেন বেলাল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘নতুন সড়ক আইন সম্পূর্ণ যুগোপযোগী। তবে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে চালকের সহকারীর (হেলপারের) লাইন্সেস নেই। এক্ষেত্রে এটি সম্পূর্ণ নতুন একটি প্রক্রিয়া। তাই এ বিষয়ে আমাদের আরও সময় দিতে হবে। তবে এ লাইসেন্স কোথা থেকে সংগ্রহ করতে হবে এবং কিভাবে সংগ্রহ করতে হবে এ বিষয়ে যদি বিআরটিএ এবং ট্রাফিক পুলিশ সঠিক নির্দেশনা দেয়, তাহলে আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অবশ্যই হেলপারদের লাইসেন্সের আওতায় নিয়ে আসবো।’

যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামার বিষয়ে চকবাজার-আগ্রাবাদ রুটের চালক মো. কবির বলেন, ‘এ ব্যাপারে যাত্রীদেরই বেশি দায়িত্ব নিতে হবে। যদি যাত্রীরা নির্দিষ্ট স্থানে উঠা-নামা করতে না চায়, তাহলে চালকদের জোর করার সুযোগ নেই।’

সড়কে নতুন আইন কঠোরভাবে প্রয়োগে চট্টগ্রামের মাঠ পর্যায়ের ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা এখানো দিকনির্দেশনা পায়নি জানিয়ে ট্রাফিক পুলিশ সার্জেন্ট মেহেদী হাসান লরেন্স বলেন, ‘নতুন সড়ক আইন পুরোপুরি প্রয়োগের আগে চালক-যাত্রীদের সচেতনতা বাড়াতে ট্রাফিক সদস্যদের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মোস্তাক আহমেদ খান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘সচেতনতা তৈরি করাই হলো আইনের মূখ্য বিষয়। এ লক্ষ্যে আমরা গণপরিবহন সংশ্লিষ্ট মালিক চালকদের সাথে একাধিকবার সভা করেছি। এছাড়াও সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে যা যা করা প্রয়োজন, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা তা চালিয়ে যাচ্ছি।’

চট্টগ্রামের সড়কে কবে নাগাদ নতুন আইন প্রয়োগ হতে পারে— এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘পুরোপুরি প্রয়োগের বিষয়টি এখনো সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না।’

তবে যে আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে তা প্রয়োগ করা হবে জানিয়ে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘আইনের কিছু বিষয় আছে। যেগুলোর কোনটি প্রথম দিনই প্রয়োগ সম্ভব, আবার কোনটি প্রথমদিনই প্রয়োগ সম্ভব নাও হতে পারে। তবে আমার মনে হয় কোনটি প্রয়োগ করা হবে আর কোনটি প্রয়োগ করা হবে না— সে বির্তকে না গিয়ে আইনের সঠিক প্রয়োগে সুযোগ দেওয়া উচিত। সেই সাথে সচেতনতা সৃষ্টি করা উচিত।’

তবে চট্টগ্রামের সড়ক ব্যবস্থাপনা ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাচ্ছে জানিয়ে মোস্তাক আহমেদ খান বলেন, ‘একদিনেই সব সমস্যার সমাধান সম্ভব না। তাই সমস্যা দেখিয়ে যদি একটি সুন্দর উদ্যোগকে বিনষ্ট করা হয় বা বিনষ্টের চেষ্টা করা হয়, সেটা দেশের জন্য শুভ কিছু হবে না।’

এএ/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!