সড়কে চসিকের ‘গাড়ি পার্কিং’ ব্যবসায় সিএমপির বাধা

‘সড়কে পার্কিং হলে যানজট মাত্রা ছাড়াবে’

চট্টগ্রাম নগরের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ‘টাকার বিনিময়ে পার্কিং’ বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এরই মধ্যে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে লালখান বাজার জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদে এলাকায় লালখান বাজার থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের সৌন্দর্যবর্ধন ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্প এবং পে-পার্কিংয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।

কিন্তু ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, সড়কে এমন পার্কিং হলে আরও বাড়বে নগরীর যানজট। বাড়বে ভোগান্তি।

এদিকে নগর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সৌন্দর্যবর্ধনের আড়ালে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার অভিযোগ অনেক পুরাতন চসিকের বিরুদ্ধে। তার ওপর সুশৃঙ্খল নগর গড়ার নামে ‘পে-পার্কিং’ ব্যবস্থা বাড়িয়ে দেবে সড়কের বিশৃঙ্খলা। তাই চসিকের উচিত সৌন্দর্যবর্ধনের আড়ালে এই ব্যবসায়িক মনমানসিকতা থেকে সরে আসা।

চসিক সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) থেকে আখতারুজামান ফ্লাইওভার বুঝে নেওয়ার পর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ট্রেড ম্যাক্স নামে একটি কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের জন্য। ফ্লাইওভারের ওপরে ও নিচে অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী সৌন্দর্যবর্ধন ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের ব্যয় হবে ১৮ কোটি টাকা এবং বছরে চসিককে দিতে হবে ১ কোটি টাকা। বিনিময়ে ফ্লাইওভারের বিভিন্ন স্থানে বিলবোর্ড ও নিচে পার্কিং ভাড়া দেবে এই প্রতিষ্ঠানটি।

ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এসব বিষয়ে ট্রাফিক বিভাগকে কিছুই জানানো হয়নি। এমনিতেই সড়কের তুলনায় নগরীতে গাড়ির সংখ্যা বেশি। কাজেই সড়কে এ ধরনের পে-পার্কিংয়ের সুবিধা পেলে এলোমেলোভাবে গাড়ি পার্কিং করবে চালকরা। ফলে নগরীতে সৃষ্টি হবে যানজট। এছাড়াও নগরীর রাস্তা অল্প বৃষ্টিতে ডুবে যায় এবং গাড়ি চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা থাকে না। রাস্তায় পে-পার্কিং চালু করা হলে বর্ষাকালে চরম যানজটের সৃষ্টি হবে যা নিরসন করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে।

এদিকে চসিকের এমন ‘কান্ডজ্ঞানহীন’ পে-পার্কিং বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর চিঠি পাঠিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) খন্দকার মোস্তাক আহমেদ খান স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে জানানো হয়, চসিক সম্প্রতি আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের নিচে, ওয়াসা মোড়, সিডিএ রাস্তার পাশে, নিউমার্কেট এলাকাসহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকার রাস্তায় পে-পার্কিংয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তবে এই সুবিধা পেলে কিছু প্রতিষ্ঠান গাড়ি স্থায়ীভাবে রাস্তাকে পার্কিং হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ পাবে। এছাড়াও সরু রাস্তায় পে-পাকিংয়ের ফলে গণপরিবহন পার্কিয়ের স্থান না পেয়ে এলোমেলোভাবে পার্কিং করবে। এতে যানজট ও জনভোগান্তি বেড়ে যাবে বলে উল্লেখ করা হয় ওই চিঠিতে।

এএ/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!