স্মৃতিময় মাঠে আইরিশদের বিপক্ষে আজ মাঠে নামছে টাইগাররা

২০১৭ সালের ১৯ মে থেকে ২০১৯ সালের ৯ মে। পাক্কা দুই বছর পর আবারো ডাবলিনের সেই মালাহাইডের ‘দ্য ভিলেজে’ টাইগারদের সাথে দেখা হচ্ছে স্বাগতিক আইরিশদের। আজ বৃহস্পতিবার (৯ মে) মাশরাফির দল আইরিশ বিপক্ষে মাঠে নামবে ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে। সেই মাঠে, যে মাঠে দু’ বছর আগে শেষ দেখা হয়েছিল দু’দলের।

সেবারও আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ঠিক আগে দিয়ে নিউজিল্যান্ড আর স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন জাতি আসরে অংশ নিয়েছিল বাংলাদেশ। এবারের মতই ছিল তার ফরম্যাট। প্রতি দলের সাথে খেলা হয়েছিল দুইবার করে। ২০১৭ সালের ১২মে বৃষ্টির কারণে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ মাঠেই গড়ায়নি।

মঙ্গলবার ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে যেমন টিম পারফরমেন্সে ধরা দিয়েছিল সহজ ও অনায়াস জয়। দু’বছর আগে এই ‘দ্য ভিলেজেও’ আইরিশদের বিপক্ষে তেমন সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও দারুণ টিম পারফরমেন্সে জিতেছিল বাংলাদেশ।

ফিরতি পর্বে আবার দেখা হয়েছিল বাংলাদেশ আর আয়ারল্যান্ডের। সেই ম্যাচে হেসেখেলে জিতেছিল মাশরাফিরা। মাত্র ২৪ ঘন্টা আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে যে ব্যবধানে জিতেছে টাইগাররা, ২০১৭ সালে ঠিক সেই ৮ উইকেটে আইরিশদের হারিয়েছিল বাংলাদেশ।

সে ম্যাচের হিরো ছিলেন দু’জন; মোস্তাফিজুর রহমান আর সৌম্য সরকার। কাটার মাস্টার বল হাতে জ্বলে উঠে প্রথম সেশনেই আইরিশদের ব্যাটিং মেরুদন্ড ভেঙ্গে গড়ে দিয়েছিলেন জয়ের ভিত।

আয়ারল্যান্ডের বিপজ্জনক ওপেনার স্টারলিংকে নিজের প্রথম ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে শূন্য রানে ফেরত পাঠিয়ে বোলিং তান্ডব শুরু করে কাটার মাস্টার। এরপর মিডল অর্ডারের ওপরও আঘাত হানেন এ বাঁ-হাতি পেসার। তার বিষাক্ত সুইং ও কাটারে (৯-২-২৩-৪) আয়ারল্যান্ডের একজন ব্যাটসম্যানও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি।

অবশ্য অধিনায়ক মাশরাফি (৬.৩-১-১৮-২) ও বাঁ-হাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম (৫ ওভারে ২/২২) দারুণ সমীহ জাগানো বোলিং করেন। মোটকথা, টাইগারদের সাঁড়াসি বোলিং তোড়ে ১৮১ রানের মামুলি সংগ্রহে শেষ হয় আয়ারল্যান্ডের ইনিংস।

এরপর সৌম্য সরকার ব্যাট হাতে আইরিশ বোলারদের কড়া শাসন করলে ৮ উইকেট হাতে রেখে ১৩৭ বল (২২.৫ ওভার) আগেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। সৌম্যর ব্যাট অপরাজিত থাকে ৮৭ রানে ৬৮ বলে (১১ বাউন্ডারি আর দুই ছক্কায়)। তামিম ইকবাল (৫৪ বলে ৪৭) অল্পের জন্য হাফ সেঞ্চুরি মিস করলেও দলকে ৯১ রানের জুটিতে (১৩.৫ ওভারে) এক শক্ত ভিত গড়তে রাখেন কার্যকর ভূমিকা।

প্রস্তুতি ম্যাচে আয়ারল্যান্ড ‘এ’ দলের কাছে হারের পর বড় ধরনের হৈ চৈ হয়নি। উদ্বেগ-উৎকন্ঠা ভর করেনি। তারপরও একটা চাপা সংশয় এসে বাঁধা বেধেছিল। সাথে একটু হলেও চিন্তার খোরাক ছিল বৈকি। কিন্তু টাইগাররা জায়গামত বল ও ব্যাট হাতে জ্বলে উঠে সে চিন্তা ও সংশয় দুর করেন। প্রস্তুতি ম্যাচের অনুজ্জ্বল বাংলাদেশের বদলে ক্রিকেট বিশ্ব দেখেছে দারুণ উজ্জিবীত, উদ্দিপ্ত আর ভাল খেলে জয়ের দূর্নিবার আকাঙ্খার মাশরাফি বাহিনীকে।

আয়ারল্যান্ডকে তুলোধুনো করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর ক্যারিবীয়দের উড়িয়ে দিয়েছে মাশরাফির দল। সাধারণ সমীকরণে আইরিশদের পেরে ওঠার কথা নয়। খাবি খাওয়ার কথা; কিন্তু খেলাটি ক্রিকেট। যার পরতে পরতে অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে থাকে। আগের ম্যাচের চালচিত্র এখন অতীত। ইতিহাস।

বাংলাদেশ আগের দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পাত্তাই দেয়নি। আর আয়ারল্যান্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। এই ভেবে হিসেব-নিকেশ করলে চলবে না। বাংলাদেশকে বৃহস্পতিবার ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে সামর্থ্যের সেরাটা উপহার দিতে হবে। সেটাই শেষ কথা। গৌরবময় অনিশ্চয়তার ক্রিকেটে সেটিইতো বড় সৌন্দর্যের কথা।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!