স্বেচ্ছাশ্রমে গ্রামের সঙ্গে শহরকে জুড়ে দিচ্ছেন বাসিন্দারাই
কক্সবাজারে তৈরি হচ্ছে ৩ হাজার ফুটের সড়ক
কক্সবাজার সদরের ভারুয়াখালী-পিএমখালী সংযোগ সেতু বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্বেচ্ছাশ্রমে এক সপ্তাহ ধরে কানেক্টিং সড়ক নির্মাণে কাজ করছে শত শত শ্রমিক। প্রতিদিনই প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ জন শ্রমিক স্বেচ্ছায় কোনো পারিশ্রমিক ছাড়া সড়কের কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে সড়কের কাজে অংশগ্রহণ করছেন বড় চৌধুরী পাড়া, ছোট চৌধুরী পাড়া, ননামিয়া পাড়া, উল্টাখালী ও আদর্শগ্রামের লোকজন।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) ভারুয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ইসলামের নেতৃত্বে ব্যান্ড বাজিয়ে একই ওয়ার্ড ছোট চৌধুরীপাড়া থেকে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ জন শ্রমিক নির্মাণ সড়কের কাজে অংশগ্রহণ করেন।
দীর্ঘদিনের আশা পূরণ হতে যাচ্ছে— এ প্রত্যাশায় সকলের মনে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেছে তারা। তাই কোনো ধরনের পারিশ্রমিক ছাড়াই সকলেই সম্মিলিতভাবে কানেক্টিং সড়কের কাজ করছে। এদিকে সেতু বাস্তবায়ন যাতে দ্রুত হয় সকলের সহযোগিতা কামনা করছেন ভারুয়াখালীর জনসাধারণ।
জানা যায়, ভারুয়াখালী হচ্ছে কক্সবাজার সদরের আওতাধীন একটি ইউনিয়ন। কিন্তু স্থানীয়দের দুঃখের বিষয় হলো- যোগাযোগ ব্যবস্থা সুবিধা না থাকায় ভারুয়াখালীর মানুষকে প্রায় ২৮-৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রামু উপজেলা হয়ে সদর থানা ও শহরে আসা-যাওয়া করতে হয়। এতে সময় লাগে প্রায় দেড় ঘন্টা থেকে দুই ঘন্টা। যদি ভারুয়াখালী-পিএমখালী সংযোগ সেতু বাস্তবায়ন হয় তাতে সময় লাগতে পারে মাত্র ২৫ থেকে ৩০ মিনিট। সংযোগ সেতুটি নির্মিত হলে ভারুয়াখালীর দুই তৃতীয়াংশ, রশিদ নগর ইউনিয়নের কিছু অংশ, জোয়ারিয়ানালার কিছু অংশের লোক ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ২৫-৩০ মিনিট সময়ের মধ্যে কক্সবাজার শহরে পৌঁছতে পারবে। এতে ভারুয়াখালীবাসীর দীর্ঘদিনের দুঃখ-দুর্দশাও লাগব হবে বলে মনে করছেন সচেতনমহল।
কানেক্টিং সড়ক নির্মাণের বিষয়ে ভারুয়াখালী-পিএমখালী সংযোগ সেতু বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি এডভোকেট শওকত বেলাল বলেন, ভারুয়াখালী সদরের আওতাধীন একটি ইউনিয়ন। কিন্তু আজ আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা সুবিধা না থাকায় একেবারেই অসহায় হয়ে পড়েছি। সদর ও শহরে আসতে প্রায় ২৮-৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রামু উপজেলা হয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। অথচ ভারুয়াখালী-পিএমখলী সংযোগ সেতুটি মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা। আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হতে চলছে— এ প্রত্যাশায় ভারুয়াখালীর অধিকাংশ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বেচ্ছায় কানেকটিং সড়ক নির্মাণ কাজে অংশগ্রহণ করছেন। কোনো ধরনের বিনিময় ছাড়া এলাকার মানুষ যে আবেগ, উচ্ছ্বাস হয়ে কাজ করছে তা হয়তো কক্সবাজারের দেখার মতো একটি দৃশ্য। আমাদের এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
ভারুয়াখালী-পিএমখালী সংযোগ সেতু বাস্তবায়ন কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা ও ইউপি সদস্য মো. ফজলুল হক বলেন, ভারুয়াখালী-পিএমখালী সংযোগ সেতু আমাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা। এ সংযোগ সেতুটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কোনো বিনিময় ছাড়া প্রতিদিন ১৫০-২০০ জন শ্রমিক স্বেচ্ছায় কানেকটিং সড়ক নির্মাণ কাজ করে যাচ্ছেন। সড়কটি ৩ হাজার ৩০০ ফুট লম্বা এবং ১২ ফুট প্রস্তত হচ্ছে। কোনো প্রকল্প ছাড়াই স্বেচ্ছাশ্রমে এতোবড় কানেকটিং সড়ক নির্মাণ কক্সবাজারে নজিরবিহীন।
এএইচ