স্বর্ণ চালানের তথ্য না দেওয়ায় গাড়িচালক শাহ আলমকে খুন করে বেলাল

চট্টগ্রামের বাঁশখালীর পুকুরিয়া থেকে উদ্ধার হওয়া বস্তাবন্দি মরদেহ চট্টগ্রাম থেকে নিখোঁজ গাড়িচালক শাহ আলমের বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। এরই মধ্যে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুইজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার হওয়াদের মধ্যে একজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন, শহিদুল ইসলাম কায়সার প্রকাশ বেলাল এবং নুরুল আমিন রনি।

নগরীর ডবলমুরিং থানার চৌমুহনী চাড়িয়াপাড়া থেকে শনিবার দুপুর ২টার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি দল।

তারা দুজনই শাহ আলমের পূর্ব পরিচিত ছিল বলে জানা গেছে। শাহ আলম তার গাড়িতে বিভিন্ন সময়ে স্বর্ণ পরিবহন করতো জানিয়ে সে স্বর্ণ সম্পর্কিত ‘তথ্য না দেওয়ায়’ শাহ আলমকে খুন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পিবিআই।

ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে শাহ আলমের লাশ শনাক্ত হওয়ার পর কিভাবে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে তার বিবরণ দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের এসআই শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘যেহেতু শাহ আলম গাড়িসহ নিখোঁজ হয়েছিলেন সেহেতু শহর থেকে বের হওয়ার মুখে নতুন ব্রিজে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করলাম আমরা। এতে দেখা যায় শাহ আলম যে গাড়ি চালাতেন, সেই গাড়িটি ২৬ আর ২৭ অক্টোবর মোট ৫ বার আসা-যাওয়া করেছে। এর মধ্যে ২৬ অক্টোবর গাড়িটির নম্বর প্লেট থাকলেও ২৭ অক্টোবর দেখা যাচ্ছে নম্বর প্লেট খোলা। এতে সন্দেহ হয় আমাদের। ২৭ অক্টোবর ৫টা ২৮ মিনিটে গাড়িটি শহর থেকে বের হয়। আবার ওই দিন ৮টা ২৬ মিনিটে বাঁশখালীর তৈলারদ্বীপ ব্রিজ পার হয় গাড়িটি। আবার ৮টা ৩৮ মিনিটে তৈলারদ্বীপ ব্রিজ দিয়ে শহরের দিকে আসে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ও কললিস্টের মাধ্যমে ২৭ অক্টোবর গাড়িটি যে চালিয়েছে তাকে শনাক্ত করি। তার নাম শহিদুল ইসলাম কায়সার প্রকাশ বেলাল। ৩০ অক্টোব দুপুর ২টার দিকে ডবলমুরিং থানা এলাকার নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন তিনি। পরে তাকে নিয়ে মরiদেহ উদ্ধারের স্থানে গিয়ে খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত হাতুড়িটি উদ্ধার করি আমরা।’

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেলাল হত্যার দায় স্বীকার করেছে জানিয়ে এসআই শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘কোমল পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে তারপর হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার কথা জানায় বেলাল। তাকে খুন করা হয় কর্ণফুলীর মইজ্জারটেকের আহসানিয়া পাড়ার বেলালের রড-সিমেন্ট বিক্রয়ের দোকানে। পরে সেখান থেকে শাহ আলমের সেন্ডেল, রক্তাক্ত একটি বস্তা, ঘুমের ওষুধসহ অন্যান্য আলামত জব্দ করা হয়।’

এসআই শাহাদাত বলেন, ‘বেলালের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা নুরুল আমিন রনিকেও গ্রেপ্তার করি। প্রাথমিকভাবে বেলাল জানিয়েছেন, বিভিন্ন সময় বিদেশ থেকে বৈধ উপায়ে নিয়ে আসা স্বর্ণের বার শাহ আলমের গাড়িতে পরিবহন করা হতো। সেই তথ্য জানতে চেয়েছিলেন তারা। তথ্য দিয়ে সহযোগিতা না করায় ক্ষিপ্ত হন তিনি। এতেই শাহ আলমকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়।’

এআরটি/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!