স্বজন বন্দি কারাগারে, মন মানে না করোনায়ও

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার

করোনার কারণে কারাগারে বন্দি আসামিদের সঙ্গে আত্মীয়স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু স্বজনদের মন মানানো বেশ কঠিনই। ফলে ঝুঁকি নিয়ে বেশ কায়দাকানুন করে বেআইনিভাবে কারাবন্দিদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন অনেকে। বিষয়টা একদিকে যেমন মানবিক, উল্টোপিঠে আবার আইন ও নিয়ম ভাঙার প্রশ্নও আসে।

এমনই এক সাক্ষাতের ছবি চট্টগ্রাম প্রতিদিনের হাতে এসেছে যেখানে কারাগারের পেছনের অংশে কাভার্ড ভ্যান দাঁড় করিয়ে তার ওপর দাঁড়িয়ে কারাবন্দির সঙ্গে কথা বলছেন স্বজনরা। এছাড়াও নিয়মিতভাবে কারাগারের পেছনের অংশের সড়ক থেকে কারাবন্দী আপনজনদের সঙ্গে একটু কথা বলার জন্যও নানা কায়দাকানুন করতে দেখা যায় অনেককে।

এমনই এক ভিন্ন কায়দায় বন্দির সঙ্গে আলাপরত এক যুবকের সাথে কথা বলতে গেলে নিজের পরিচয় না দিয়ে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার ভাই কারাগারে বন্দি। আগে মাঝে মাঝে কারাগারে দেখা করতাম। অনেকদিন সেই সুযোগ নাই। কিন্তু আমাদের মন তো মানে না। আমরা এই বিষয়ে দ্রুত একটা সমাধান চাই। কার দৃ‌ষ্টি আকর্ষণ কর‌লে সমাধান হ‌বে?’

তবে খুব শীঘ্রই কারাগারে সাক্ষাৎ চালু হওয়ার সম্ভাবনা নেই জানিয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ থেকে বন্দিদের নিরাপদ রাখতে সারাদেশেই কারাগারে সাক্ষাতের সুযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। মাঝে এটা চালু করার ব্যাপারে কথাবার্তা হচ্ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি আসলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়াকে ফেভার করছে না। আর এটা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত। আমরা বিষয়টা নিয়ে কথা বলছি। কিন্তু মনে হয় না সহসা এটা চালু করা যাবে।’

করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই নানান উদ্যোগ গ্রহণ করে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ। করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য নেওয়া উদ্যোগগুলোর মধ্যে রয়েছে আরপি গেইট এবং প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশের আগে কারারক্ষী ও বন্দিদের তাপমাত্রা নিশ্চিত হয়ে এবং জীবাণুমুক্ত করে প্রবেশের অনুমতি, নতুন আসা বন্দিদের ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক ভাবে কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা, একই সাথে রিমান্ড ও চিকিৎসাফেরত বন্দিদেরও বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখা।

এছাড়া ছুটি থেকে যোগদানের পর কারাগারের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বাধ্যতামূলকভবে কোয়ারেন্টাইনে রাখা, কর্মকর্তা কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনের সময় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা, ভাইরাস জিরো দিয়ে প্রতিদিন দুই বেলা কারাগারে স্প্রে করা, কারাগারের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বন্দিদের বাধ্যকতামূলকভাবে মাস্ক পরা, কারাগারের ভেতরে দায়িত্বপালনকারীদের বাইরে ঘোরাফেরা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে রাখাসহ আরও নানা উদ্যোগ রয়েছে।

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!