স্থানীয় দিন মজুর কৃষকরা পড়েছে বিপাকে

স্থানীয় দিন মজুর কৃষকরা পড়েছে বিপাকে 1গিয়াস উদ্দিন ভুলু,টেকনাফ : মিয়ানমার থেকে আগত হাজার হাজার রোহিঙ্গাদের আগ্রাসনের শিকার হয়ে ধ্বংস হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও ফসলী জমিগুলো। এতে দিনের পর দিন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে স্থানীয় কৃষকরা। তার পাশাপাশি বড় বড় পাহাড়ী এলাকার বন্যপ্রানীদের বসতি করা স্পট ও চলাচলের স্থানগুলো বর্তমানে রোহিঙ্গাদের দখলে। এদিকে বন্যহাতীরা এখন পাহাড়ে জায়গা না পেয়ে পেটের জ্বালা মিঠাতে লোকালয়ে প্রবেশ করে স্থানীয় হতদরিদ্র কৃষকদের ফসলী জমিগুলো ধ্বংস করছে। গত কয়েকদিনের ব্যবধানে স্থানীয় কৃষকদের ফসলী জমিতে বন্যহাতীর দল হানা দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার ধান ও বিভিন্ন প্রকার ফসল বিনষ্ট করে দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে দিন মজুর গরীব দুঃখী অসহায় কৃষকরা।। সেই সুত্র ধরে গতকাল ১৮ নভেম্বর শনিবার সকাল ১১ টায় টেকনাফ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত২০১৭-২০১৮ অর্খবছরের বাজেটের নিয়ম অনুযায়ী কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্টিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উখিয়া-টেকনাফের সাংসদ আলহাজ্ব আবদুর রহমান বদি। স্থানীয় এমপিকে কাছে পেয়ে কৃষকরা উপরোক্ত অভিযোগগুলো তুলে ধরেন।।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন ছিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ও কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আহমদ।
উক্ত অনুষ্টানে হ্নীলা ইউনিয়নের পানখালী গ্রামের কৃষক ফরিদুল আলম অভিযোগ করেন, কৃষি কাজ হচ্ছে তার পেশা। সম্প্রতি একদল বন্য হাতির দল তার ধান ও শষ্য ক্ষেতে ফলন পাওয়ার প্রাক্কালে হানা দিয়ে তিন লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি করেছে। এখন সে নিংস্ব হয়ে পরিবার নিয়ে খুব সমস্যাই রয়েছে। তিনি তার উপযুক্ত ক্ষতিপূরন দাবী করেন।
একই অভিযোগ করেন হোয়াইক্যংয়ের হরিখোলার কৃষাণী লাবং সিং চাকমা। সে জানায়, ঋণ নিয়ে অনেক কষ্টে জমিতে ধান চাষ করেছেন। ফলন পাওয়ার সময় বন্য হাতিরা হানা দিয়ে খেয়ে পেলেছে এবং নষ্ট করেছে। এখন ঋণ শোধ করার মতো টাকা নেই। তিনিও ক্ষতিপুরনের দাবী জানান। এসময় বন্যপশু কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্থ আরো একাধিক কৃষক কৃষাণী এমপি আবদুর রহমান বদির কাছে সাহায্য চেয়ে অভিযোগ করলে তিনি তাদের উপযুক্ত ক্ষতি পুরণের আশ্বাস প্রদান করেন এবং উপজেলা চেয়ারম্যান ও কৃষি কর্মকর্তাকে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার আহবান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুর রহমান বদি আরো বলেন, বর্তমান সরকার কৃষি বান্ধব সরকার, কৃষিই সমৃদ্ধি বয়ে আনে। রোহিঙ্গাদের কারণে উখিয়া-টেকনাফের মানুষ যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তেমনি ভাবে বণ্যপ্রাণীরাও। পাহাড়ের গাছপালা কেটে চারণ ভূমি সাবাড় করার কারণে পশুদের খাদ্য নেই, বন্যপশুরা এখন হাহাকার। ফলে গ্রামাঞ্চলে হানা দেওয়া স্বাভাবিক। কৃষকরা ক্ষতি হলে তার ভূক্তভোগী আমাদের হতে হবে। তাই কৃষকদের উপযুক্ত ক্ষতিপুরনের জন্য তিনি সংসদে বিষয়টি উত্থাপন করবেন বলেও জানান। এছাড়া তিনি কৃষকদের জন্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কর্মকান্ডের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। পরে প্রধান অতিথি, ভূট্টা, বিটি বেগুন, পেলন বীজ, সারসহ বিভিন্ন সামগ্রী ১১০ জন কৃষকের হাতে তুলে দেন।
সভায় স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর আবু হারেছ, সহকারি কৃষি কর্মকর্তা শফিউল আলম, মোঃ আনোয়ার, উপকারভোগী কৃষক, সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!