স্কুলছাত্রের আত্মহনন, এসআই হেলালের বিরুদ্ধে অভিযোগ ডিবিকে তদন্তের নির্দেশ আদালতের

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) বরখাস্ত হওয়া উপ-পরিদর্শক (এসআই) হেলাল খানের বিরুদ্ধে দাখিল হওয়া অভিযোগ আমলে নিয়ে নগর গোয়েন্দা পুলিশকে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৭ জুলাই) তৃতীয় মহানগর হাকিম শফি উদ্দিনের আদালত এই আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. কামরুজ্জামান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘১৬ জুলাই ডবলমুরিং থানা এলাকার বড় মসজিদ গলিতে আত্মহননকারী সাদমান ইসলাম মারুফের মা রুবিনা আক্তার এসআই হেলাল খান ও তিন সোর্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। আজ শুনানি শেষে মহানগর হাকিম শফি উদ্দিন মহোদয়ের আদালত তিন সোর্সকে বাদ দিয়ে হেলাল খানের বিরুদ্ধে তদন্তের আদেশ দেন।’

প্রসঙ্গত, মারুফের আত্মহননের ঘটনায় তার মা আদালতে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩ এর ২ এর (৬), ১৩ এর উপধারা ১ এবং ১৫ (২) ধারায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে এসআই হেলাল উদ্দিনকে এক নম্বর আসামি করার পাশাপাশি পুলিশের কথিত সোর্স চান্দু, হেলাল এবং রুবেলকেও অভিযুক্ত করা হয়। শুনানি শেষে আদালত এসআই হেলালকে রেখে বাকিদের বাদ দিয়ে নগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে গত ১৬ জুলাই রাতে নগরীর ডবলমুরিং থানা এলাকার বড় মসজিদ গলিতে সোর্স নিয়ে সাদা পোশাকে অভিযানে যান ডবলমুরিং থানা পুলিশের এসআই হেলাল। এ সময় সালমান ইসলাম মারুফকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলে পরিবারের সদস্যরা বাধা দেন। সবার সামনে পুলিশের মারধরে মারুফের বোন আহত হলে তার মাকেসহ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর কিছুক্ষণ পর বাসা থেকে মারুফের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

মারুফ স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। স্থানীয় একটি মার্কেটের এক দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করে তিনি নিজের পড়া লেখার খরচ চালাতেন।

এই ঘটনায় সিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) মনজুর মোরশেদকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গত ২০ জুলাই সিএমপি কমিশনার মো. মাহবুবর রহমানের কাছে ১৮ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি।

তদন্ত প্রতিবেদনে এসআই হেলাল উদ্দিন থানার কর্মকর্তাদের অগোচরে সাদা পোশাকে আগ্রাবাদের বড় মসজিদ গলিতে গিয়ে কিশোর সালমান ইসলাম মারুফের পরিবারের সদস্যদের মারধর এবং তাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়। ওই তদন্ত প্রতিবেদনে এসআই হেলালকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ডবলমুরিং থানার ওসি সদীপ কুমার দাশের তদারকির ‘ঘাটতি ছিল’ বলে উল্লেখ করে তাকে কারণ দর্শাতে বলা হয়।

এফএম/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!