ভিডিও/ সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ হয়ে গেল দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৪২ গ্রামে

চট্টগ্রামের ৪২টি গ্রামের মানুষ আজ মঙ্গলবার (৪ জুন) পবিত্র ঈদ উল ফিতর উদযাপন করেছেন।

সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফের মুরিদরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে অন্যান্য বছরের মতো এবারও একদিন আগে ঈদ উদযাপন করেছেন। সেই সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেছেন সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ও বাড়বকুণ্ড এলাকার চারিয়াকান্দি গ্রামের মানুষ।

দরবার শরীফের এসব মুরিদ সৌদি আরবের সাথে সঙ্গতি রেখে একদিন আগে থেকে রোজা পালনও শুরু করেছিলেন।

চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা মির্জাখীল দরবার শরীফের অনেক মুরিদ ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য আজ সোমবার দরবার শরীফে চলে এসেছেন।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় মির্জাখীল দরবার শরীফের মাঠে পবিত্র ঈদ উল ফিতরের নামাজ আদায় করেন তারা। তবে সকালবেলা বৃষ্টি থাকলেও খানেকায় ঈদের নামাজ আদায় করেছেন তারা। দরবার শরীফের পীর মাওলানা মোহাম্মদ আরেফুল হাইয়ের বড় ছেলে ড. মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ মকছুদুর রহমান ঈদের নামাজে ইমামতি করেন।

সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফের মুরিদরা এবারও একদিন আগে ঈদ উদযাপন করেছেন।
সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফের মুরিদরা এবারও একদিন আগে ঈদ উদযাপন করেছেন।

মির্জাখীল দরবার শরীফ সূত্র মতে, সাতকানিয়ার মির্জাখীল, গাটিয়াডেঙ্গা, মাদার্শা, পুরানগড়, মৈশামুড়া, চরতি, চন্দনাইশের কাঞ্চননগর, হারালা, বাইনজুরি, কানাই মাদারি, সাতবাড়িয়া, বরকল, দোহাজারী, জামিজুরি, বাঁশখালীর কালিপুর, চাম্বল, শেখেরখীল, ডোংরা, ছনুয়া, আনোয়ারার বরুমছড়া, তৈলারদ্বীপ, লোহাগাড়ার পুটিবিলা, কলাউজান, বড়হাতিয়া এবং পটিয়া, বোয়ালখালী, হাটহাজারী, সন্দ্বীপ, রাউজান ও ফটিকছড়ির কয়েকটি গ্রামসহ চট্টগ্রামের মোট ৪০টি গ্রামের মানুষ আজ মঙ্গলবার পবিত্র ঈদ উল ফিতর উদযাপন করেছেন।

সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফের মুরিদরা এবারও একদিন আগে ঈদ উদযাপন করেছেন।
সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফের মুরিদরা এবারও একদিন আগে ঈদ উদযাপন করেছেন।

এছাড়া পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, কক্সবাজারের চকরিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার বেশ কিছু গ্রামের কিছুসংখ্যক লোক একই দিনে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।

সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফের মুরিদরা এবারও একদিন আগে ঈদ উদযাপন করেছেন।
সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফের মুরিদরা এবারও একদিন আগে ঈদ উদযাপন করেছেন।
দরবার শরীফের ভক্তরা কোনো কোনো এলাকায় পৃথকভাবে ঈদের নামাজের আয়োজন করেছেন। দরবার শরীফ এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, চট্টগ্রাম ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কিছু মুরিদ ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য সাতকানিয়ার মির্জাখীল গিয়ে দরবার শরীফে ছুটে এসেছেন। তারা ঈদের নামাজ শেষ করে আবার বাড়ি চলে যাচ্ছেন।

কয়েকজন মুরিদ চট্রগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, তারা প্রতিবছর দরবার শরীফে এসে ঈদের নামাজ আদায় করেন। এবছরও চলে এসেছেন। ঈদের নামাজ শেষে তারা বাড়ি চলে যাচ্ছেন।

মির্জাখীল দরবার শরীফের মুরিদ ও মির্জাখীল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক বজলুল করিম চৌধুরী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, মির্জাখীল গ্রামের অনেক মানুষ আজ ঈদ পালন করেছেন। প্রায় দুই শতাধিক বছরের অধিক সময় ধরে মির্জাখীল দরবার শরীফের মুরিদরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে রোজা পালন ও ঈদ উদযাপন করেন। চট্টগ্রামের প্রায় ৪০টি গ্রামে থাকা দরবার শরীফের মুরিদরা আজ ঈদ করেছেন।

তিনি আরও জানান, যেসব এলাকায় দরবার শরীফের মুরিদ বেশি রয়েছে তারা নিজ নিজ এলাকায় ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। আর যেখানে দরবার শরীফের ভক্ত কম তারা সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফে এসে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।

এদিকে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে অন্যান্য বছরের মতো এবারও একদিন আগে ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছেন সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ও বাড়বকুণ্ড এলাকার চারিয়াকান্দি গ্রামের মানুষ। নির্দিষ্ট মতবাদের অনুসারী এসব গ্রামের বাসিন্দারা সকালে নিজ নিজ মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।

প্রচলিত নিয়মের আগে ঈদ উদযাপনকারীদের অধিকাংশই দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ও পটিয়া এবং চন্দনাইশ উপজেলার হলেও তাদের সঙ্গে মিলে সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ও বাড়বকুণ্ডে একটি গ্রামের মানুষ একদিন আগে ঈদুল ফিতর উদযাপন করে থাকেন।

প্রায় ২০০ বছর আগে তৎকালীন পীর মাওলানা মুখলেছুর রহমান একদিন আগে অর্থাৎ পৃথিবীর অন্য যেকোনো দেশে চাঁদ দেখা গেলেই রোজা, ঈদ এবং কোরবানি পালনের নিয়ম প্রবর্তন করেন। এরপর থেকে সারা দেশে মির্জাখীল দরবারের অনুসারীরা এ নিয়ম পালন করে আসছেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!