সোনা চুরির বরিশালচক্রে চট্টগ্রামের দুই স্বর্ণব্যবসায়ী, পরিকল্পনাও নগরেই

৭ মিনিটে চুরি হয়েছিল ১২৬ ভরি স্বর্ণালংকার

বরিশালের স্বর্ণের দোকানে চুরির পরিকল্পনা হয়েছিল চট্টগ্রামে। আট মাস আগে বরিশালের এক সোনার দোকানে চুরি হওয়া স্বর্ণ কিনে নিয়েছিলেনও চট্টগ্রামের দুই স্বর্ণ ব্যবসায়ী। তবে এটি বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়, বরং সোনা চুরির বড় একটি নেটওয়ার্ক চট্টগ্রাম ছাড়া বিস্তৃত ঢাকা, কুমিল্লা ও বরিশাল পর্যন্ত। এমন এক ঘটনায় চোরাই সোনা কেনার অপরাধে বরিশালের পুলিশ এসে ধরে নিয়ে গেল চট্টগ্রামের দুই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে।

এরা হলেন— চট্টগ্রামের বউ বাজার এলাকার স্বর্ণা জুয়েলার্সের পবন রায় এবং শিফা জুয়েলার্সের মালিক আলম হোসেন। এদের মধ্যে একজন চট্টগ্রাম জুয়েলার্স সমিতির নেতাও। তাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া ১১টি আংটি এবং একটি নেকলেস উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে ধরা পড়েছে লিটন (২৮) নামের আরেকজন। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানায় চারটি মামলা রয়েছে। বরিশাল, ঢাকা ও কুমিল্লা থেকে একই চোরচক্রের আরও সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন সুমন, অলি, জামাল, আলাউদ্দিন, হাসান, নয়ন ও জসিম ওরফে জনি।

বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. রাসেল জানান, গত ২০ মার্চ দুপুর আড়াইটার দিকে বরিশাল নগরীর ব্যস্ততম কাটপট্টি এলাকায় আশরাফ অ্যান্ড সন্স জুয়েলারি বন্ধ করে দুপুরের খাবার খেতে বাসায় যান মালিক বাচ্চু মিয়া। তাকে অনুসরণ করে সংঘবদ্ধ চক্র ব্যস্ততম রাস্তার পাশে লুঙ্গি এবং বিছানার চাদর মেলে শাটার ও কলাপসিবল গেটের তালা কেটে ভেতরে ঢুকে মাত্র ৭ মিনিটের মধ্যে ১২৬ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।

ওই দিনই জুয়েলারি দোকানের মালিক অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে ওই জুয়েলারির সামনে এবং ভেতরে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অপরাধীদের চিহ্নিত করে। তবে এদের মধ্যে একজন ছাড়া অন্যরা বরিশালের বাইরের বাসিন্দা হওয়ায় তাদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে তেমন অগ্রগতি হচ্ছিল না।

এ অবস্থায় বরিশালের সুমন হাওলাদার নামে এক সন্দেহভাজন যুবককে আটক করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে পুরো ঘটনা বের হয়ে আসে। বরিশাল নগরীর কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশের কয়েকটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, চুরির ঘটনার মূল পরিকল্পনায় ছিলেন রাজার চরের সুমন হাওলাদার। তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়ি চট্টগ্রামে। সেখানে বসেই সংঘবদ্ধ হয় চক্রটি। পরে বরিশালে চুরি করে তারা আত্মগোপনে চলে যায়। গ্রেফতারের পরে তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে চুরির ঘটনা এবং রহস্য বেরিয়ে আসে।

সুমন হাওলাদারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ঢাকা, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম এলাকায় টানা ৯ দিন অভিযান চালিয়ে চক্রের আরও সাত সদস্য এবং চোরাই মাল কেনার অপরাধে চট্টগ্রামের দুই জুয়েলারি দোকানের মালিককে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া ১১টি আংটি এবং একটি নেকলেস উদ্ধার করে পুলিশ।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!